ঢাকা, ১৯ অক্টোবর ২০২৫:
বাংলাদেশের অন্যতম কওমি শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া বলেছেন,
> “কওমি সনদের যথাযথ মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন সময়ের অপরিহার্য দাবি। এই সনদের শিক্ষার্থীরাই দেশের আদর্শ নাগরিক এবং সুশিক্ষিত প্রজন্ম গঠনের অন্যতম বাহক।”
তিনি বলেন, কওমি মাদরাসা দীর্ঘদিন ধরে দেশের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। এখানে শুধু ধর্মীয় শিক্ষা নয়, বরং আদর্শ, শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও দেশপ্রেমের পাঠ দেওয়া হয়। তাই কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স সমমান) সনদধারী শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুযোগ ও নিয়োগে প্রাধান্য দেওয়া ন্যায়সংগত ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ হবে।
মাওলানা যাকারিয়া বলেন—
> “দাওরায়ে হাদিস উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ইসলামিক স্টাডিজ, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে এমফিল ও পিএইচডি করার সুযোগ থাকা তাদের অধিকার। তাছাড়া অন্যান্য বিষয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রামেও তাদের ভর্তির সুযোগ উন্মুক্ত করা উচিত।”
তিনি আরও বলেন,
> “দেশের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষক পদে, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও বিভিন্ন ইসলামি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মসজিদে ইমাম-খতিব পদে, এমনকি সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীতে ধর্মীয় শিক্ষক পদে কওমি সনদধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া সময়ের দাবি।”
মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া উল্লেখ করেন,
> “২০১৭ সালে কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ সনদ ‘দাওরায়ে হাদিস’কে মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমানের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং ২০১৮ সালে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে তা সরকারি স্বীকৃতি পায়। তবে দুঃখজনকভাবে এখনো সেই স্বীকৃতির পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি।”
তিনি বলেন, কওমি সনদ আইনি স্বীকৃতি পেলেও, এর বাস্তব প্রয়োগে প্রশাসনিক ও নীতিগত উদ্যোগ প্রয়োজন।
> “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কওমি শিক্ষার প্রতি আন্তরিক ভূমিকা রাখবে—এই প্রত্যাশা করছি। পূর্ববর্তী সরকারের সময় যেসব ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো যেন আরও বেগবান হয়।”
মাওলানা যাকারিয়া জানান,
> “গত ৫ মে আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমরা ধর্ম উপদেষ্টা আ.ফ.ম. খালিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। সেখানে কওমি সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নের প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়, যা তিনি আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন।”
তিনি বলেন, দেশের চলমান শিক্ষা সংস্কারের ধারায় কওমি শিক্ষার অন্তর্ভুক্তি ও সনদের কার্যকর মূল্যায়ন শুধু ন্যায্যই নয়, বরং জাতীয় উন্নয়নের জন্যও অপরিহার্য।
> “কওমি শিক্ষা ব্যবস্থার ছাত্ররা দ্বীনি চেতনায় উদ্বুদ্ধ, শৃঙ্খলাপরায়ণ ও দায়িত্বশীল নাগরিক। তাদের মূলধারার সুযোগ দিলে রাষ্ট্র উপকৃত হবে, সমাজ উপকৃত হবে,” — বলেন মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া।
—
📍 লেখক: মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া
সহসভাপতি, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ
