Close Menu

    ইসলামি ঐক্য ভৌগোলিক সীমায় বাঁধা নয়”—মাওলানা ফজলুর রহমানের ভাষণ ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে

    নভেম্বর ১৩, ২০২৫

    মাওলানা ফজলুর রহমানের সফর: দুই দেশের ধর্মীয় সম্পর্ক জোরদারে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা

    নভেম্বর ১০, ২০২৫

    ধর্মবিরোধী গান? মাওলানা মাহমুদ মাদানীর সতর্কবার্তা

    নভেম্বর ৯, ২০২৫
    Facebook X (Twitter) Instagram
    ইজহারে হক: হকের কথা বলে
    • হোম
    • প্রবন্ধ
      1. প্রকৃত আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’ত পরিচিতি
      2. মওদুদী মতবাদ
      3. মওদুদী ফিতনা জানতে
      4. কুরআন ও হাদীসের আলোকে মওদূদী মতবাদ
      5. শরীয়তের কাঠগড়ায় মওদুদী জামাতের মতাদর্শ
      6. মওদূদী মতবাদ- এক আয়নায় তিন চেহারা
      7. ইসলাম ও মওদুদীবাদের সংঘাত
      8. ইসলাম ও রাজনীতি
      9. শিয়া মতাদর্শ
      10. কাদিয়ানী মতবাদ
      11. ফিতনায়ে ইনকারে হাদীস
      12. বাতিল যুগে যুগে
      13. View All

      আহলে সুন্নতের ফিক্বাহ শাস্ত্রের ইমাম: ইসলামী আমলের ক্ষেত্রে বিদয়াতীদের চক্রান্ত

      মে ২৯, ২০২৪

      আহলে সুন্নতের আক্বীদামতে মহানবীর মর্যাদা: অতি ভক্তি কিসের লক্ষণ

      মে ২৮, ২০২৪

      রেজভীদের চক্রান্ত হুবহু ইবনে সাবার চক্রান্তের মত: রাসূলকে আলিমুল গাইব বলা সাবায়ী চক্রান্ত:

      মে ২৮, ২০২৪

      আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’ত সুবিন্যস্ত হওয়ার ইতিহাস

      মে ২৮, ২০২৪

      জামায়াত কোনো ইসলামী দল নয়, বাতেল মতবাদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়: পীর সাহেব মধুপুর

      নভেম্বর ৯, ২০২৫

      সাহাবী-বিদ্বেষী জামায়াত: তাদের ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ: হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

      নভেম্বর ৭, ২০২৫

      আল্লাহর অঙ্গীকার অটুট, কুরআনের রূহ অম্লান — মওদুদী মতবাদের বিভ্রান্তি বিশ্লেষণ

      নভেম্বর ৩, ২০২৫

      মওদুদীর ভ্রান্ত আকীদাসমূহ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দৃষ্টিকোণ

      নভেম্বর ২, ২০২৫

      জামায়াত কোনো ইসলামী দল নয়, বাতেল মতবাদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়: পীর সাহেব মধুপুর

      নভেম্বর ৯, ২০২৫

      সাহাবী-বিদ্বেষী জামায়াত: তাদের ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ: হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

      নভেম্বর ৭, ২০২৫

      আল্লাহর অঙ্গীকার অটুট, কুরআনের রূহ অম্লান — মওদুদী মতবাদের বিভ্রান্তি বিশ্লেষণ

      নভেম্বর ৩, ২০২৫

      মওদুদীর ভ্রান্ত আকীদাসমূহ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দৃষ্টিকোণ

      নভেম্বর ২, ২০২৫

      মওদূদী সাহেব যেমন সাহাবায়ে কিরামকে সত্যের মাপকাঠি মানতে নারাজ তেমনি আম্বিয়ায়ে কিরাম, সম্পূর্ণ নিষ্পাপ বলতেও নারাজ

      সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩

      দ্বীন সম্পর্কে মওদূদী সাহেবের কয়েকটি বক্তব্য

      সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩

      মওদূদী সাহেবের ব্যাপারে কতিপয় প্রশ্নের সমাধান

      সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩

      উসূলে হাদীস সম্পর্কে মওদূদীর বক্তব্য: “আদি যুগের আবোল-তাবোল প্রলাপ কে শুনে ?”

      সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩

      সুন্নাত সম্পর্কে মওদূদীর বক্তব্য: “সুন্নাতের অনুসরণ করা বিদয়াত ও কুসংস্কার”

      সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩

      আম্বিয়ায়ে কিরাম সম্পর্কে মওদূদীর বক্তব্য: “নবীগণ নিষ্পাপ নন বরং খবীছ নফ্স দ্বারা আক্রান্ত”

      সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩

      শরীয়তের কাঠগড়ায় মওদূদী জামায়াতের মতাদর্শ

      সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩

      মওদূদীবাদের আয়নায় কাদিয়ানী চেহারা

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      মওদূদীবাদের আয়নায় মু’তাজিলী হওয়ার চেহারা

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      কুরআন-হাদীসের বিশ্বস্ত মাধ্যম সাহাবায়ে কিরামের উপর থেকে ভক্তি নির্ভরতা বিলুপ্তির ভয়ানক ষড়যন্ত্র।

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      মওদূদীবাদের দর্পণে শী’আ মতবাদের ছবি: মওদূদীবাদের আয়নায় শীআদের প্রতিচ্ছবি।

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      নবুওয়াত ও রিসালত: মওদুদীবাদ

      মে ২৫, ২০২৪

      ইবাদত: মওদুদীবাদ

      মে ২৫, ২০২৪

      কুরআন মাজীদ ও দ্বীনের সংরক্ষণ: কুরআন সংরক্ষণের অর্থ: কুরআন সংরক্ষণে খোদায়ী ব্যবস্থাপনা: মওদুদীবাদ

      মে ২৪, ২০২৪

      দ্বীন কী? দ্বীনে নূহ: দ্বীনে ইব্রাহীম: দ্বীনে ইসমাঈল: দ্বীনে ইউসুফ: দ্বীনে মূসা: দ্বীনে ঈসা: মওদূদীবাদ

      মে ২৩, ২০২৪

      জমিয়তের সমাবেশের দিন উত্তরায় সম্মেলন ডাকলো জামায়াত

      জুলাই ১০, ২০২৫

      ইসলাম ও রাজনীতি: রাজনীতির সংজ্ঞা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বিষয়বস্তু

      অক্টোবর ৮, ২০২৩

      শিয়া মতাদর্শ

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      কাদিয়ানী মতবাদ

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      পারভেযী মতবাদ বা ফিতনায়ে ইন্‌কারে হাদীস

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      মওদুদী ফিতনা

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      পারভেযী মতবাদ বা ফিতনায়ে ইন্‌কারে হাদীস

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      কাদিয়ানী মতবাদ

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      শিয়া মতাদর্শ

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      মওদুদীর ভ্রান্ত আকীদাসমূহ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দৃষ্টিকোণ

      নভেম্বর ২, ২০২৫

      জামায়াতে ইসলামী, মওদূদীবাদ ও আকীদাগত স্বচ্ছতার অপরিহার্যতা

      অক্টোবর ৮, ২০২৫

      📚 শিক্ষার সঙ্গে বাণিজ্য-এক আকর্ষণীয় কিন্তু বিভ্রান্তিকর স্লোগান আলেমদের দায়িত্ব ও বাস্তবতা

      অক্টোবর ৬, ২০২৫

      “পূজায় শুভেচ্ছা: ইসলামের দৃষ্টিতে সীমারেখা ও সদাচরণ”

      সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫
    • জাতীয়
    • মুসলিম বিশ্ব
    • সারাদেশ
    • রাজনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • মতামত
    • ইসলাম
    • প্রতিবেদন
      • দাওয়াহ
      • প্রবাস
      • কল্যাণ ট্রাস্ট
      • বয়ান
    ইজহারে হক: হকের কথা বলে
    প্রবন্ধ

    মওদুদীর ভ্রান্ত আকীদাসমূহ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দৃষ্টিকোণ

    দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য মওদূদীপন্থী মতাবলীর প্রভাব ও বিভ্রান্তি সম্পর্কে সতর্কবার্তা দিয়েছেন খ্যাতনামা আলেমরা
    ইজহারে হকBy ইজহারে হকনভেম্বর ২, ২০২৫
    Share Facebook Twitter Pinterest Copy Link LinkedIn Tumblr Email VKontakte Telegram
    Share
    Facebook Twitter Pinterest Email Copy Link

    কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে একথা সুস্পষ্ট যে, বান্দার যাবতীয় আমল ও কার্যাবলি কেবল তখনই আল্লাহ তা’লার নিকট স্বীকৃত ও গৃহীত হয়, যখন তা ‘বিশুদ্ধ আকীদা’ অর্থাৎ সঠিক ধর্ম বিশ্বাসের ভিত্তিতে সম্পাদিত হয়। আর যদি আকীদা-বিশ্বাস বিশুদ্ধ না হয়, বরং কুরআন ও সুন্নাহ পরিপন্থী হয় তাহলে তার ভিত্তিতে সম্পাদিত সকল আমল এবং কথা ও কাজ আল্লাহ্‌র নিকট বাতিল বলে গণ্য হয়। কেননা আল্লাহ্‌ তা‘আলা বলেন: “যে কেউ ঈমান প্রত্যাখ্যান করবে তার সমস্ত কাজ অবশ্যই বিফলে যাবে এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। (আল-মায়েদা-৫)

    আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন: “তোমার প্রতি এবং তোমার পূর্বে অতীত সমস্ত নবী রাসূলগণের প্রতি অবশ্যই এ বার্তা পাঠানো হয়েছে, তুমি যদি আল্লাহর সাথে শিরক কর, তাহলে তোমার সমস্ত কাজ অবশ্যই বৃথা হয়ে যাবে, আর তুমি নিঃসন্দেহে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। (সূরা-যুমার-৬৫)

    ইসলামী বিশ্বাস বা ‘আল-আকায়েদ আল-ইসলামিয়্যাহ’-র ভিত্তি ও উৎস হল কুরআন ও হাদীস। পবিত্র কুরআনে ও হাদীসে যা বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে তাই বিশ্বাস করা এবং যেভাবে বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে সেভাবেই বিশ্বাস করা ইসলামী আকীদার মূল ভিত্তি।

    এখানে উল্লেখ্য যে, কুরআন ও হাদীসের বাণী অত্যান্ত সুস্পষ্ট ও পরিস্কার। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা. এর শিক্ষার মধ্যে কোনো জটিলতা নেই, গোপনীয়তা, বৈপরিত্য বা স্ববিরোধিতা নেই। তারপরও কখনো জ্ঞানের দুর্বলতার কারণে কুরআন ও হাদীস বুঝার বা ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে মতপার্থক্য বা দ্বিধা সৃষ্টি হয়ে থাকে। তখন রাসূলে আকরাম (সা.)-এর সাহাবীগণ এবং পরবর্তী দুই প্রজন্ম ‘তাবিয়ী’ ও ‘তাবি-তাবিয়ীগণের’ ব্যাখ্যা ও মতামতই চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হয়।

    কারণ, সাহাবীগণ ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে গড়া ছাত্র। তাঁরা তাঁর মুখের বাণী সরাসরি শুনেছেন, কুরআন নাযিল হওয়ার পটভুমি তাঁরা জেনেছেন, কুরআনের ও হাদীসের শিক্ষা সবচেয়ে ভাল বুঝেছেন ও জীবনে বাস্তাবায়িত করেছেন তাঁরাই। স্বভাবতই কুরআন ও সুন্নাহ বুঝার ক্ষেত্রে আমাদেরকে তাঁদের মতামতের উপর নির্ভর করতে হবে। কুরআনে করীমের বিভিন্ন আয়াতেও আল্লাহ তা’লা সাহাবায়ে কেরামের প্রশংসা করেছেন এবং তাঁদের অতুলনীয় ও অনুকরণীয় ঈমান, আমল, তাকওয়া, জিহাদ, স্বার্থ ত্যাগ, তাঁদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত রহমত ইত্যাদির কথা উলে­খ করেছেন। দেখনু: সূরা আল-ইমরান: ১০১, ১১০, ১৭২-১৭৪, সূরা আনফাল: ৬২, ৭৪, সূরা তাওবা: ৮৮-৮৯, ১০০, ১১৭, সূরা ফাতহ: ১৮-১৯, ২৬, ২৯, সূরা হুজুরাত:৭, সূরা হাদীদ ১০, সূরা হাশর: ৮-১০।

    এ সকল আয়াতের আলোকে আমরা জানতে পারি যে, ঈমান, তাকওয়া, বেলায়াত ও কামালাত বিশেষত “ঈমান ও আকীদা-বিশ্বাসের” ক্ষেত্রে সাহাবায়ে কেরামকে ভালবাসা ও তাঁদের অনুকরণ-অনুসরণ করা পরবর্তী মুসলমানদের দায়িত্ব।

    সাহাবায়ে কেরামের পর তাঁদের হাতে গড়া অনুসারী তাবেয়ীন হলেন দ্বীনের একনিষ্ঠ ধারক ও বাহক। আল্লাহ রাসূল সা. তাদের ব্যপারে এরশাদ করেন- “কেয়ামত পর্যন্ত যত যুগ অতিবাহিত হবে তন্মধ্যে সবচেয়ে উত্তম যুগ হল আমার যুগ, এরপর হল আমার পরবর্তী যুগ অর্থাৎ সাহাবায়ে কেরামের যুগ, এরপর হল পরবর্তী যুগ অর্থাৎ তাবেয়ীনদের যুগ”।

    অতএব দ্বীনের সকল বিষয়ের মত আকীদা-বিশ্বাসের ক্ষেত্রেও কুরআন ও হাদীস বোঝা ও অনুধাবন করার ক্ষেত্রে সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীনদের অনুসরণ করার কোন বিকল্প নেই। যারাই এ পথের অনুসরণ করবে তাদেরকেই বলা হয় “আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত”। চৌদ্দশত বছর যাবত মুসলিম উম্মাহ এভাবেই দ্বীন ও ঈমান শিখে আসছে।

    বিপরীতে যারাই সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন ও আকাবিরে আসলাফের এই পদ্ধতি বাদ দিয়ে নিজে নিজে কুরআন ও সুন্নাহ বুঝতে গিয়েছে তারাই ভ্রান্তি ও বিচ্যুতির স্বীকার হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদীও এমন একজন ব্যক্তি যিনি সাহাবায়ে কেরাম তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীনদের রেখে যাওয়া পথ ও পদ্ধতি বাদ দিয়ে নিজের মন গড়া পদ্ধতিতে কুরান ও হাদীস বুঝেছেন এবং স্বভাবতই তিনি ভ্রান্তির স্বীকার হয়েছেন।  আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’তের দৃষ্টিভঙ্গি ও তাদের আকীদা-বিশ্বাসের পরিপন্থী বিভিন্ন আকীদা-বিশ্বাস ও বিতর্কিত আমলের জন্ম দিয়েছেন। আল্লাহ, রাসূল, ফেরেশতা, আম্বিয়ায়ে কেরাম, সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে এমন জঘন্য মন্তব্য করেছেন যেগুলো শুধু ইসলামের সাথে ধৃষ্টতা নয়, বরং বিগত চৌদ্দশ বছরের মুসলিম উম্মাহর আকীদা-বিশ্বাসের পরিপন্থী।

    আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আকীদা-বিশ্বাসের পরিপন্থী যেসকল আকীদা আল্লামা মওদূদী সাহেব পোষণ করতেন সেগুলোকে মওদূদী মতবাদ বলে আখ্যায়িত করা হয়। তার এই আকীদা বিশ্বাসের উপরই ভিত্তি করেই সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী ১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট লাহোরের ইসলামীয়া পার্কে “জামায়াতে ইসলামী” নামের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। নিচে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের পরিপন্থী আল্লামা মওদূদীর কিছু আকীদা-বিশ্বাস সবিস্তারে তুলে ধরা হল।

    (১) আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে আল্লামা মওদূদীর ভ্রান্ত আকীদাঃ

    কুরআনে কারীমে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন- “আল্লাহ তা’লা শস্যের দানা পরিমাণ অর্থাৎ সামান্য পরিমাণ যুলুম-অবিচার করেন না”। (সূরা নিসা: ৪০) অন্যত্র এরশাদ করেন- “নিশ্চয় আল্লাহ তা’লা মানুষের উপর সামান্য যুলুম-অবিচারও করেন না। কিন্তু মানুষ নিজেই নিজের উপর অবিচার করে থাকে”। (সূরা ইউনুস: ৪৪) এসকল আয়াত ও বিভিন্ন হাদীসের আলোকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আকীদা হল- আল্লাহ তা’লার দেয়া কোন বিধান বা নির্দেশ কখনো যুলুম বা অবিচার হতে পারে না।

    কিন্তু আল্লাহ তা’লা সম্পর্কে আল্লামা মওদূদীর আকীদা হল- আল্লাহ তা’আলা যালেম। আল্লাহ তা’লার দেয়া বিধান বান্দার উপর যুলুম বা অবিচার হতে পারে। তিনি তার তাফহীমুল কুরআনে আল্লাহ প্রদত্ত রজম (বিবাহিত নারী ব্যভিচারে লিপ্ত হলে পাথর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলার শাস্তি) বিধানের ক্ষেত্রে বলেন- “যে ক্ষেত্রে নর-নারীর অবাধ মেলামেশা, সেক্ষেত্রে যেনার কারণে (আল্লাহ পাকের আদেশকৃত) রজম শাস্তি প্রয়োগ করা নিঃসন্দেহে জুলুম।” (নাঊযুবিল্লাহ) (তাফহীমাত, ২য় খণ্ড, ২৮১ পৃষ্ঠা)

    (২) নবী-রাসূলদের সম্পর্কে আল্লামা মওদূদীর ভ্রান্ত আকীদাঃ

    আল্লাহ প্রেরিত সকল নবী-রাসূলগণ ‘মা’ছূম’ তথা নিষ্পাপ ছিলেন। নবুওয়াত পাওয়ার পূর্বে অথবা পরে কখনোও তাদের থেকে কবিরা গোনাহ অথবা ছগীরা গোনাহ কোনটাই সংঘটিত হয়নি। বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে আল্লাহ তা’লা তাদেরকে নফসের কুপ্রবৃত্তি ও শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে সংরক্ষণ করেছেন। এছাড়াও সকল নবী-রাসূলগণ তাদের দায়িত্ব যথাযথ পালন করেছেন এবং তাঁরা সকল সমালোচনার ঊর্ধ্বে। কুরআনে কারীমে আল্লাহ তা’লা এরশাদ করেন- “আর নিশ্চয় তাঁরা (সকল নবী-রাসূল) আমার নিকট বিশেষ মনোনীত ও সন্তোষভাজন ব্যক্তিদের অন্তর্ভূক্ত”। (সূরা সাদ: ৪৭) এই আয়াতে আল্লাহ তা’লা নবীদেরকে আল্লাহ তা’লার সন্তোষভাজন ও প্রিয়ভাজন ও বিশেষ মনোনীত ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কোন পাপী-গোনাহগার তো আল্লাহ তা’লার মনোনীত ও সন্তোষভাজন হতে পারে না। আকীদার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ শরহে ফিকহে আকবার গ্রন্থে নবিদের নিস্পাপ হওয়া (عصمة الأنبياء) প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে- “সকল নবী-রাসূলগণ  নবুওয়াত পাওয়ার আগে ও পরে সগীরা-কবীরা সহ সব ধরনের গোনাহ থেকে পুত পবিত্র ছিলেন”। (শরহে ফিকহে আকবর: ১৬) আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সকল ওলামায়ে কেরাম সহ চৌদ্দশ বছরের প্রায় সকল ফকীহ ও মুহাদ্দীছীনে কেরাম এই আকীদা পোষণ করেন।

    কিন্তু মাওলানা মওদূদী বলেন- নবী-রাসূলগণ ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নন। তারাও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গোনাহে লিপ্ত হয়েছেন। শুধু নবুয়ওয়াতের পূর্বেই নয়, বরং নবুওয়াত পাওয়ার পরও নবীদের থেকে পাপ সংঘটিত হতে পারে এবং হয়েছেও। এব্যপারে মাওলানা মওদূদী উল্লেখ করেন-

    “নিষ্পাপ হওয়াটা আসলে নবীদের সত্তাগত অপরিহার্য বৈশিষ্ট নয়…….। এটা একটা বড়ই মজার কথা যে, আল্লাহ প্রত্যেক নবী থেকেই কোন না কোন সময় নিজের সংরক্ষণ ব্যবস্থা তুলে নিয়ে দুএকটা গোনাহ ঘটে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে, যাতে মানুষ নবীদেরকে খোদা মনে করে না বসে এবং তারা যে মানুষ, খোদা নন, সেটা বুঝতে পারে”। (নির্বাচিত রচনাবলী: ২য় খণ্ড, ৭৪ পৃষ্ঠা, তাফহীমাত: ২য় খণ্ড, ৫৬ পৃষ্ঠা-উর্দু)।

    কী আশ্চর্য দর্শন‍!! নবীগণ মানুষের ন্যয় পানাহার করতেন এটা তাদের মানুষ প্রমাণিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট হল না, অধিকন্তু তাঁরা মানুষ- সেটা প্রমাণ করার জন্য তাঁদের দ্বারা পাপ সংঘটিত করাতে হল।

    সূরা হুদের ৪৬ নং আয়াতে ব্যাখ্যায় মাওলানা মওদূদী বলেন- “বস্তুত: নবীগণ মানুষই হয়ে থাকেন এবং কোন মানুষই মুমিনদের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ মাপকাঠি বা আদর্শ হিসেবে অবিচল থাকতে পারে না। প্রায়শই মানবীয় নাজুক মুহূর্তে নবীর ন্যায় শ্রেষ্ঠ মানুষও কিছুক্ষণের জন্য মানবিক দুর্বলতার সামনে পরাভূত হয়ে যান”। (তাফহীমুল কুরআন: ২য় খণ্ড, ৩৪৩-৩৪৪ পৃষ্ঠা উর্দু)

    মাওলানা মওদূদী এক জায়গায় উল্লেখ করেন- “অন্যদের কথাতো স্বতন্ত্র, প্রায়শই পয়গম্বরগণও তাদের কুপ্রবৃত্তির মারাত্মক আক্রমণের শিকার হয়েছেন”। (তাফহীমাতঃ ২/১৯৫)

    নবীদের সম্পর্কে এই ধরনের আকীদা নবীদের শানে শুধুমাত্র ধৃষ্টতাই নয়, বরং নবীদের আনীত দ্বীনের উপর সন্দেহের বীজ বপন করার নামান্তর। এধরণের ধারণা বা সন্দেহ দ্বীনে এলাহীর সত্যতা ও অকাট্যতার উপর কুঠারাঘাতের চেয়েও কম নয় কিছু।

    শুধু এতটুকুই নয়, এছাড়াও মাওলানা মওদূদী বিভিন্ন নবী সম্পর্কে এমন সমালোচনা করেন যেগুলো ধর্মপ্রাণ খোদাভীরু মানুষের অন্তরে মওদূদীবাদ সম্পর্কে শুধু বিরূপ ধারনার জন্ম দেয়, তা নয়, বরং ঘৃণার সৃষ্টি করে। নিচে তার কিছু নমুনা তুলে ধরা হল-

    ১. হযরত দাউদ আ. সম্পর্কে: “হযরত দাউদ আঃ যে কাজটি করেছিলেন তাতে প্রবৃত্তির কামনার কিছু দখল ছিল, শাসন ক্ষমতার অসঙ্গত ব্যবহারের সাথেও তার কিছু সম্পর্ক ছিল, এবং তা এমন কাজ ছিল যা কোন ন্যায়নিষ্ঠ শাসকের জন্য শোভনীয় ছিল না”। [তাফহীমুল কুরআন-১৩/৯৫, আধুনিক প্রকাশনী, ১১শ প্রকাশ]

    অন্যত্র বলেন- “হযরত দাউদ আঃ তার যুগের ইসরাইলী সমাজের সাধারণ প্রথায় প্রভাবান্নিত হয়ে উরিয়ার কাছে তার স্ত্রীকে  তালাক দেয়ার আবেদন করেন”। [নাউজুবিল্লাহ] {তাফহীমাত-২/৪২, দ্বিতীয় প্রকাশ, (তাফহিমুল কোরআন -উর্দু:৪র্থ খণ্ড, সুরা সাদ, ৩২৭ পৃ. ১ম সংস্করণ, অক্টোবর ১৯৬৬ইং)

    ২. হযরত মূসা আ. সম্পর্কে: “মুসা আঃ এর উদাহরণ ঐ তাড়াহুরাকারী বিজেতার মত, যে নিজের অধীনতদের নির্দেশ দেয়া ছাড়াই মার্চ করতে করতে চলে যায়, আর পিছনে জংলার অগ্নির মত বিজিত এলাকায় বিদ্রোহ ছড়িয়ে যায়”। [নাউজুবিল্লাহ] {রেসালায়ে তরজুমানুল কুরআন-২৯/৪-৫}

    ৪. হযরত ইউনুস আ. সম্পর্কে: “হযরত ইউনুস আলাইহিস সালাম এর দ্বারা রিসালাতের দায়িত্ব আদায় করার ব্যাপারে কিছু ত্রুটি হয়ে গিয়েছিল। সম্ভবত তিনি ধৈর্যহারা হয়ে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই আপন স্থান ত্যাগ করে চলে গিয়েছিলেন।” (তাফহিমুল কোরআন: ২য়খণ্ড, সূরা ইউনুস (টিকা দ্রষ্টব্য) ৩য় সংস্করণ, ১৯৬৪ ইং)

    ৫. হযরত ইউসুফ আ. সম্পর্কে: “আমাকে মিসরের রাজকোষের পরিচালক নিয়োগ করুন- এ কথাটি বলে শুধু অর্থমন্ত্রী হওয়ার জন্যই প্রার্থনা করেননি। কারো কারো ধারনা, বরং তিনি এ বলে ‘ডিক্টেটরশীপ’ই চেয়েছিলেন মৌলিকভাবে। এরই ফলশ্রুতিতে বর্তমান ইতালীর মুসোলিনীর যে অবস্থা তিনিও এর কাছাকাছি অবস্থায় চলে গিয়েছিলেন।” (তাফহীমাত: ২য় খণ্ড, ১২২ পৃ. ৫ম সংস্করন এবং নির্বাচিত রচনাবলী(বাংলা) ২য় খণ্ড, ১৫১ পৃ, আধুনিক প্রকাশনী, ১ম সংস্করন ১৯৯১ইং)

    ৬. হযরত আদম আ. সম্পর্কে: “হযরহ আদম আলাইহিস সালাম মানবিক দূর্বলতায় আক্রান্ত ছিলেন। তিনি শয়তানী প্রলোভন হতে সৃষ্ট তড়িৎ জযবায় আত্মভোলা হয়ে নিজ নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেন। ফলে আনুগত্যের উচ্চ শিখর হতে নাফারমানীর অতল গহ্বরে গিয়ে পড়েন”। (তাফহিমুল কোরআন (উর্দু): ৩য় খণ্ড, ১২৩ পৃ.)

    ৭. হযরত নূহ আ. সম্পর্কে: “হযরত নূহ আলাইহিস সালাম চিন্তাধারার দিক থেকে দ্বীনের চাহিদা হতে দূরে সরে গিয়েছিলেন। তার মধ্যে জাহিলিয়াতের জযবা স্থান পেয়েছিল”। (তাফহিমুল কোরআন: ২য়খণ্ড, ৩৪৪ পৃ. ৩য় সংস্করণ, ১৯৬৪ ইং)

    ৮. হযরত ইব্রাহীম আ. সম্পর্কে “এখানে আরেকটি প্রশ্নের উদ্রেক হয় যে, হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম যখন নক্ষত্র দেখে বলেছিলেন, এটা আমার প্রতিপালক এবং চন্দ্র-সূর্য দেখে এগুলোকেও নিজের প্রতিপালক হিসাবে আখ্যা দিয়েছিলেন, তখন সাময়িকভাবে হলেও কি তিনি শিরকে নিপতিত হননি?” (তাফহিমুল কোরআন ১মখণ্ড, ৫৫৮)

    ৯. হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কেঃ “মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে মনগড়া কথা বলেছেন এবং নিজের কথায় নিজেই সন্দেহ পোষণ করেছেন”। (তরজমানুল কোরআন, রবিউল আউয়াল সংখ্যা, ১৩৬৫ হিজরী)

    অন্যত্র বলেন- “মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানবিক দূর্বলতা থেকে মুক্ত ছিলেন না। অর্থাৎ তিনি মানবিক দূর্বলতার বশীভূত হয়ে গুনাহ করেছিলেন”। (তরজমানুল কোরআন ৮৫ তম সংখ্যা, ২৩০পৃ. ও তরজমানুস্‌ সুন্নাহ, ৩য় খণ্ড, ৩০৫ পৃষ্ঠা)

    অন্যত্র বলেন- “হযরত মুহাম্মদ (সা.) রিসালাতের দায়িত্ব পালনে ত্রুটি করেছেন, তাকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। (তাফহীমুল কুরআন, সুরায়ে নসর এর তাফসীর)

    অন্যত্র বলেন- “আল্লাহ তা’য়ালার নিকট কাতর কন্ঠে এই আবেদন করুন, যে কাজের দায়িত্ব আপনাকে দেওয়া হয়েছিল তা সম্পন্ন করার ব্যাপারে আপনার দ্বারা যে ভুল ত্রুটি হয়েছে কিংবা তাতে যে অসম্পূর্ণতা রয়ে গেছে তা যেন তিনি ক্ষমা করে দেন।” (তাফহিমুল কোরআন: ১৯/২৮০, কোরআনের চারটি মৌলিক পরিভাষা: ১১২)

    (৩) সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে মাওলানা মওদূদীর ভ্রান্ত আকীদাঃ

    নবী-রাসূলদের পর সাহাবায়ে কেরাম হলেন পৃথিবীর সবচেয় সম্মানিত ও শ্রেষ্ঠ জামাত। দ্বীনের জন্য তাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা, মেহনত-মোজাহাদা, আত্মোৎসর্গের কোন নযীর পৃথিবীর ইতিহাসে নেই। তাই সাহাবায়ে কেরামকে মুহাব্বত করা, তাদের প্রতি সম্মান জানানো, এবং তাদের সমালোচনা থেক বিরত থাকা ঈমানের দাবী। কুরআনে কারিমে আল্লাহ তা’লা সাহাবায়ে কেরমা সম্পর্কে ঘোষণা দেন- “আমি তাদের [সাহাবাদের] প্রতি সন্তুষ্ট আর তারাও আমার অনুগত”। {সূরা তাওবা-১০০} অন্য এক আয়াতে আল্লাহ তা’লা এরশাদ করেন- “আর তাদের (সাহাবায়ে কেরামের) প্রত্যেকের ব্যপারে আল্লাহ তা’লা সর্বোত্তম প্রতিদানের সুসংবাদ দিয়েছেন”। (সূরা নিসা: ৯৫) যাদের প্রতি স্বয়ং আল্লাহ নিজের সন্তুষ্টির ঘোষণা দিয়েছেন এবং দুনিয়াতেই জীবীত অবস্থায় জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন তাদের সমালোচনা করা, দোষ-ত্রুটি ধরা কিভাবে বৈধ হতে পারে?!

    এক হাদীসে আল্লাহর রাসূল সা. এরশাদ করেন- “তোমরা আমার সাহাবীদের সমালোচনা করো না। ঐ সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন! তোমাদের কেউ যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ ব্যয় করে, তবুও সে তাঁদের এক মুদ বা তার অর্ধ পরিমাণো পৌঁছতে পারবে না”। (বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী)

    অন্য এক হাদীসে আল্লাহর রাসূল বলেন- “তোমরা আমার সাহাবীদের ব্যপারে আল্লাহকে ভয় করো! তোমরা আমার সাহাবীদের ব্যপারে আল্লাহকে ভয় করো!! আমার পর তোমরা তাঁদেরেক সমালোচনার পাত্র বানিও না”। (তিরমিযি) সুতরাং কুরআন ও হাদীসের আলোকে সন্দহাতীতভাবেই এ কথা বলা যায় যে, সকল সাহাবায়ে কেরাম সমালোচনার ঊর্ধ্বে। তাঁদের সমালোচনা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের সর্বস্বীকৃত আক্বিদা হল-সাহাবায়ে কেরাম সমলোচনার উর্দ্ধে। তাদের দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করা হারাম ও কবিরা গুনাহ”। (শরহুল আকায়েদ পৃষ্ঠা ৩৫২)

    কিন্তু হাদীসে সাহাবায়ে কেরামের সমালোচনা এত কঠোরভাবে নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও মাওলানা মওদূদী সাহেব সাহাবায়ে কেরামের সমালোচনা শুধু জায়েযই মনে করেন না, বরং জরুরী মনে করেন। তিনি শুধু সমালোচনা করেই ক্ষান্ত হননি বরং সাহাবায়ে কেরামের প্রতি জঘন্য মিথ্যা অপবাদও আরোপ করেছেন। কখনো কখনো তাঁদেরেক অনির্ভরযোগ্য প্রমাণ করার জন্য ব্যর্থ প্রচেষ্টাও চালিয়েছেন। কুরআনে কারিমের সূরা বাকারার ১৩ ও ১৩৭ নং আয়াতে আল্লাহ তা’লা সাহাবায়ে কেরামকে যেখানে সত্য ও ন্যায়ের মাপকাঠি বানিয়েছেন সেখান মাওলানা মওদূদী সাহেব তাঁদেরকে সত্যের মাপকাঠি মানতে দ্বিমত পোষণ করেছন। সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে মাওলানা মওদূদীর কিছু জঘন্য কিছু মন্তব্য নিন্মে উল্লখ করা হল-

    সাহাবায়ে কেরামের সমালোচনার ব্যপারে তিনি বলেন- “সাহাবায়ে কেরাম সমলোচনার ঊর্ধ্বে নন। তাদের দোষ বর্ণনা করা যায়। সাহাবাদের সম্মান করার জন্য যদি ইহা জরুরী মনে করা হয় যে, কোনভাবেই তাদের দোষ বর্ণনা করা যাবে না তবে আমার (মওদুদী) দৃষ্টিতে ইহা সম্মান নয় বরং মূর্তি পূজা। যার মূলোৎপাটন এর লক্ষ্যেই জামাতে ইসলামীর জন্ম”। (তরজুমানুল কুরআন ৩৫শ’ সংখ্যা, পৃষ্ঠা ৩২৭)

    অন্যত্র বলেন- “সাহাবায়ে কিরাম অনেকে মনগড়া হাদিস বর্ণনা করেছেন।” (তরজমানুল কোরআন-৩৫ সংখ্যা)
    এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন- “সাহাবাদের মধ্যে জাহেলিয়াতের বদ-স্বভাবের পুনরাবৃত্তি ঘটে।” (তাফহীমাত ২য় খণ্ড, ১৫৫ পৃষ্ঠা)

    সাহাবায়ে কেরাম সত্যের মাপকাঠি নয়-এ প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্রের মৌলিক আক্বীদার দ্বিতীয়াংশে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ৬ নং পৃষ্ঠায় মওদূদী বলেন- “রাসূলে খোদা ছাড়া অন্য কাউকে সত্যের মাপকাঠি বানবেনা এবং সমালোচনার ঊর্ধ্বে মনে করবে না। কারো অন্ধ গোলামীতে লিপ্ত হবে না। অর্থাৎ সাহাবায়ে কিরাম সত্যের মাপকাঠি বলে জানবে না এবং তাদের অনুসরন করবে না”।
    (দস্তুরে জামাতে ইসলামীঃ ৬,৭)

    এছাড়াও মাওলানা মওদূদী সাহেব বিভিন্ন সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন কটূমন্তব্য করেন। তার কিছু উল্লেখ নিচে দেয়া হল-

    ১. হযরত আবু বকর রা. সম্পর্কে: “হযরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু খিলাফতের দায়িত্ব পালনে সম্পুর্ণ অযোগ্য ছিলেন”। (তাজদীদ ও ইয়াহইয়ায়ে দীন: পৃষ্ঠা ২২)

    ২. হযরত উমর রা. সম্পর্কে: “নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওফাতের সময় ব্যাক্তিসম্মানের কু-মনোবৃত্তি হযরত উমর (রঃ) কে পরাভূত করেছিল”। (তরজুমানুল কুরআন, রবিউস সানি ৩৫৭ হিজরী)

    ৩. হযরত উসমান রা. সম্পর্কে: “হযরত উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু এর মাঝে স্বজন-প্রীতির বদগুণ বিদ্যমান ছিল”। (খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ৯৯)

    ৪. হযরত আলী রা. সম্পর্কে: “হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু স্বীয় খেলাফতকালে এমন কিছু কাজ করেছেন যাকে অন্যায় বলা ছাড়া উপায় নেই”। (খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ১৪৬/১৪৩)

    ৫. হযরত মুয়াবিয়া রা. সম্পর্কে: “হযরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহু স্বার্থবাদী, গনিমতের মাল আত্মসাৎকারী, মিথ্যা সাক্ষ্যগ্রহণকারী ও অত্যাচারী ছিলেন”। (খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ১৭৩)

    (৪)কুরআনুল কারীম ও তাফসীর সম্পর্কে মাওলানা মওদূদীর ভ্রান্ত আকীদাঃ

    আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকীদা হল- কুরআন আল্লাহ তা’লার কালাম এবং কিতাব। কেয়ামত পর্যন্ত আগত সকল জাতি এবং সকল ধর্মের মানুষের হেদায়াতের জন্য আল্লাহ তা’লা এই কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। কুরআনের শব্দ এবং অর্থ দুটোই আল্লাহ তা’লা কেয়ামত পর্যন্ত সংরক্ষণ করবেন। কেউ এর মাঝে কোনরূপ পরিবর্তন সাধন করতে পারবে না। শাব্দিকভাবেও না, অর্থগত দিক থেকেও না। আল্লাহ তা’লা নিজেই এরশাদ করেন- “নিশ্চয় আমিই এই কুরআন অবতীর্ণ করেছি, এবং আমিই এর সংরক্ষক”। (সূরা হিজর: ৯)। অন্যত্র এরশাদ করেন- “আর আপনার রবের বাণী পূর্ণাঙ্গ হয়ে গেছে, সত্য ও ন্যায়ের দিক থেক। আল্লাহ তা’লার এই বাণীর কোন পরিবর্তনকারী নেই”। (সূরা আনআম: ১১৫)।)

    আল্লাহর রাসূল সা. এক হাদীসে এরশাদ করেন- “পূর্বসূরীদের কাছ থেকে পরবর্তীদের একটি নির্ভরযোগ্য একটি জামাত এই ইলম (কুরাআনের ব্যাখ্যা, তাফসীর, হাদীস ইত্যাদি) ধারণ করতে থাকবে। তারা চরমপন্থীদের বিকৃতি, বাতিলের অপমিশ্রণ, মূর্খদের অপব্যাখ্যা খণ্ডন করে এই দ্বীনকে স্বরূপে প্রতিষ্ঠিত রাখবে”। (বায়হাকী) এই সকল আয়াত ও হাদীস থেকে স্পষ্ট বোঝে আসে যে, এই কুরআনের প্রত্যেকটা শব্দ তার অর্থ সহ কেয়ামত পর্যন্ত সংরক্ষতি থাকবে, আল্লাহ নিজেই সংরক্ষণ করার ঘোষণা দিয়েছেন।

    কিন্তু মাওলানা মওদূদী সাহেবের দৃষ্টিভঙ্গি হল- কুরআনের শব্দ পরির্তন না হলেও, চারটি পারিভাষিক শব্দ (ইলাহ, রব, দ্বীন ও ইবাদাত) এর অর্থ এবং সঠিক ব্যাখ্যা সাহাবায়ে কেরামের যুগের পর থেকে নিয়ে দীর্ঘ তেরশত বছর বিকৃত এবং বিস্মৃত হয়ে গিয়েছিল। শুধু এতটুকুই নয়, বরং এই শব্দগুলোর সঠিক অর্থ বিস্মৃত হওয়ার কারণে তেরশত বছর পর্যন্ত কুরআনের তিন-চতুর্থাংশের বেশি শিক্ষা ও তার সত্যিকার স্প্রিট দৃষ্টির আড়ালে চলে গিয়েছিল। এর অর্থ হল- দীর্ঘ তেরশত বছর পর্যন্ত কুরআন আল্লাহ তা’লা সংরক্ষণ করতে পারেন নি। নাউযুবিল্লাহ। এরপর মাওলানা মওদূদী তেরশত বছর পর এসে সেগুলোর সঠিক অর্থ ও ব্যাখ্যা উদ্ধার করেছেন। আশ্চর্যের বিষয় হল- কালিমায়ে তাওহীদের মাঝেও ‘ইলাহ’ শব্দটি আছে। যেমন-“লা ইলাহ ইল্লাল্লাহ”। তাহলে তো বলতে হবে- দীর্ঘ তেরশত বছর পর্যন্ত ইসলামের কালিমা পর্যন্ত বিস্মৃত হয়ে গিয়েছিল।

    এপ্রসঙ্গে মাওলানা মওদূদী “কুরআন কি চার বুনিয়াদি ইসতেলাহেঁ” গ্রন্থে বলেন- “কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার সময় এ শব্দগুলোর (ইলাহ, রব, দ্বীন, ইবাদত) যে মৌল অর্থ প্রচলিত ছিল, পরবর্তী শতকে তা ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত এক একটি শব্দ তার সম্পূর্ণ ব্যাপকতা হারিয়ে একান্ত সীমিত, বরং অস্পষ্ট অর্থের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে পড়ে”। এক পৃষ্ঠা পর লিখেন- “এটা সত্য যে, কেবল এ চারটি মৌলিক পরিভাষার তাৎপর্যে আবরণ পড়ে যাওয়ার কারণেই কুরআনের তিন চতুর্থাংশের চেয়েও বেশি শিক্ষা এবং তার সত্যিকার স্পিরিটই দৃষ্টি থেকে প্রচ্ছন্ন হয়ে যায়”।  (কুরআন কী চার বুনিয়াদী ইসতিলাহেঃ ৮-১০), (অনুবাদ গ্রন্থ- “কুরআনের চারটি মৌলিক পরিভাষা”: ১২-১৩, আধুনিক প্রকাশনী)

    (৫) হাদীস সম্পর্কে মাওলানা মওদূদীর ভ্রান্ত আকীদাঃ

    আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আকীদা হল- কুরআন যেভাবে আল্লাহ তা’লা সংরক্ষণ করেছেন ঠিক তেমনিভাবে রাসূলের হাদীসও আল্লাহ তা’লা যুগে যুগে সংরক্ষণ করেছেন, এবং কেয়ামত পর্যন্ত সংরক্ষণ করবেন ইনশাআল্লাহ। মুহাদ্দীসীনে কেরাম যুগে যুগে আটা থেকে পশম বিচ্ছিন্ন করার মত সহীহ, মওযু, যয়ীফ সহ সকল বর্ণনাকে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণের মাধ্যমে চূড়ান্ত ফায়সাল করে গেছেন। সুতরাং হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধি নিয়ে কোন প্রকার সন্দেহ-সংশয় পোষণ করার কোন সুযোগ নেই। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’লা কুরআনে বলেন- “অতপর আমার উপরই এর (কুরআনের) ব্যাখ্যা সংরক্ষণের দায়িত্ব”। কুরআনের ব্যাখ্যা যা আল্লাহর রাসূল করেছেন সেটাই তো হাদীস। তাই মুফাসসিরীনে কেরাম বলেন- এই আয়াতে আল্লাহ তা’লা হাদীস সংরক্ষণের ঘোষণা দিয়েছেন।

    এই ব্যপারে আল্লাহর রাসূল সা. বলেন- “পূর্বসূরীদের কাছ থেকে পরবর্তীদের একটি নির্ভরযোগ্য একটি জামাত এই ইলম ধারণ করতে থাকবে। তারা চরমপন্থীদের বিকৃতি, বাতিলের অপমিশ্রণ, মূর্খদের অপব্যাখ্যা খণ্ডন করে এই দ্বীনকে স্বরূপে প্রতিষ্ঠিত রাখবে”। (বায়হাকী)

    কিন্তু মাওলানা মওদূদী সাহেব হাদীসের সনদের সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করে বলেন- “হাদীস তো কতিপয় মানুষের সুত্রে বর্ণিত হয়ে কতিপয় মানুষের কাছে পৌঁছেছে। কাজেই এসবের সত্যতা সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাস জন্মিতে পারে না। বড়জোর ধারনা জন্মিতে পারে”। (তাফহীমাতঃ ১/৩৫৬)

    এছাড়াও বুখারী শরীফে বর্ণিত হযরত ইবরাহীম (আঃ) ও হযরত সারা (আঃ) এর ঘটনা সম্বন্ধে মাওলানা মওদূদী মন্তব্য করেন- “এটি একটি মিথ্যা নাটক”। (রাসায়েল ও মাসায়েলঃ ৩/৩৬)

    (৬) নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত সম্পর্কে মাওলানা মওদূদীর ভ্রান্ত আকীদাঃ

    আহলে সুন্নাত ওয়াল  জামায়াতের নিকট নামায, রোযা, হজ, যাকাত ইত্যাদি হল মৌলিক ইবাদাত এবং এগুলো ইসলামের মৌলিক ও বুনিয়াদি বিষয়। ঈমানের পর এগুলো ইসলামের মুখ্য উদ্দেশ্য। কুরআনে আল্লাহ তা’লা এরশাদ করেন- “আর আমি মানুষ ও জ্বীন জাতিকে সৃষ্টিই করেছি আমার ইবাদাতের জন্য”। (যারিয়াত: ৫৬)

    হাদীসে আল্লাহর রাসূল সা. এরশাদ করেন- “পাঁচটি বিষয়ের উপর ইসলামের বুনিয়াদ রাখা হয়েছে। তা হল- (১) একথার সাক্ষ্য দেয়া- আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং মুহাম্মদ সা. আল্লাহর রাসূল। (২) আর নামায কায়েম করা। (৩) যাকাত দেয়া। (৪) হজ্ব করা। (৫) এবং রোযা রাখা”। (বোখারী ও মুসলিম)

    এই আয়াত ও হাদীস থেকে স্পষ্ট যে, নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত, প্রভৃতি ইবাদাতই হল ইসলামের মৌলিক বিষয় এবং দ্বীনের ভিত্তি, খেলাফত হল এই সকল ইবাদত পালনের জন্য সহায়ক।

    কিন্তু মাওলান মওদূদীর মতে নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি ইবাদত দ্বীনের মৌলিক কোন বিষয় নয়, মৌলিক বিষয় হল খেলাফত প্রতিষ্ঠা। আর ইবাদত হল ট্রেনিং কোর্স। এ প্রসঙ্গে মওদূদী সাহেব বলেন- “বস্তুত: ইসলামের নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি ইবাদত সমূহ এই উদ্দেশ্যে (জিহাদ ও ইসলামী হুকুমাত কায়েম করা) এর প্রস্তুতির জন্যই নির্দিষ্ট করা হয়েছে”। (ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষা: ২৭৩)

    এরপর অন্যত্র বলেন- “মূলত মানুষের নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত, যিকির, তাসবীহকে ঐ বড় ইবাদাত (খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা) এর জন্য প্রস্তুত করার ট্রেনিং কোর্স”। (তাফহীমাত: ১/২৯ উর্দু)

    (৭) দাড়ি ও সুন্নতী পোষাক সম্পর্কে মাওলানা মওদূদীর ভ্রান্ত আকীদাঃ

    দাড়ি রাখা মুসলমানদের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিআর বা প্রতীক। চার মাযহাবের সর্ব সম্মতিক্রমে দাড়ি রাখা ওয়াজিব এবং এটা রাসূলের অনুসরণযোগ্য সুন্নত। অর্থাৎ দাড়ি রাখা রাসূলের সুন্নাতে হুদা। অপরদিকে দাড়ি সেভ করা কিংবা এক মুঠের কম দাড়ি রাখা সম্পূর্ণ হারাম। এমনকি যে দাড়ি কাটে তাকে ‘ফাসেকে মু’লিন’ বা প্রকাশ্য দ্বীনের বিধান লঙ্ঘনকারী বলা হয়। হাদিসের প্রায় সব কিতাবেই দাড়ি রাথার গুরুত্ব ও নির্দেশ সম্পর্কিত আল্লাহর রাসূলের অসংখ্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

    বুখারি শরিফের এক হাদিসে আল্লাহর রাসূল সা. এরশাদ করেন- “তোমরা মুশরিকদের বিরোধিতা কর, মোচ খাটো কর, দাড়ি লম্বা কর”। (বোখারী: ৫৮৯২)

    আরেক হাদীসে আল্লাহর রাসূল সা. এরশাদ করেন- “মোচ খাটো করা এবং দাড়ি লম্বা রাখা ইসলামের স্বভাব-বৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভূক্ত। যেহেতু অগ্নিপূজক মাজুসীরা মোচ লম্বা করে এবং দাড়ি খাটো করে। অতএব তোমরা তাদের বিরোধিতা করে মোচ খাটো কর, দাড়ি লম্বা কর”। (সহীহ ইবনে হিব্বান)

    তবে হ্যাঁ, সাহাবায়ে কেরামের আমল থেকে এক মুঠের অতিরিক্ত দাড়ি খাটো করার অনুমতি বুঝে আসে। হযরত ওমর রা., হযরত আবু হুরায়রা রা., হযরত ইবনে ওমর রা. প্রমুখ সাহাবায়ে কেরাম থেকে এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত দাড়ি কাটার বর্ণনা পাওয়া যায়। (ফাতহুল বারী) এই সকল হাদীস সামনে রেখে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকীদা হল- দাড়ি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। এর পরিমাণ কতটুকু হবে সে ব্যপারে হাদীসের সুস্পষ্ট দলীল-প্রমাণ বিদ্যমান। অতএব কেউ যেমন এই বিধানকে হেয় করতে পারবে না, ঠিক তেমনি হাদিসে বর্ণিত পরিমাণের চেয়ে কম রাখলে সেটাকে শরয়ী দাড়ি বলা যাবে না।

    কিন্তু দাড়ি সম্পর্কে মাওলানা মওদূদীর মত হল- দাড়ি রাসূল সা. এর সুন্নাতে হুদা নয় অর্থাৎ এমন কোন সুন্নত বা আদর্শ নয় যা অনুসরণ করা জরুরী। তদুপরি তার মতে দাড়ি যে কোন পরিমাণ রাখলেই চলবে। শরিয়তে এর নির্দিষ্ট কোন সীমা রেখা নেই।

    তিনি বলেন- “রাসূল যত বড় দাড়ি রেখেছেন, ততো বড় দাড়ি রাখাই হল সুন্নতে রাসূল’- আপনার এই ধারণার অর্থ এই দাঁড়ায় যে, আপনি রাসূলের ব্যক্তিগত অভ্যাসকে হুবহু রাসূলের ঐই সুন্নাতের মর্যাদা সম্পন্ন মনে করছেন যা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রাসূল প্রেরিত হয়েছেন”। (রাসায়েল ও মাসায়েল: ১/১৮৪)

    এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন- “আমার মতে দাড়ি ছোট কিংবা বড় হবার মধ্যে বিশেষ কোন পার্থক্য নেই। এটা এমন কোন মূল বিষয় নয়, যা মানুষের ঈমান কম বা বেশি হবার প্রমাণবহ”। (রাসায়েল ও মাসায়েল: ১/১১৭) এরপর বলেন- “শরীআত প্রণেতা দাড়ির ব্যপারে কোন সীমারেখা নির্ধারণ করে দেননি। আলিমগণ যে সীমা নির্ধারণের চেষ্টা করেছেন, তা একটি গবেষণালব্ধ জিনিস মাত্র”। (রাসায়েল ও মাসায়েল: ১/১১৬)

    অন্যদিকে মওদূদির বাস্তব জীবেন দাড়ির কী অবস্থা ছিল তা জানার জন্য নিচে আল্লামা মনযূর নোমানী সাহেবের “মাওলানা মওদূদী সাহেবের সাথে আমার সাহচর্যের ইতিবৃত্ত ও অন্যান্য প্রসঙ্গ” বই থেকে কিছু উদ্বৃতি তুলে ধরছি। মনযূর নোমানী সাহেব উক্ত বইয়ের “মাওলানা মওদূদী সাহেবের সাথে আমার প্রথম মোলাকাত” শিরোনামের অধীনে উল্লেখ করেন- “আমি তাঁর সাথে মোলাকাত, ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও কর্মপন্থা সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য দিল্লী সফর করি। মাওলানা মওদূদী সাহেবের ঈমান মজবুতকারী লেখাসমূহ দ্বারা তাঁর জীবন পদ্ধতি সম্পর্কে কোন ব্যক্তি যে রকম ধারণা করতে পারে, তার থেকে তাঁর জীবন পদ্ধতি অনেক ভিন্ন ছিল বলে আমি পূর্বেই শুনেছিলাম। অর্থাৎ যে ইসলামী জীবনের প্রতি তিনি জোরালো ভাষায় আহবান করছিলেন, সে জীবনের অস্তিত্ব স্বয়ং তার মধ্যে নেই। যে ব্যক্তি আমাকে এ সম্পর্কে বলেছিলেন তিনি মাওলানা মওদূদীর সাথে সাক্ষাতকারীদের একজন ছিলেন এবং ‘তরজমানুল কুরআনের’ লেখাসমূহ দ্বারা তিনি প্রভাবিত ও ভক্ত হয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, ‘মাওলানা মওদূদী সাহেব দাড়ি মুণ্ডানো অবস্থায় থাকেন’। আমার মনে আছে, এতদ শ্রবণে আমি যেমন বিষ্মিত ও আশ্চর্যান্বিত হয়েছিলাম, তেমনিভাবে দু:খিত ও অনুতপ্ত হয়েছিলাম। সর্বোপরি নৈরাশ্যবোধ করেছিলাম। যতদূর আমার স্মরণ আছে, এটা ছিল ১৯৩৭ সালের ঘটনা”। (মাওলানা মওদূদী সাহেবের সাথে আমার সাহচর্যের ইতিবৃত্ত ও অন্যান্য প্রসঙ্গ: ২১)

    এরপর দুই পৃষ্ঠা পর মাওলানা মনযুর নোমানী সাহেব বলেন- “পরদিন নির্ধারিত সময়ে সকলে একত্রিত হয়ে বসে একটি দল বা একটি সংস্থা গঠনের রূপরেখা নির্ণয় করার কিছুক্ষণ পূর্বে আমি একাকীভাবে মাওলানা মওদূদী সাহেবকে বলি যে, ‘আমি এখানে আপনার সহযোগী হওয়ার ইচ্ছা নিয়েই এসেছিলাম। কিন্তু এখানে আসার পর আমার মধ্যে কিছুটা অস্থিরতা ও দোদুল্যমান অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাই বর্তমান যে দল বা সংস্থা সংগঠিত হচ্ছে তাতে আমি শরিক হবো না”। এর এক পৃষ্ঠা পর তিনি বলেন- “আমি এখানে আমার (দলে অংশগ্রহণ করা থেকে) বিরত থাকা  অথবা অস্বীকার করার কারণটা স্পষ্ট করে দেয়া উচিত মনে করি। আমার ধারণা ছিল যে, এত বিরাট , মহান দাবি নিয়ে যে দ্বীনি জামায়াত বা সংস্থা গঠিত হবে এবং এত মহান লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে দুনিয়ার সামনে ঘোষণা দিবে, যদি এই দাওয়াতের সাথে এর নেতার (মাওলানা মওদূদীর) জীবন পদ্ধতির অন্তত প্রয়োজনীয় সামঞ্জস্য না থাকে, তবে প্রথমত: এটা চলবে না। আর যদি কলমের জোরে কিছুটা চলেও থাকে, তবে তার দ্বারা মুসলমানদের দ্বিনী সংস্কারের কোন আশা করা যেতে পারে না”। (মাওলানা মওদূদী সাহেবের সাথে আমার সাহচর্যের ইতিবৃত্ত ও অন্যান্য প্রসঙ্গ: ২৪-২৫ পৃ)

    অন্যদিকে ইসলামী লেবাস-পোষাককে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে মাওলানা মওদূদী বলেন- “….তখন আপনারা কাহকেও ‘পীর সাহেব’ কাহাকেও ‘হযরত মাওলানা’ কাহাকেও ‘বড় কামেল’, ‘পরহেযগার’ প্রভৃতি নামে ভূষিত করেন। ইহার কারণ এই যে, আপনারা তাহাদের মুখে মাপ মত লম্বা দাড়ি দেখিয়া, তাহাদের পায়জামা পায়ের গিরার দুই ইঞ্চি উপরে দেখিয়া, তাহদের কপালে নামাযের কালো দাগ দেখিয়া এবং তাহদের লম্বা লম্বা নামায ও মোটা মোটা দানার তসবীহ দেখিয়া বিভ্রান্ত হইয়া পড়েন। ইহাদেরকেও বড় দ্বীনদার ও ইবাদতকারী বলিয়া মনে করেন। এই ভুল শুধু এই জন্য যে, ‘ইবাদত’ ও দ্বিনদারীর অর্থই আপনারা ভুল বুঝিয়া রাখিয়াছেন”। (ইসলামের বুনিয়াদী শিক্ষা: ১০৪-১০৫ পৃ)

    অথচ, ইসলামী লেবাস-পোষাক, দাড়ি প্রভৃতি ধর্মীয় সংস্কৃতির অন্তর্ভূক্ত। এগুলি ধর্মের বৈশিষ্ট্য ও প্রতীক বা শিআর। ইসলামে ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য বা শিআরের গুরুত্ব এতখানি যে, ভিন্ন ধর্মের শিআর বা বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্য গ্রহণকারী ব্যক্তি সম্পর্কে হাদীসে এসেছে, সে মুসলমানদের অন্তর্ভূক্ত নয়, বরং যে জাতির সাদৃশ্য গ্রহণ করবে সে তাদের অন্তর্ভূক্ত বলে গণ্য হবে। (মুসনাদে আহমাদ, তাবরানী ও আবু দাউদ) অথচ মওদূদী সাহেব ইসলামী-লেবাস ও দাড়ি নিয়ে কিভাবে উপহাস করেছেন!! এছাড়াও তার লেখায় বহু স্থানে সুলাহা তথা বুযুর্গানেদ্বীনের লেবাস-পোষাক নিয়ে বিদ্রূপাত্মক ভাষার ব্যবহার দেখা যায়। অথচ হাদীসে জামা পায়ের গোছার অর্ধেক তথা নেসফে সাক পর্যন্ত থাকার কথা বর্ণিত হয়েছে। অতএব এটা সুন্নত। আর এসবের ভিত্তিতে বুযুর্গানেদ্বীনের যে লেবাস-পোষাকে ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে সমস্ত মুসলিম উম্মাহ সেটাকে সম্মানের দৃষ্টিতে স্বশ্রদ্ধ মূল্যায়ন করে আসছেন।

    (৮) তাসাওউফ ও পীর-আউলিয়া সম্পর্কে মাওলানা মওদূদীর ভ্রান্ত আকীদাঃ

    আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের দৃষ্টিতে নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত প্রভৃতি শরীআতের জাহিরী বিধি-বিধানের উপর আমল করা যেমন জরুরী, তদ্রূপ এখলাস, তাকওয়া, ছবর, শোকর ইত্যাদি কলবের গুণাবলী অর্জন করা এবং রিয়া, তাকাব্বুর, হাছাদ ইত্যাদি অন্তরের ব্যধি দূর করা তথা শরীয়াতের বাতিনী বিধানাবলীর উপর আমল করাও জরুরী ও ওয়াজিব। এই বাতিনী বিধানাবলীর উপর আমল করাকে বলা হয় ‘তাযকিয়া’ বা ‘আত্মশুদ্ধি’। আত্মশুদ্ধির এই সাধনাকে ‘আধ্যাত্মিক সাধনা’ও বলে। আর এই শাস্ত্রকে বলা হয় ‘তাসাউফ’। কুরআনে কারিমে এই তাসাউফকে রাসূলের মূল নবওয়াতি দায়িত্ব হিসেবে উল্লেখ করে আল্লাহ তা’লা এরশাদ করেন- “তিনি (অর্থাৎ রাসূল) মানুষকে শিক্ষা দিবেন কিতাব ও হিকমত এবং তাদেরকে তাযকিয়া বা আত্মশুদ্ধি করাবেন”। (সূরা বাকারা: ১২৯)

    বোখারি ও মুসলিম শরিফের প্রসিদ্ধ হাদিসে তাসাউফের বিষয়ে ইরশাদ হয়েছে- “জিব্রীল আ. আল্লাহর রাসূলকে জিজ্ঞেস করলেন- ইহছান কী?  রাসূল সা. উত্তর দিলেন- ইহসান হল, তুমি এমনভাবে ইবাদত কর যেন তুমি আল্লাহকে দেখছো। যদি তা না হয় তাহলে মনে করো, তিনি তো তোমাকে দেখছেন”। (বোখারি ও মুসলিম)। উপরের আয়াত ও হাদীসে তাযকিয়া ও ইহসান-এর ব্যাখ্যার আলোকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত তাসাউফকে জরুরী মনে করেন। তাদের মতে কিছু ভন্ড ও বেদআদিতী ছাড়া চিশতিয়া, কাদেরিয়া, নকশবন্দিয়া ও সোহরাওয়ার্দিয়া ইত্যাদি তাসাউফের এই সিলসিলা সমূহ হক্ব এবং এসব সিলসিলার পীর-মুরিদী দ্বারা দ্বীন ও মুসলিম উম্মাহর প্রভূত খেদমত সাধিত হয়েছে এবং হচ্ছে।

    কিন্তু মাওলানা মওদূদী সাহেবের মতে তাসাউফের প্রচলিত পীর-মুরিদী তরীকা এক অত্যন্ত ক্ষতিকর বিষয় এবং এ থেকে বেঁচে থাকা জরুরী। তিনি এ ব্যপারে মুজাদ্দিদে আলফেসানি ও শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ. এর সমালোচনা পর্যন্ত করেছেন। এই জন্য দেখা যায় মাওলানা মওদূদী প্রতিষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামী ও শিবিরের লোকজন তাসাউফের সাথে কোন রূপ সংশ্লিষ্টতা রাখেনা, এবং রাখার প্রয়োজনও অনুভবও করে না। (তাজদীদ ও এহয়ায়ে দ্বীন, অনুবাদ- ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন)

    উপরোক্ত আকীদাসমূহ ছাড়াও মাওলানা মওদুদী সাহেবের আরো অনেক ভ্রান্ত আকীদা রয়েছে। এখানে শুধু নমুনা হিসেবে কিছু মৌলিক ভ্রান্ত আকীদার কথা সংক্ষেপে উল্লেখ করা হল। এর চেয়ে বেশি জানার প্রয়োজন হলে  কিছু বইয়ের তালিকা দেয়া হল, সময় সুযোগ করে পড়ে নেয়ার অনুরোধ রইল।

    # মাওলানা মওদুদী সাহেব ও মওদূদীবাদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন:

    ১. ইতিহাসের কাঠগড়ায় হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) -জাস্টিস আল্লামা তাকী উসমানী

    ২. মাওলানা মওদূদীর সাথে আমার সাহচার্যের ইতিবৃত্ত – মাওলানা মনজুর নোমানী (রহঃ)

    ৩. মওদূদী সাহেব ও ইসলাম-মুফতি রশীদ আহমাদ লুধীয়ানভী (রঃ) (দারুল উলুম লাইব্রেরী, বাংলাবাজার)

    ৪. মওদূদীর চিন্তাধারা ও মওদূদী মতবাদ-ইজহারে হক ফাউন্ডেশান (দারুল উলুম লাইব্রেরী,বাংলাবাজার)

    ৫. ফিতনায়ে মওদুদীয়াত – মাওলানা যাকারিয়া (রহ.)

    ৬. ভুল সংশোধন -মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী (রহ.)

    ৭. সতর্কবাণী -মাওলানা মোহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)

    ৮. ইসলামী আকীদা ও ভ্রান্ত মতবাদ -মাওলানা মুহাম্মদ হেমায়েত উদ্দীন।

    ৯. হক্ব বাতিলের চিরন্তন দ্বন্দ্ব -আল্লামা আহমাদ শফী, হাটহাজারী।

    ১০. ঈমান ও আক্বীদা -ইসলামিক রিসার্স সেন্টার, বসুন্ধরা।

    ১১. ফতোয়ায়ে দারুল উলূম (আংশিক)

    ১২. বিদেশী ও স্বদেশী ফেরাকে বাতেলাহ  (আল-কাউসার প্রকাশনী, বাংলাবাজার, ঢাকা)

    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Telegram Copy Link
    ইজহারে হক
    • Website

    এজাতীয় আরো

    ইসলাম

    জামায়াত কোনো ইসলামী দল নয়, বাতেল মতবাদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়: পীর সাহেব মধুপুর

    নভেম্বর ৯, ২০২৫
    মওদুদী ফিতনা জানতে

    সাহাবী-বিদ্বেষী জামায়াত: তাদের ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ: হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

    নভেম্বর ৭, ২০২৫
    মওদুদী ফিতনা জানতে

    আল্লাহর অঙ্গীকার অটুট, কুরআনের রূহ অম্লান — মওদুদী মতবাদের বিভ্রান্তি বিশ্লেষণ

    নভেম্বর ৩, ২০২৫
    প্রবন্ধ

    জামায়াতে ইসলামী, মওদূদীবাদ ও আকীদাগত স্বচ্ছতার অপরিহার্যতা

    অক্টোবর ৮, ২০২৫
    ইসলাম

    📚 শিক্ষার সঙ্গে বাণিজ্য-এক আকর্ষণীয় কিন্তু বিভ্রান্তিকর স্লোগান আলেমদের দায়িত্ব ও বাস্তবতা

    অক্টোবর ৬, ২০২৫
    প্রবন্ধ

    “পূজায় শুভেচ্ছা: ইসলামের দৃষ্টিতে সীমারেখা ও সদাচরণ”

    সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    ইসলামি ঐক্য ভৌগোলিক সীমায় বাঁধা নয়”—মাওলানা ফজলুর রহমানের ভাষণ ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে

    নভেম্বর ১৩, ২০২৫

    মাওলানা ফজলুর রহমানের সফর: দুই দেশের ধর্মীয় সম্পর্ক জোরদারে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা

    নভেম্বর ১০, ২০২৫

    ধর্মবিরোধী গান? মাওলানা মাহমুদ মাদানীর সতর্কবার্তা

    নভেম্বর ৯, ২০২৫
    প্রিয়
    • ইসলামি ঐক্য ভৌগোলিক সীমায় বাঁধা নয়”—মাওলানা ফজলুর রহমানের ভাষণ ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে
    • মাওলানা ফজলুর রহমানের সফর: দুই দেশের ধর্মীয় সম্পর্ক জোরদারে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা
    • ধর্মবিরোধী গান? মাওলানা মাহমুদ মাদানীর সতর্কবার্তা
    • জামায়াত কোনো ইসলামী দল নয়, বাতেল মতবাদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়: পীর সাহেব মধুপুর
    • সাহাবী-বিদ্বেষী জামায়াত: তাদের ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ: হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী
    Advertisement

    সম্পাদক: আবু তালহা রায়হান 

    যোগাযোগ
    রংমহল টাওয়ার, বন্দর বাজার, সিলেট, বাংলাদেশ
    নিউজরুম : ০১৩২৪-৭৪২৩০২
    Email : izharehaq24@gmail.com

    এইমাত্র পাওয়া

    ইসলামি ঐক্য ভৌগোলিক সীমায় বাঁধা নয়”—মাওলানা ফজলুর রহমানের ভাষণ ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে

    নভেম্বর ১৩, ২০২৫
    © ২০২৫ Izharehaq.com. Designed by MD Maruf Zakir.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.