মানজুম উমায়ের
ফার্সি প্রবাদ, বেয়াদব মাহরুম গাশ্ত আজ ফজলে রব। বেয়াদব আল্লাহর দয়া-মায়া-অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত। সমাজে যেমন সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে বেড়েছে বেয়াদব তেমনি মাদরাসাগুলোতেও বাড়ছে বেয়াদবের সংখ্যা। মাদরাসা পরিচালকদের সতর্কতাহীন অবস্থানও এর জন্য অনেক দায়ী। মাদরাসাগুলো একসময় ছিলো মুআদ্দাব শিক্ষার্থীদের মেলা ছিলো। এখন নিজের উস্তাদগণই ভরসা পান্না ছাত্রদের কাছে। তারা যে গলা ধাক্কা দেবেন না এমন ভরসা রাখতে পারেন না কিছুতেই। তাহলে কি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ভয়াবহ চিত্র মাদরাসায়ও ফিরছে? কোথাও কোথাও এমন অবক্ষয়ের সংবাদ আমরা পাই। এতে আমরা আহত হই।
প্রিয় মুহতামিম, ফার্সিতে কাতরা কাতরা সাইলে গারদাত। আবার বাংলা ভাবসম্প্রসারণে আমরা পাই, ছোট ছোট বালুকণা, বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তোলে মহাদেশ, সাগর অতল। ছিদ্র রেখে দিলে সেটা সাগরে পরিণত হবে। তখন আর বালু কেন শক্ত মাটির বাঁধেও ঠেকানো যাবে না।
মাদরাসার আইন সু্প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এতে করে নিজের চাকুরি গেলেও। শিক্ষার্থীদের চাপে কখনোই নতি স্বীকার করা যাবে না। অন্যায় নতি স্বীকার নমুনা খুবই ভয়াবহ! একসময় আহলে ইলম খোঁজে পাওয়া যাবে না। আহলে দরদি মানুষেরও হবে অনেক অভাব।
যে ছাত্র কোনো বয়স্ক ও বুজুর্গ আলেমের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়, বিয়াদবী করে, এরপর জনসমক্ষে তার কোনো বিচার হয় না, তখন যেনো বিয়াদবীকেই সামাজিকভাবেই প্রতিষ্ঠিত করা হয়। বুজুর্গ আলেম কখনোই বদদুআ করেন না। রংপুরে, নোয়াখালীতে, সিলেটে শাইখুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানী রহ.-এর সঙ্গে কেউ কেউ চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণ দেখিয়েছেন। তিনি বদদুআ দেননি। বদদুআ করলে আমার বিশ্বাস সিলেট তামা হয়ে যেত।
বাংলাদেশের মাদরাসাগুলো এক চরম অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যেনো মাদরাসাগুলোর কোনো মাতা-পিতা নেই। দয়া করে আপনারা আল্লাহকে সামনে রেখে এবং নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শকে পুঁজি করে মাদরাসা চালান। তাহলেই আমাদের চেষ্টা সার্থক হবে। আমরা সত্যিকারের দারুল উলূম দেওবন্দের আওলাদ ও ফরজন্দ তৈরি করতে পারবো। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দিন।
লেখক : আলেম সাংবাদিক