Close Menu

    ইসলামি ঐক্য ভৌগোলিক সীমায় বাঁধা নয়”—মাওলানা ফজলুর রহমানের ভাষণ ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে

    নভেম্বর ১৩, ২০২৫

    মাওলানা ফজলুর রহমানের সফর: দুই দেশের ধর্মীয় সম্পর্ক জোরদারে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা

    নভেম্বর ১০, ২০২৫

    ধর্মবিরোধী গান? মাওলানা মাহমুদ মাদানীর সতর্কবার্তা

    নভেম্বর ৯, ২০২৫
    Facebook X (Twitter) Instagram
    ইজহারে হক: হকের কথা বলে
    • হোম
    • প্রবন্ধ
      1. প্রকৃত আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’ত পরিচিতি
      2. মওদুদী মতবাদ
      3. মওদুদী ফিতনা জানতে
      4. কুরআন ও হাদীসের আলোকে মওদূদী মতবাদ
      5. শরীয়তের কাঠগড়ায় মওদুদী জামাতের মতাদর্শ
      6. মওদূদী মতবাদ- এক আয়নায় তিন চেহারা
      7. ইসলাম ও মওদুদীবাদের সংঘাত
      8. ইসলাম ও রাজনীতি
      9. শিয়া মতাদর্শ
      10. কাদিয়ানী মতবাদ
      11. ফিতনায়ে ইনকারে হাদীস
      12. বাতিল যুগে যুগে
      13. View All

      আহলে সুন্নতের ফিক্বাহ শাস্ত্রের ইমাম: ইসলামী আমলের ক্ষেত্রে বিদয়াতীদের চক্রান্ত

      মে ২৯, ২০২৪

      আহলে সুন্নতের আক্বীদামতে মহানবীর মর্যাদা: অতি ভক্তি কিসের লক্ষণ

      মে ২৮, ২০২৪

      রেজভীদের চক্রান্ত হুবহু ইবনে সাবার চক্রান্তের মত: রাসূলকে আলিমুল গাইব বলা সাবায়ী চক্রান্ত:

      মে ২৮, ২০২৪

      আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’ত সুবিন্যস্ত হওয়ার ইতিহাস

      মে ২৮, ২০২৪

      জামায়াত কোনো ইসলামী দল নয়, বাতেল মতবাদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়: পীর সাহেব মধুপুর

      নভেম্বর ৯, ২০২৫

      সাহাবী-বিদ্বেষী জামায়াত: তাদের ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ: হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

      নভেম্বর ৭, ২০২৫

      আল্লাহর অঙ্গীকার অটুট, কুরআনের রূহ অম্লান — মওদুদী মতবাদের বিভ্রান্তি বিশ্লেষণ

      নভেম্বর ৩, ২০২৫

      মওদুদীর ভ্রান্ত আকীদাসমূহ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দৃষ্টিকোণ

      নভেম্বর ২, ২০২৫

      জামায়াত কোনো ইসলামী দল নয়, বাতেল মতবাদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়: পীর সাহেব মধুপুর

      নভেম্বর ৯, ২০২৫

      সাহাবী-বিদ্বেষী জামায়াত: তাদের ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ: হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

      নভেম্বর ৭, ২০২৫

      আল্লাহর অঙ্গীকার অটুট, কুরআনের রূহ অম্লান — মওদুদী মতবাদের বিভ্রান্তি বিশ্লেষণ

      নভেম্বর ৩, ২০২৫

      মওদুদীর ভ্রান্ত আকীদাসমূহ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দৃষ্টিকোণ

      নভেম্বর ২, ২০২৫

      মওদূদী সাহেব যেমন সাহাবায়ে কিরামকে সত্যের মাপকাঠি মানতে নারাজ তেমনি আম্বিয়ায়ে কিরাম, সম্পূর্ণ নিষ্পাপ বলতেও নারাজ

      সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩

      দ্বীন সম্পর্কে মওদূদী সাহেবের কয়েকটি বক্তব্য

      সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩

      মওদূদী সাহেবের ব্যাপারে কতিপয় প্রশ্নের সমাধান

      সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩

      উসূলে হাদীস সম্পর্কে মওদূদীর বক্তব্য: “আদি যুগের আবোল-তাবোল প্রলাপ কে শুনে ?”

      সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩

      সুন্নাত সম্পর্কে মওদূদীর বক্তব্য: “সুন্নাতের অনুসরণ করা বিদয়াত ও কুসংস্কার”

      সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩

      আম্বিয়ায়ে কিরাম সম্পর্কে মওদূদীর বক্তব্য: “নবীগণ নিষ্পাপ নন বরং খবীছ নফ্স দ্বারা আক্রান্ত”

      সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩

      শরীয়তের কাঠগড়ায় মওদূদী জামায়াতের মতাদর্শ

      সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩

      মওদূদীবাদের আয়নায় কাদিয়ানী চেহারা

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      মওদূদীবাদের আয়নায় মু’তাজিলী হওয়ার চেহারা

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      কুরআন-হাদীসের বিশ্বস্ত মাধ্যম সাহাবায়ে কিরামের উপর থেকে ভক্তি নির্ভরতা বিলুপ্তির ভয়ানক ষড়যন্ত্র।

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      মওদূদীবাদের দর্পণে শী’আ মতবাদের ছবি: মওদূদীবাদের আয়নায় শীআদের প্রতিচ্ছবি।

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      নবুওয়াত ও রিসালত: মওদুদীবাদ

      মে ২৫, ২০২৪

      ইবাদত: মওদুদীবাদ

      মে ২৫, ২০২৪

      কুরআন মাজীদ ও দ্বীনের সংরক্ষণ: কুরআন সংরক্ষণের অর্থ: কুরআন সংরক্ষণে খোদায়ী ব্যবস্থাপনা: মওদুদীবাদ

      মে ২৪, ২০২৪

      দ্বীন কী? দ্বীনে নূহ: দ্বীনে ইব্রাহীম: দ্বীনে ইসমাঈল: দ্বীনে ইউসুফ: দ্বীনে মূসা: দ্বীনে ঈসা: মওদূদীবাদ

      মে ২৩, ২০২৪

      জমিয়তের সমাবেশের দিন উত্তরায় সম্মেলন ডাকলো জামায়াত

      জুলাই ১০, ২০২৫

      ইসলাম ও রাজনীতি: রাজনীতির সংজ্ঞা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বিষয়বস্তু

      অক্টোবর ৮, ২০২৩

      শিয়া মতাদর্শ

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      কাদিয়ানী মতবাদ

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      পারভেযী মতবাদ বা ফিতনায়ে ইন্‌কারে হাদীস

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      মওদুদী ফিতনা

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      পারভেযী মতবাদ বা ফিতনায়ে ইন্‌কারে হাদীস

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      কাদিয়ানী মতবাদ

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      শিয়া মতাদর্শ

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      মওদুদীর ভ্রান্ত আকীদাসমূহ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দৃষ্টিকোণ

      নভেম্বর ২, ২০২৫

      জামায়াতে ইসলামী, মওদূদীবাদ ও আকীদাগত স্বচ্ছতার অপরিহার্যতা

      অক্টোবর ৮, ২০২৫

      📚 শিক্ষার সঙ্গে বাণিজ্য-এক আকর্ষণীয় কিন্তু বিভ্রান্তিকর স্লোগান আলেমদের দায়িত্ব ও বাস্তবতা

      অক্টোবর ৬, ২০২৫

      “পূজায় শুভেচ্ছা: ইসলামের দৃষ্টিতে সীমারেখা ও সদাচরণ”

      সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫
    • জাতীয়
    • মুসলিম বিশ্ব
    • সারাদেশ
    • রাজনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • মতামত
    • ইসলাম
    • প্রতিবেদন
      • দাওয়াহ
      • প্রবাস
      • কল্যাণ ট্রাস্ট
      • বয়ান
    ইজহারে হক: হকের কথা বলে
    ইসলাম ও মওদুদীবাদের সংঘাত

    নবুওয়াত ও রিসালত: মওদুদীবাদ

    ইজহারে হকBy ইজহারে হকমে ২৫, ২০২৪
    Share Facebook Twitter Pinterest Copy Link LinkedIn Tumblr Email VKontakte Telegram
    Share
    Facebook Twitter Pinterest Email Copy Link

    নবুওয়াত ও রিসালত



    যেহেতু মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করা; কিন্তু মহান আল্লাহ তাআ’লার কোন আকার নেই, তাঁকে দেখতে পাওয়া যায় না, তাঁর সাথে কথা বলা এবং তাঁর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা মানুষের জন্যে অসাধ্য বিধায় আল্লাহ্ ও বান্দাদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনকারী রূপে সৃষ্টি করা হয়েছে আম্বিয়ায়ে কেরামকে। নবী-রাসূলগণ দৈহিকভাবে মানুষ হলেও অত্মার দিক দিয়ে তাঁরা ফিরিস্তা থেকেও উঁচু মর্যাদার অধিকারী। তাঁদের জীবনে কোন গুনাহ্ নেই। তাঁরা নিষ্পাপ সত্ত্বা।
    আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন:
    وَلِتَصْنَعُ عَلَى عَيْنِي
    আর যেন তুমি আমার তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত হও। এবং
    وَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِاعْيُنِنَا
    আর আপনি আপনার রবের এই ব্যবস্থার উপর ধৈর্য ধরিয়া থাকুন, কেননা আপনি আমার হেফাজতে আছেন। এবং
    فَإِنَّهُ يَسْلُكُ مِنْ بَيْنِ أَيْدِيهِمْ وَمِنْ خَلْفِهِمْ رَصَدًا
    তখন তিনি ঐ রাসূলের সম্মুখে পশ্চাত দিকে নেগাহ্হ্বান ফেরেশতাদেরকে পাঠান।
    মুদ্দাকথা, আল্লাহ তা’আলা নাক্স ও শয়তানের আক্রমণ থেকে আম্বিয়া (আঃ)-কে সংরক্ষণ করে মা’সূম ও নিষ্পাপ সৃষ্টি করেছেন।
    আল্লাহ তাআ’লা মানুষের হেদায়তের জন্যে তাঁদেরকে বাছাই করেছেন। তাঁরা আল্লাহ তাআ’লার কাছে অত্যন্ত বিশ্বস্ত। তাঁদের মাধ্যমে আমরা আসমানী কিতাব পেয়েছি। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির আচার-আচরণ জানতে পেরেছি। হালাল-হারাম, জায়েয-নাজায়েযের শিক্ষা লাভ করেছি।
    আমাদের নামায, রোযা, হজ্জ যাকাত, বিবাহ-শাদী, ব্যবসা-বাণিজ্য সবই নবী রাসূল থেকে শিখেছি। নবীকে নিষ্পাপ ও নির্ভরযোগ্য মেনে না নিলে হক্কের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা সম্ভব নয়। নবীর অনুসরণ ছাড়া দ্বীনের কোন বাস্তবতা নেই।
    তাই আহলুছছন্নাত ওয়াল জামাআ’তের সর্বসম্মত মৌলিক আক্বিদা হলো এই যে, নবী-রাসূলগণ নিষ্পাপ, তাঁরা নবুওয়াত ও রিসালাতের দায়িত্ব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সম্পাদন করেছেন, তার মধ্যে কোন ভুল-ত্রুটি বা অসম্পূর্ণতা নেই।

    মওদুদীবাদ



    মওদুদী সাহেব বলেন:
    নিষ্পাপ হওয়াটা আসলে নবীদের জন্মগত অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য নয়, বরং আল্লাহ্ তাদেরকে নবুয়াত নামক সু-মহান পদটির দায়িত্ব ও কর্তব্য সুষ্ঠুভাবে পালন করার সুযোগ দানের জন্য একটা হিতকর ব্যবস্থা হিসেবে ভুল ভ্রান্তি থেকে রক্ষা করেছেন। নচেৎ আল্লাহর এই হিফাযতমূলক ব্যবস্থাটা যদি ক্ষণিকের জন্যেও তাদের ব্যক্তি সত্তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষের যেমন ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকে তেমন নবীদেরও হতে পারে। এটা একটা বড়ই মজার কথা যে, আল্লাহ্ ইচ্ছাকৃতভাবে প্রত্যেক নবী থেকেই কোন না কোন সময় নিজের সংরক্ষণ ব্যবস্থা তুলে নিয়ে দুটো একটা ভুল-ভ্রান্তি ঘটে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। যাতে মানুষ নবীদেরকে খোদা মনে করে না বসে এবং তারা যে মানুষ, খোদা নন, সেটা বুঝতে পারে। (নির্বাচিত রচনাবলী, ২য় খন্ড-পৃঃ৭৪)
    সার সংক্ষেপ
    ১. নিষ্পাপ হওয়াটা আসলে নবীদের জন্মগত অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য নয়।
    ২. কোন নবীই নিষ্পাপ ছিলেন না। সব নবী থেকেই কিছু না কিছু পাপ সংগঠিত হয়েছে।
    ৩. আল্লাহ তা’আলা সব নবী থেকেই ভুল-ভ্রান্তি ঘটে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন, যাতে করে মানুষ নবীদেরকে খোদা মনে না করে।

    পর্যালোচনা



    ১. মওদুদী সাহেবের এই মন্তব্য যে, “আল্লাহ্ তা’আলা সব নবী থেকেই পাপের কাজ করিয়েছেন।” কোন আয়াত বা হাদীছ থেকে তিনি এ বিষয় জানতে পারলেন? যদি কোন আয়াত বা হাদীছে একথা উল্লেখ না থাকে তাহলে কিসের ভিত্তিতে তিনি একথা বললেন। আমরা মওদুদী আদর্শে বিশ্বাসী জনের কাছে তার কারণ জানতে চাই।
    ২. মওদুদী সাহেবের লিখনিতে হযরত আদম (আঃ), হযরত ইব্রাহীম (আঃ), হযরত মুছা (আঃ), হযরত দাউদ (আঃ), হযরত ইউনুস (আঃ) ও হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) থেকে পাপ কাজ সংঘটিত হওয়ার উল্লেখ রয়েছে। তার কথা মতে যদি এই ছয় নবী পাপী হয়ে থাকেন তবে প্রশ্ন হলো এই যে, শুধু এই ছয় নবীর উপর ভিত্তি করে তিনি লক্ষাধিক নবী সম্পর্কে কি করে এই ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দিলেন, যে সব নবীরাই জীবনে কিছু না কিছু পাপ করেছেন। কেমন করে এতবড় দুঃসাহস করলেন মওদুদী সাহেব?
    ৩. যখন মওদুদী সাহেব থেকে তার কোন প্রমাণ জানা যায়নি। তখন উম্মতের গবেষকগণ তার কারণ খুজে বের করেন এই যে, ‘যেহেতু মওদুদী সাহেব এক মতবাদের প্রবর্তক আবার তিনি নিজে পাপের সাগরে নিমজ্জিত, তাই নবীগণের নিষ্পাপ হওয়ার কথা শুনলেই তার গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়। সেজন্য তিনি মুসলমানদেরকে এ কথা বুঝানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালান যে, সব নবীই পাপী ছিলেন, মানুষ মাত্রই পাপী হয় তাই আমার পাপ দেখে বিরক্তির কোন কারণ নেই।
    ৪. আল্লাহ্ তা’আলা কুরআন মজীদে ইরশাদ করেনঃ
    أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ
    আর স্বানন্দে আল্লাহর ও রাসূলের আদেশ পালন কর।
    وَمَنْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ
    যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করে সে আল্লাহরই আনুগত্য করে।
    مَا أَتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا
    আর রাসূল (সাঃ) তোমাদেরকে যা দান করেন তা গ্রহণ কর। আর যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করেন তা হতে বিরত থাক।
    এধরনের অনেক আয়াতে নবীদের এতাআ’ত ও অনুসরণের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এসব আয়াতের আলোকে স্পষ্টভাবে বুঝা যায়, নবীদের জীবনে কোন গুনাহ নেই। তাঁরা জীবনের সর্বাবস্থায় মা’সূম বা নিষ্পাপ, রাগ ক্রোধের অবস্থায় থাকেন বা সন্তুষ্টির অবস্থায় সব সময়ই তাঁরা নিষ্পাপ। তাঁদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের সর্ব ক্ষেত্রেই তাঁরা অনুসরণযোগ্য। নবীদের হাসি-খুশি, ঘুম-নিদ্রা, পেশাব-পায়খানা এবং তাঁদের জীবনের সব মুহূর্ত নূর আর নূর, হেদায়েত আর হেদায়েত, তাইতো সর্বস্তরে তাঁদের অনুসরণের আদেশ দেওয়া হয়েছে। যদি তাঁদের জীবনে কোন পাপ থাকত তবে কখনও আল্লাহ্ তা’আলা তাঁদের পুরো জীবনের অনুসরণের আদেশ দিতেন না। বরং গুনাহর কাজের অনুসরণ না করার কথা উল্লেখ করতেন।
    ৫. মওদুদী সাহেব মোহাম্মদ (সাঃ) সহ লক্ষাধিক নবী-রাসূল থেকে পাপ কর্ম সংঘটিত হওয়ার দাবী করেছেন। কিন্তু কোন নবীর পাপের কোন লিস্ট তিনি পেশ করেননি। তাই মওদুদী আদর্শে বিশ্বাসীদের কাছে আম্বিয়ায়ে কেরামের জীবনের সব কাজই পাপ না পুণ্য তা সন্দেহযুক্ত।
    ৬. মওদুদী সাহেব নবী-রাসূল থেকে পাপ কাজ সংঘটিত হওয়ার কারণ বর্ণনা করেছেন “মানুষ যেন আম্বিয়াদেরকে মানুষ মনে করে আল্লাহ্ মনে না করে” এখন প্রশ্ন হলো- আল্লাহ্ হওয়া না হওয়া কি গুনাহ্ করা না করার উপর নির্ভরশীল?
    ৭. যে মানুষ মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নিয়ে জীবনের লক্ষাধিক পরিবর্তনের পরে মারা যায়, পানাহার, ঘুম-নিদ্রা, পেশাব-পায়খানা করা, স্ব-শরীরে থাকা ইত্যাদি যার বৈশিষ্ট্য তার পরেও শুধু গুনাহ্ না করলে সে আল্লাহ্ হয়ে যায়। এমন আজগুবী কথা কখনও আমরা শুনিনি।
    ৮. যদি নিষ্পাপ হলেই মানুষ আল্লাহ্ হয়ে যায়। তবে পৃথিবীর কোটি কোটি নাবালক ছেলে মেয়ে, শিশু-কিশোর যারা নিষ্পাপ তারা সবাই কি মওদুদীবাদিদের আল্লাহ?
    ৯. আচ্ছা শুধু গুনাহ না করলেই যদি আল্লাহ বলা বৈধ হয়ে যায়, তাহলে সব চেয়ে বেশী প্রয়োজন ছিল হযরত উযায়র (আঃ) ও হযরত ঈসা (আঃ) দ্বয়ের পাপের পরিষ্কার আলোচনা করা। কারণ ইহুদীরা হযরত উযায়রকে এবং খৃষ্টানরা হযরত ঈসাকে আল্লাহর ছেলে বলে। কিন্তু চমৎকার ব্যাপার হলো মওদুদী সাহেব হযরত আদম, নূহ, ইব্রাহীম, দাউদ, ইউনুস ও রাসূল (সাঃ) এর পাপের আলোচনা করলেন পরিষ্কারভাবে। কিন্তু ইহুদী ও খৃষ্টানরা যে নবীকে আল্লাহ বলে তাঁদের পাপের কোন আলোচনা করেননি।
    ১০. আল্লাহ হওয়া না হওয়ার এই মূলনীতি আবিষ্কার করে ইহুদী, নাছারারা যাকে আল্লাহর ছেলে বলে সেসব নবীদের পাপ সম্পর্কে কিছু না বলে ঐ সব নবীদেরকে পাপী বলা যাদেরকে আজ পর্যন্ত কেউ আল্লাহ্ বলেনি। কি স্বার্থে এবং কি কারণে মওদুদী সাহেবের এই নাটকীয় আলোচনা?
    ১১. হযরত ঈসা (আঃ) কে খৃষ্টানদের আল্লাহ্ বলার বৈধতার এ মূলনীতি আবিস্কারের বিনিময়ে কি মওদুদী সাহেব ১৯৭০ সনে ঐ ২০ কোটি টাকার হাদিয়া পেয়েছিলেন। যা তিনি ঐ সময়কার পাকিস্তানে নিযুক্ত আমেরিকার হাইকমিশনার জওযফফার্লেন্ড থেকে গ্রহণ করেছিলেন?
    ১২. মওদুদী সাহেবই উম্মতের প্রথম ব্যক্তি যিনি নবুওয়াত ও রিসালতের অট্রালিকাকে মাটিতে মিশিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছেন খারিজী, শিয়া, কাদিয়ানী ও মুতাযিলাসহ অনেক বাতিল ফিরকা রয়েছে। কিন্তু আম্বিয়ায়ে কেরামকে গুনাহগার বলে নবুওয়াতও রিসালাতের সুমহান পুতঃপবিত্র অট্রালিকাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করার দুঃসাহস কেউ দেখায়নি।
    ১৩. এ কোন্ ধরনের ইসলামী আন্দোলন যে, নবী-রাসূলকে পাপী ও গুনাহগার না বললে আন্দোলন অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
    ১৪. মওদুদী সাহেবের বই-পুস্তক পড়ে এমন কিছু কার্টুন ঈমানদার সৃষ্টি হয়েছে, যাদের কাছে আম্বিয়ায়ে কিরামকে পাপী বললে তারা আনন্দবোধ করে। আর মওদুদী সাহেবকে পাপী বললে তারা ঐ লোকের রগ কেটে জান্নাতে পাঠানোর চেষ্টা করে।
    ১৫. আজকের এই ফেৎনার যুগে যখন সব তাগুতী শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে আদাজল খেয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে লেগেছে, এ অবস্থায় মওদুদী সাহেবের
    তাগুতী মন্তব্য সম্বলিত উর্দু বইগুলো বাংলায় অনুবাদ করে জামাত শিবিরের সিলেবাসভুক্ত করার মাধ্যমে ইসলামের খেদমত হচ্ছে, না তাগুতের সদস্য বাড়ছে?
    ১৬. কাফেররা হাজার হাজার বছর আম্বিয়ায়ে কিরামের বিরুদ্ধাচরণ করে আসছে কিন্তু কখনও কোন কালের কাফেররা নবীদের কোন গুনাহ্ বা পাপকে উল্লেখ করে কোন তিরস্কার করতে পারে নি, বরং নবীদের জীবনে কোন ক্ষুৎ না পেয়ে পাগল ও যাদুকর বলত। বিভিন্ন যুগে কাফেররা নবীদের মানুষ হওয়াকে দোষ ও ত্রুটি হিসেবে উল্লেখ করত।
    ক্বাওমে নূহ সম্পর্কে কুরআন মাজীদে ইরশাদ হচ্ছে-
    فَقَالَ الْمَلَأُ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ قَوْمِهِ مَا هَذَا إِلَّا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ يُرِيدُ أَنْ يَتَفَضَّلَ عَلَيْكُمْ وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَانْزَلَ مَلَائِكَةٌ مَّا سَمِعْنَا بِهَذَا فِي أَبَائِنَا الْأَوَّلِينَ إِنْ هُوَ إِلَّا رَجُلٌ بِهِ جِنَّةً فَتَرَبَّصُوا بِهِ حَتَّى حِينٍ – (سورة المؤمنون (٢٤-٢٥
    যদি নূহ (আঃ)-এর জীবনে কোন পাপ থাকত, তবে তাঁর ক্বাওম ঐ পাপ দ্বারা তাঁকে তিরস্কার করত। কিন্তু তা না করে তারা তাঁকে মানুষ ও পাগল হওয়ার কথা বলত।
    কাওমে আ’দ ও ছামুদ তাদের নবী হুদ ও সালেহ সম্পর্কে মন্তব্য করে বলত-
    وَقَالَ الْمَلَأُ مِنْ قَوْمِهِ الَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِلِقَاءِ الْآخِرَةِ وَاتْرَفْنَاهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا مَا هَذَا إِلَّا بَشَرَ مِثْلُكُمْ يَأْكُلُ مِمَّا تَأْكُلُونَ مِنْهُ وَيَشْرَبُ مِمَّا تَشْرَبُونَ. وَلَئِنْ أَطَعْتُمُ بَشَرًا مِّثْلَكُمْ إِنَّكُمْ إِذًا لَّخَاسِرُونَ (سورة المؤمنون (٣٣-٣٤)
    ফেরআউন ও তার সাথীরা হযরত মুছা ও হারুন সম্পর্কে বলল-
    أَنُؤْمِنُ لِبَشَرَيْنِ مِثْلِنَا وَقَوْمُهُمَا لَنَا عَابِدُونَ (سورة المؤمنون (٤٧)
    মক্কার কাফেররা রাসূল (সাঃ) সম্পর্কে বলত-
    مَا لِهَذَا الرَّسُولِ يَأْكُلُ الطَّعَامَ وَيَمْشِي فِي الْأَسْوَاقِ لَوْلَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مَلَكٌ فَيَكُونَ مَعَهُ نَذِيرًا – (سورة الفرقان (۷)
    এভাবে সব সময় নবীদেরকে মানুষই বলা হত। হযরত উযায়র ও ঈসা (আঃ) ছাড়া কোন নবীকে কেউ রব বলেনি এবং আম্বিয়াদের জীবনে কোন পাপ না পেতে পারায় মানুষ ও যাদুকর বলে তাঁদেরকে তিরস্কার করা হতো। তারপরও মওদুদী সাহেব এত অস্থির হয়ে পড়লেন কেন যে, নবীগণকে গোনাহগার না বলে তারা আল্লাহ হয়ে যাবেন। তাই বাধ্য হয়ে সকল নবী রাসূলকে পাপী ও গুনাহগার বলতে হচ্ছে তার।
    ১৭. পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রনায়ক রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের জন্য সুদক্ষ: পরীক্ষিত ও নির্ভাযোগ্য লোক বাচাই করতে পারলে মহা প্রজ্ঞাবান আল্লাহ্ তাআ’লা কি পৃথিবীতে তাঁর দ্বীনের দাওয়াত ও খিলাফতের মহান দায়িত্ব পালনের জন্য দক্ষ, যোগ্য ও বিশ্বস্ত প্রতিনিধি মনোনীত করতে ব্যর্থ হলেন?
    মওদুদী সাহেরব কথায় তো সে কথাই প্রমাণিত হয়।
    ১৮। প্রদর্শনির জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন নামকরা কোম্পানী, বিভিন্ন নিখুত যন্ত্রপাতি ও ব্যবহারের সামগ্রী বানাতে পারে। যেমন- টয়োটা, মাদা, ডাট্‌ট্সন ইত্যাদি কম্পানী নিখুঁত গাড়ী তৈরী করতে পারে। সোনী, সানিও, ন্যাশনাল ইত্যাদি কোম্পানী নিখুঁত ফ্রীজ, ওয়াশিং মেশিন, টিভি, রেডিও বানাতে পারে। রোলেক্স, রাডো, ওমেগা ইত্যাদি কোম্পানী নিখুঁত ঘড়ী তৈরী করতে পারে। কিন্তু মওদুদী সাহেবের মতে আল্লাহ তাআ’লা নবুওয়াত ও রিসালাতের জন্যে নিখুঁত লোক সৃষ্টি করতে পারেননি।
    ১৯. মানুষ ওয়াটার গ্রুপ কোট, ঘড়ী, বুলেট গ্রুপ গাড়ী ইত্যাদি তৈরী করতে পারে। কিন্তু মওদুদী সাহেবের মতে আল্লাহ তাআ’লা গুনাহ্ গ্রুপ নবী-রাসূল সৃষ্টি করতে পারেন নি।
    ২০. আল্লামা ইবনে তাইমিয়া সহ উম্মতের সকল ফুক্বাহা ও ইমামগণ এ ব্যাপারে একমত যে, নবীদেরকে যে গালিগালাজ করবে, তার এ পৃথিবীতে বেচে থাকার অধিকার নেই। বিধায় তাকে কতল করে দিতে হবে। তাই যদি এখন ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠিত থাকত তাহলে সন্ত্রাস দমনের পূর্বে নবী-রাসূলের শত্রু দমনের বিষয়টি অগ্রাধিকার পেত, এবং কাযীর পক্ষ থেকে এদের সকলের কতলের হুকুম জারি হত।
    মওদুদী সাহেব রাসূল (সাঃ) সম্পর্কে বলেন:
    অর্থাৎ আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। তাহার নিকট কাতর কণ্ঠে এই দোয়া কর যে, তোমাকে যে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হইয়াছিল তাহা সম্পন্ন করার ব্যাপারে তোমার দ্বারা যে ভুল-ত্রুটি হইয়াছে, কিংবা তাহাতে যে অসম্পূর্ণতা ও দূর্বলতা রহিয়া গিয়াছে তাহা যেন তিনি ক্ষমা করিয়া দেন। সেই দিকে যেন তিনি ভ্রুক্ষেপ না করেন। তাহা যেন তিনি ধরিয়া না বসেন ও সেইজন্য আমাকে জবাবদিহি করিতে বাধ্য না করেন।
    তাফহীমুল কুরআন (সূরা নছর) খাইরুল প্রকাশনী

    সার সংক্ষেপ
    ১. মুহাম্মদ (সা:) সম্পূর্ণ দ্বীন উম্মতের কাছে পৌঁছাননি।
    ২. রাসূল (সা:) যতটুকু দ্বীন উম্মতের কাছে পৌঁছিয়েছেন তাও ত্রুটি মুক্ত নয় বরং ভুল-ত্রুটি মিশ্রিত।
    ৩. এই সব অপরাধের জন্য আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ দিয়েছেন।

    পর্যালোচনা



    ১. আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেন:
    الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا.
    আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মকে পূর্ণ করে দিলাম এবং আমি তোমাদের প্রতি স্বীয় নিয়ামত পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের ধর্মরূপে পছন্দ করলাম।
    কিন্তু মওদুদী সাহেব উল্লেখিত আয়াতকে অস্বীকার করে বলেন দ্বীন অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে।
    ২. আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেন:
    يَأَيُّهَا الرَّسُولُ بَلَغَ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ فَإِنْ لَّمْ تَفْعَلُ فَمَا بَلَغْتَ رِسَالَتَكَ .
    হে রাসূল যা কিছু আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি নাযিল করা হয়েছে, আপনি (মানুষকে) তার সবকিছু পৌঁছে দিন, আর যদি এরূপ না করেন। তবে যেন আপনি আল্লাহর একটি পয়গামও পৌঁছাননি।
    কিন্তু মওদুদী সাহেব বলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসূল (সাঃ)-এর উপর যা নাযিল হয়েছিল তা তিনি যথাযথভাবে সমগ্র উম্মতের কাছে পৌঁছাননি। অনেক আহ্কাম অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। তাই তার জন্যে তাঁকে মাফ চাইতে হবে।
    ৩। আল্লাহ্ তাআ’লার ওহীসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খ, মানুষের কাছে পৌছিয়ে দিয়ে নবুওয়াত ও রিসালাতের গুরু দায়িত্ব যথাযথ পালনের জন্যে আল্লাহ্ তাআ’লা সব নবীদের সাথে ফিরিস্তাদের এক নিরাপত্তা টিম নিযুক্ত করেন।
    ইরশাদ হচ্ছে-
    فَإِنَّهُ يَسْلُكُ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ رَصَدًا
    لِيَعْلَمَ أَنْ قَدْ أَبْلَغُوا رِسَالَاتِ رَبِّهِمْ
    তিনি তার অগ্রে ও পশ্চাতে প্রহরী নিযুক্ত করেন, যাতে আল্লাহ্ তাআ’লা জেনে নেন যে, রাসূলগণ তাঁদের পালন কর্তার পয়গাম পৌছিয়েছেন কি না।
    যাহ্হাক থেকে বর্ণিত,
    مَا بُعِثَ نَبِيُّ الأ ومعه ملائكة يحرسونه من الشياطين (الذين) يتشبهون بصورة الملك (تفسير كبير ج ١٠ ص ٦٧٩)
    কোন নবী প্রেরিত হননি। কিন্তু আল্লাহ্ তাআ’লা তাঁর হেফাযতের জন্য ফিরিস্তা নিযুক্ত করেছেন। যাঁরা তাঁকে ঐ সব শয়তান থেকে হেফাযত করে থাকেন। যাঁরা ফিরিস্তাদের আকৃতি ধারণ করে তাদের ক্ষতি সাধন করতে চায়।
    আল্লাহর পক্ষ থেকে এত কড়া প্রহরা ব্যবস্থাকে অস্বীকার করে মাওদুদী সাহেব বললেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ্ দেয়া দ্বীনকে পরিপূর্ণ পৌছাননি এবং যা পৌছিয়েছেন তাও বিশুদ্ধ নয় বরং ভুল-ত্রুটি মিশ্রিত, তাই মওদুদী সাহেবের মতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঐ ভুল-ত্রুটি ও অসম্পূর্ণতার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইতে হবে।
    ৪. মুসায়লামা কায্যাব, আসওয়াদ আ’নাছী কাদিয়ানী ও মওদুদী সহ অনেকে নবুওয়াতের অসম্পূর্ণতার দাবী করবে বিধায় রাসূল (সাঃ) বিদায় হজ্জে লক্ষাধিক সাহাবায়ে কেরামকে সম্বোধন করে জিজ্ঞেস করেন
    الَا هَلْ بَلَّغْتُ أَلَا هَلْ بَلَغَتُ إِلَّا هَلْ بَلَّغْتُ
    কি আমি সম্পূর্ণ দ্বীন তোমাদের কাছে পৌঁছিয়েছি?
    তখন লক্ষাধিক সাহাবায়ে কেরাম উত্তর দেন قَدْ اَدَّيْتَ الْأَمَانَةَ وَنَصَحْتَ الْأُمَّةَ وَبَلَّغْتَ الرِّسَالَةَ  আপনি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত আমানত আদায় করেছেন, আর রিসালতের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং উম্মতকে নসীহত করেছেন।
    এ উত্তর শুনে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আকাশের দিকে অঙ্গুলী উঠিয়ে বলেন
    হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থাক, হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থাক, হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থাক, اللَّهُمَّ اشْهَدُ اللَّهُمَّ اشْهَدُ اللَّهُمَّ اشْهَدُ রিসালতের দায়িত্ব যথাযথ পালন ও পরিপূর্ণ দ্বীন উম্মতের কাছে পৌছানোর উপর আল্লাহকে সাক্ষী রেখেও গোলাম আহমদ কাদিয়ানী ও মওদুদীর শত্রুতা থেকে হুজুর (সাঃ) পরিত্রাণ পেলেন না।
    ৫. এমন কতটা আয়াত বা আহকাম আছে যা রাসূল (সাঃ) সম্পূর্ণ করে জাননি এবং তা কি কি?
    ৬. আচ্ছা যদি মেনে নেয়া যায় যে, রাসূল (সাঃ) রিসালাতের দায়িত্ব আদায় করতে ত্রুটি-বিচ্ছুতি করেছিলেন এবং দ্বীন অসম্পূর্ণ থেকে গেছে, তাই তাঁর আল্লাহর কাছে ঐ সব গুনাহের জন্যে ইস্তিগফার করার হুকুম সুরায়ে নছরে নাযিল হয়েছিল এবং আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর নবীকে ইস্তিগফারের কারণে মাফ করে দিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই যে আমাদের কাছে দ্বীন যে অসম্পূর্ণ থেকে গেল তা সম্পূর্ণ হওয়ার ব্যবস্থা কি?
    ৭. বিদায় হজ্জে এই অসম্পূর্ণ দ্বীনকে আল্লাহ্ তা’আলা সম্পূর্ণ বলে কি করে ঘোষণা করলেন?
    ৮. শিয়া ফিরকার আক্বীদা বর্তমান কুরআন পরিপূর্ণ কুরআন নয়। আসল পরিপূর্ণ কুরআন চল্লিশ পারা যা, তাদের ১২ নং ইমাম নিয়ে আসবেন। মওদুদী সাহেব শিয়াদের ক্ষেত্র তৈরির জন্যে বললেন যে, নবুওয়াত ও রিসালত অসম্পূর্ণ।
    ৯. মওদুদী সাহেব দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন এটা কি রাসূল (সাঃ)-এর ঐ অসম্পূর্ণ দ্বীন না সম্পূর্ণ ও পরিপূর্ণ দ্বীন, যদি পরিপূর্ণ দ্বীন হয় তাহলে মওদুদী সাহেব ঐ দ্বীনটি পেলেন কোথায় আমরা কি তা জানতে পারি? ঐ দ্বীনটি কি এমেরিকান মেইড না বৃটেন মেইড?
    ১০. যদি কোন রাষ্ট্রনায়ক দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি করে তাহলে রাষ্ট্রের প্রত্যেক বিভাগে অসুবিধার সৃষ্টি হয়, কোন স্কুল-কলেজের দায়িত্বশীল ব্যক্তি দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি করলে সে প্রতিষ্ঠানের পড়ালেখা খতম হয়ে যায়, তাহলে চিন্তা করুন আল্লাহর দেওয়া দায়িত্ব আদায়ে কোন নবী ত্রুটি করলে কত বড় অপরাধ হবে।
    ১১. একজন মেম্বার দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি করলে ইউনিটের বা ওয়ার্ডের ক্ষতি হয়, একজন চেয়ারম্যান দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি করলে ইউনিয়নের ক্ষতি হয়, একজন ইউ এন ও দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি করলে উপজেলার ক্ষতি হয়, একজন ডি সির ত্রুটিতে জেলার ক্ষতি হয়, একজন রাষ্ট্রনায়কের ত্রুটিতে দেশের ক্ষতি হয়, জাতিসংঘের দায়িত্বশীলদের ত্রুটিতে বিশ্বের ক্ষতি হয়, আর একজন রাসূলের দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি হলে হাজার হাজার কোটি মানুষের ইহ-পরকালিন জীবন ধংস হয়ে যাবে। মওদুদী সাহেব কী করে রাসূল এর উপর এত বড় ঝুকিপূর্ণ অপবাদ আরোপ করলেন।
    ১২. রিক্সা চালকের ত্রুটিতে দুই আরোহীসহ রিক্সা এক্সিডেন্ট হয়, বাসের ড্রাইভারের ত্রুটিতে ৪০-৫০ জন আরোহী সহ বাস এক্সিডেন্ট হয়, ট্রেনের চালকের ত্রুটিতে ছয় সাত শত আরোহী সহ ট্রেন এক্সিডেন্ট হয়, বিমানের পাইলটের ত্রুটিতে আরোহী সহ বিমান চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়, একটি লাশও খুজে পাওয়া যায় না। আর বিশ্ব মানবের পরিচালক একজন রাসূলের দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি হলে বিশ্ব মানবতা লণ্ড-ভণ্ড হয়ে অগ্নিকুন্ডে পরিণত হবে। মওদুদী সাহেব রাসূল (সাঃ)-কে এতবড় অপরাধির কাঠ গড়ায় হাজির করলেন?
    ১৩. রাসূল (সাঃ)-এর আনন্দ আবেগের কার্য কলাপ যেভাবে দ্বীনের অংশ বিশেষ, তাঁর রাগান্বিত ও অবস্থার আচার-আচরণ ও শরীয়তের অংশে পরিগণিত বরং তাঁর স্বপ্ন ও শরীয়ত হিসেবে বিবেচিত, তিনি আবার কি করে দায়িত্ব আদায়ে ত্রুটি বিচ্ছুতি করতে পারেন?
    ১৪. রাসূল (সাঃ)-এর জীবনে কোন কাজ নেই। কাজ শুধু তাঁর একটাই তাহলো মানুষের হেদায়েতের মেহনত অর্থাৎ দাওয়াত, তা’লীম ও তাযকিয়া। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মানুষের ময়দানে মেহনত করাই তাঁর কাজ। মানুষ যদি দাওয়াত কবুল না করত তখন রাসূল (সাঃ) এত চিন্তিত অস্থির ও পেরেশান হয়ে পড়তেন যে তাঁকে শান্ত্বনা দেয়ার জন্যে কুরআন শরীফের আয়াত নাযিল হত যেমন –
    لَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَفْسَكَ أَنْ لَّا يَكُونُوا مُؤْمِنِينَ
    মনে হয় আপনি ইহাদের ঈমান না আনার কারণে (দুঃখে) আত্মবিনাশী হয়ে পড়বেন।
    لَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَفْسَكَ عَلَى أَثَارِهِمْ إِنْ لَّمْ يُؤْمِنُوا بِهَذَا الْحَدِيثِ أَسَفًا
    অতঃপর হয়তো আপনি ইহাদের পিছনে আপনার জীবন বিসর্জন করে দিবেন। যদি তারা এই বিষয়গুলোর প্রতি ঈমান না আনে আক্ষেপ করতে করতে।
    لَسْتَ عَلَيْهِمْ بِمُصَيْطِرٍ
    আপনি তাদের উপর দায়গ্রস্ত অধিকারী (নিযুক্ত) নহেন।
    يَشَاءُ أَنَّكَ لَا تَهْدِي مَنْ أَحْبَبْتَ وَلَكِنَّ اللَّهَ يَهْدِي مَنْ
    আপনি যাকে চান হেদায়েত করতে পারবেন না, বরং আল্লাহ যাকে চান তাকে হেদায়েত করেন।
    নবুওয়াতের পরিপূর্ণ দায়িত্ব আদায় করে মানুষের হেদায়েতের জন্যে অতিরিক্ত চিন্তা, ব্যথা ও অস্থিরতা থাকা সত্বেও রাসূল (সাঃ) কে নবুওয়াতের দায়িত্ব আদায় না করার অপবাদ দেয়া কত বড় কুফুরী ও তাগুতী মানসিকতার কাজ।
    لَعْنَةُ اللَّهُ عَلَى شَرِهِمُ

    ইসলামের উপর মওদুদীবাদের বিষাক্ত ছোবল



    ১. তাফহীমুল কুরআনে মওদুদী সাহেব কুরআন শরীফের বিশুদ্ধ কোন তাফসীর করেননি। বরং তাঁর ভ্রান্ত উপলব্ধি দ্বারা কুরআন শরীফের ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেনঃ “আমি কুরআন শরীফের শব্দগুলোকে উর্দু ভাষায় অনুবাদের স্থলে এ চেষ্টা করেছি যে, কুরআনের একটি আয়াত তেলাওয়াত করে যে অর্থ আমার বুঝে এসেছে এবং যে প্রভাব আমার অন্তরে পড়েছে যথাসম্ভব বিশুদ্ধতার সাথে তা আমি আমার নিজের ভাষায় প্রকাশ করব।” (তাফহীমুল কুরআন- উর্দু দীবাছা, পৃঃ ১০)
    ২. হযরত দাউদ (আঃ) এর সম্পর্কে তাফহীমাতে বাইবেলের উদ্ধৃতি দিয়ে মওদুদী সাহেব লিখেছেনঃ “একদিন অপরাহ্নে দাউদ নিজ প্রাসাদের ছাদে পায়চারী করছিলেন। এই সময় স্নানরত এক পরমা সুন্দরী রমনীর ওপর তার দৃষ্টি পড়লো। দাউদ খোঁজ নিলেন মহিলাটি কে? জানা গেল, সে এলিয়ামের কন্যা ও উরিয়াহিত্তার স্ত্রী বাতসাবা। দাউদ বাতসাবাকে ডেকে
    পাঠালেন এবং রাতে নিজের কাছে রাখলেন। সেই রাতেই সে গর্ভবতী হয়ে গেল। পরে সে দাউদকে নিজের গর্ভবতী হওয়ার কথা জানিয়ে দিল।”
    এরপর দাউদ উরিয়াকে উয়াবের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। উয়াব তখন বনী আমুনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল এবং রাব্বা নগরীকে অবরোধ করে সেখানে অবস্থান করছিল। দাউদ উয়াবকে লিখলেন যে, রণাঙ্গনের সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ স্পেনে চলছে, সেখানে তাকে নিয়োগ কর এবং তারপর তাকে একাকী রেখে সরে যাও, যাতে সে নিহত হয়। উয়াব নির্দেশ মোতাবেক কাজ করলো এবং উরিয়া নিহত হলো।”
    এভাবে উরিয়াকে খতম করার পর দাউদ ঐ মহিলাকে বিয়ে করলেন এবং তার পেট থেকেই হযরত সোলায়মান জন্ম গ্রহণ করেন। (নির্বাচিত রচনাবলী ২য় খণ্ড, পৃঃ ৬০)
    মওদুদী সাহেবের মতে হযরত দাউদ (আঃ) এর উপর এই অপবাদকে নিশ্চিতভাবে অস্বীকার করা যায় না। তিনি বলেনঃ “এ ধরনের ঘটনায় সব সময় দু’টো সম্ভাবনা থাকে এবং দু’টোই সমান শক্তিশালী। এমনও হতে পারে যে, একজন মানুষ তার ভালোলাগা মহিলাকে পাওয়ার কোনো চেষ্টাই করেনি। কিন্তু সে বিধবা হওয়ার পর কোনো নৈতিক ও আইনগত বাধা না থাকায় তাকে বিয়ে করেছে। আবার এমনও হতে পারে যে, সে তাকে পাওয়ার জন্য অন্যায় চেষ্টা-তদবিরে লিপ্ত ছিল। এই দুটো সম্ভাবনার একটিকে অপরটির ওপর নিশ্চিতভাবে অগ্রগন্য মনে করা সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়া সম্ভব বা সমীচীন নয়। (নির্বাচিত রচনাবলী, ২য় খণ্ড, পৃঃ ৬৪-৬৫)
    ৩. মওদুদী সাহেব বুখারী, মুসলিম শরীফসহ হাদীস গ্রন্থের নির্ভরযোগ্য
    হাদীসকে হাদীস বলে স্বীকার করেন না। তিনি বলেনঃ “আপনাদের মতে
    সনদের দিক দিয়ে মুহাদ্দিসরা নির্ভুল আখ্যা দিয়েছেন-এমন প্রতিটি
    রেওয়াতকে হাদীসে রাসূল বলে বিশ্বাস করা আবশ্যক। কিন্তু আমরা
    সনদের যথার্থকে হাদীসের যথার্থতার জন্যে অপরিহার্য প্রমাণ মনে করি
    না।” (নির্বাচিত রচনাবলী, ১ম খণ্ড ২য় ভাগ পৃঃ ২০০) ইত্যাদি


    শেষ কথা



    অনেক সময় একটি মিথ্যা কথা বার বার বলার দ্বারা শ্রোতার কাছে তা সত্যবলে মনে হয়। এর উদাহরণ জামায়াত শিবির। তাঁরা পত্র পত্রিকা, বই-পুস্তক, পোষ্টার, লিফ্লেট ও মিটিং মিছিলের মাধ্যমে এত প্রচুর পরিমাণে তাগুতের বিরুদ্ধে ও ইসলামের পক্ষে কথা বলেছেন যে ইসলামী শিক্ষায় অনভিজ্ঞ ব্যক্তি অনেকে মনে করে বসেছেন যে জামায়াত শিবির আসলে ইসলামী দল। কিন্তু তাঁরা জানেন না যে জামায়াত শিবিরের ছহীহ দ্বীনের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। কেননা যে আন্দোলনের ভিত্তি ও মূল স্ট্রীট হলো এই যে,
    (১) নবী রাসূলগণ পাপী ছিলেন (নাউযুবিল্লাহ)।
    (২) অনেক নবী রাসূল তাঁদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হননি।
    (৩) সাইয়িদুল মুরসালীন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা. ও তাঁর নবুওয়াতী দায়িত্ব পালনে ভুল-ত্রুটি করেছেন।
    (৪) প্রথম শতাব্দীর পরে কুরআন মাজীদের অর্থ বিকৃত হয়ে গেছে।
    (৫) গত ১৩ শত বছরের কেউ কুরআন ও দ্বীনে ইসলামের হাকীকত বোঝেননি।
    (৬) ‘কুরআনী শিক্ষা’ হাদীছ, তাফছীর ও ফিক্কার কিতাবাদীতে পাওয়া যায় না।
    (৭) গত ১৩ শত বৎসরের রচিত কিতাবাদীর আলোকে জীবন যাপন করে যারা মারা গেছে তাদের নাজাতের সম্ভাবনা নেই।
    (৮) নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত মূল ইবাদত নয়, এগুলো হলো রাষ্ট্র গঠনের জন্যে ট্রেনিং কোর্স।
    (৯) ইসলামী হুকুমত বিদ্যমান না থাকা অবস্থায় পৃথিবীর মুসলমানদের যত নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত, ইত্যাদি ইবাদত পালিত হয়েছে, তা সম্পূর্ণ নিরর্থক।
    (১০) ইসলামী রাষ্ট্র ব্যতিত ঈমানও নিস্ফল ইত্যাদি ইত্যাদি।
    জামায়াত শিবিরের এসব মূল দর্শন যা তাদের সিলেবাস ভূক্ত বইতে বিদ্যমান আছে (এই বই এর শেষের পৃষ্ঠায় ঐ সব বইয়ের তালিকা রয়েছে)।
    সম্মানিত পাঠক! ইসলামী আন্দোলনের জন্যে উল্লেখিত ইসলাম বিরোধী নীতি নির্ধারণের কি প্রয়োজন ছিল? কুরআন শরীফ কে বিকৃত ঘোষণা দিয়ে এবং ইসলামী জ্ঞান ভান্ডারকে অস্বীকার করে এবং মুহাদ্দিসীন, মুফাসসিরীন, ফুকাহা ও আওলিয়ায়ে কেরামকে ভ্রান্ত ও উন্মাদ ফতোয়া দিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র গঠনে জামায়াত শিবিরভিত্তিক যে আন্দোলন চলছে আসলে তা কিসের আন্দোলন? প্রত্যেক সচেতন মুসলমানের এ ব্যাপারে শান্ত মনে চিন্তা করা দরকার।
    বিশুদ্ধ ইসলাম হলো- যা ১৪শত বৎসর ধরে নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিরবচ্ছিন্ন ধারায় আমাদের কাছে পৌঁছেছে এবং যা হাদীস, ছহীহ্ তাফসীর ও ফিক্কার কিতাবাদীতে সংরক্ষিত রয়েছে। তাই মওদুদী দর্শনের উপর পরিচালিত জামায়াত শিবিরের ধর্মীয় মূলনীতি হাদীস, তাফসীর ও ফিক্বার কিতাবাদীর সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ায় তাঁদের মতবাদ ও আন্দোলনকে হকু বলে স্বীকৃতি দেয়া যায় না। একজন আল্লাহ ও রাসূল প্রেমিকের জন্যে এটা কি করে সম্ভব হতে পারে যে, সে কুরআন, হাদীস বিরোধী আন্দোলনের সাথে জড়িত থাকবে। আমাদের সত্য বক্তব্যে জামায়াত শিবিরের ভাইদের মনে কষ্ট লাগতে পারে। কিন্তু আমরা কি করে আমাদের আল্লাহর কালাম ও আমাদের রাসূলের হাদীসকে প্রত্যাখ্যান করে তাঁদের সাথে জড়িত হতে পারি? যদিও মনে চায় যে দেশে একটা ইসলামী বিপ্লব সংঘটিত হোক, কিন্তু এই আবেগ থাকা স্বত্বেও তাঁদের সাথে যোগ দিতে পারছিনা, কেননা ইসলামী আন্দোলনের উদ্দেশ্য হলো সর্ব প্রথম মুসলমানদের অন্তরে বিশুদ্ধ ঈমান জাগ্রত করা এবং দেশের মুসলমানের আমল ও চরিত্র ছাহাবায়ে কেরামের মডেলে গড়ে তোলা। যাতে মানুষের মনে আল্লাহর ভয় ও প্রেম ভালবাসা জন্মে এবং রাসূল সা. এর সুন্নাতের অনুসরণের পরিবেশ গড়ে উঠে।
    কিন্তু বর্তমান জামায়াত শিবিরের সব চাইতে বড় বরং আসল বিপদ এই যে তাদের মধ্যে দ্বীন সম্পর্কে ব্যুৎপত্তি ও কুরআন হাদীস সম্পর্কে কোন
    অনুধ্যান এবং সুন্নাতে রাসূল ও ইবাদতের প্রতি কোন আগ্রহ নেই। যা তাদের লেখনীর দ্বারা প্রকাশিত। এই অভাব ও শূন্যতাই তাঁদের ঈমান বিশ্বাসকে অন্তঃসারশূন্য ও তাঁদের আন্দোলনকে প্রাণহীন করে দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ইসলামের ভক্ত ও ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের আন্দোলনকারী অনেক রয়েছে। কিন্তু কুরআন ও মুহাম্মদ সা. এর পেশকৃত দ্বীনের প্রাণ বস্তু এবং তার মূলনীতির অনুধাবনকারী একজনও নেই। তাঁরা দ্বীন প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত কিন্তু তাঁদের ব্যক্তি জীবনে কোন দ্বীনদারী ও সুন্নাতে রাসূলের অনুসরণ দেখা যায় না। তাঁরা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় খুব আগ্রহী কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্রের মূলনীতি ও বিধি-বিধান যা হাদীস ও ফিক্বার কিতাবাদীতে সংরক্ষিত তা পরিস্কারভাবে অস্বীকার করে। সর্বদা তাঁরা ইসলামী আন্দোলনে ব্যস্ত কিন্তু ব্যক্তি জীবনে অথবা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোন স্বার্থ পেয়ে গেলে ইসলাম ছেড়ে যে কোন বে-দ্বীনী শক্তির সামনে মাথানত করতে দ্বিধা নেই তাঁদের। এসব প্রতারণা ও নীতিহীনতার কারণে তাঁরা জাতির আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তাইতো কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর যাবৎ এত ঢাক-ঢোল পিটিয়ে দেশের কোন এক মহল্লায়ও তাঁরা ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা চালু করতে পারেননি, আর কখনও পারবেন না নিশ্চয়ই।
    অতএব ইসলামী আন্দোলনের আবেগ ও জ্যাকে মওদুদী মতবাদের পেছনে অযথা নষ্ট না করে, ইসলামের ১৪শত বছরের নিরবচ্ছিন্ন নূরানী ধারা ‘আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের’ পতাকা তলে সমবেত হয়ে পূতঃ পবিত্র উলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে আয়িম্মায়ে মুজতাহিদীন ও বুযুর্গানে দ্বীনের লিখিত কিতাবাদীর আলোকে দেশে আইনে শরীয়ত প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এগিয়ে আসার জন্যে সবাইকে উদাত্ব আহ্বান জানাচ্ছি। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সর্বপ্রকার বাতিল থেকে হেফাজত করুন ও দেশে শরীয়তের আইন প্রতিষ্ঠা করার তাওফীক দান করুন। আমীন
    اللَّهُمَّ أَرِنَا الْحَقَّ حَقًّا وَ ارْزُقْنَا اتَّبَاعَهُ وَارِنَا الْبَاطِلَ بَاطِلًا وَارْزُقْنَا اجْتِنَابَهُ
    وما علينا الا البلاغ المبين
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Telegram Copy Link
    ইজহারে হক
    • Website

    এজাতীয় আরো

    ইসলাম

    জামায়াত কোনো ইসলামী দল নয়, বাতেল মতবাদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়: পীর সাহেব মধুপুর

    নভেম্বর ৯, ২০২৫
    মওদুদী ফিতনা জানতে

    সাহাবী-বিদ্বেষী জামায়াত: তাদের ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ: হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

    নভেম্বর ৭, ২০২৫
    মওদুদী ফিতনা জানতে

    আল্লাহর অঙ্গীকার অটুট, কুরআনের রূহ অম্লান — মওদুদী মতবাদের বিভ্রান্তি বিশ্লেষণ

    নভেম্বর ৩, ২০২৫
    প্রবন্ধ

    মওদুদীর ভ্রান্ত আকীদাসমূহ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দৃষ্টিকোণ

    নভেম্বর ২, ২০২৫
    এক সাথে সব

    দোকানের কর্মচারী থেকে ভারতের শীর্ষ ধনীর শীর্ষে: এম এ ইউসুফ আলী ও গুজরাটের নতুন লুলু মল

    অক্টোবর ২৯, ২০২৫
    এক সাথে সব

    কানাইঘাটে সড়ক অবকাঠামো ধ্বংসের মুখে, সংস্কারের দাবিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া: হারুনুর রশিদ চতুলী

    অক্টোবর ১২, ২০২৫
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    ইসলামি ঐক্য ভৌগোলিক সীমায় বাঁধা নয়”—মাওলানা ফজলুর রহমানের ভাষণ ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে

    নভেম্বর ১৩, ২০২৫

    মাওলানা ফজলুর রহমানের সফর: দুই দেশের ধর্মীয় সম্পর্ক জোরদারে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা

    নভেম্বর ১০, ২০২৫

    ধর্মবিরোধী গান? মাওলানা মাহমুদ মাদানীর সতর্কবার্তা

    নভেম্বর ৯, ২০২৫
    প্রিয়
    • ইসলামি ঐক্য ভৌগোলিক সীমায় বাঁধা নয়”—মাওলানা ফজলুর রহমানের ভাষণ ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে
    • মাওলানা ফজলুর রহমানের সফর: দুই দেশের ধর্মীয় সম্পর্ক জোরদারে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা
    • ধর্মবিরোধী গান? মাওলানা মাহমুদ মাদানীর সতর্কবার্তা
    • জামায়াত কোনো ইসলামী দল নয়, বাতেল মতবাদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়: পীর সাহেব মধুপুর
    • সাহাবী-বিদ্বেষী জামায়াত: তাদের ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ: হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী
    Advertisement

    সম্পাদক: আবু তালহা রায়হান 

    যোগাযোগ
    রংমহল টাওয়ার, বন্দর বাজার, সিলেট, বাংলাদেশ
    নিউজরুম : ০১৩২৪-৭৪২৩০২
    Email : izharehaq24@gmail.com

    এইমাত্র পাওয়া

    ইসলামি ঐক্য ভৌগোলিক সীমায় বাঁধা নয়”—মাওলানা ফজলুর রহমানের ভাষণ ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে

    নভেম্বর ১৩, ২০২৫
    © ২০২৫ Izharehaq.com. Designed by MD Maruf Zakir.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.