Close Menu

    ইসলামি ঐক্য ভৌগোলিক সীমায় বাঁধা নয়”—মাওলানা ফজলুর রহমানের ভাষণ ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে

    নভেম্বর ১৩, ২০২৫

    মাওলানা ফজলুর রহমানের সফর: দুই দেশের ধর্মীয় সম্পর্ক জোরদারে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা

    নভেম্বর ১০, ২০২৫

    ধর্মবিরোধী গান? মাওলানা মাহমুদ মাদানীর সতর্কবার্তা

    নভেম্বর ৯, ২০২৫
    Facebook X (Twitter) Instagram
    ইজহারে হক: হকের কথা বলে
    • হোম
    • প্রবন্ধ
      1. প্রকৃত আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’ত পরিচিতি
      2. মওদুদী মতবাদ
      3. মওদুদী ফিতনা জানতে
      4. কুরআন ও হাদীসের আলোকে মওদূদী মতবাদ
      5. শরীয়তের কাঠগড়ায় মওদুদী জামাতের মতাদর্শ
      6. মওদূদী মতবাদ- এক আয়নায় তিন চেহারা
      7. ইসলাম ও মওদুদীবাদের সংঘাত
      8. ইসলাম ও রাজনীতি
      9. শিয়া মতাদর্শ
      10. কাদিয়ানী মতবাদ
      11. ফিতনায়ে ইনকারে হাদীস
      12. বাতিল যুগে যুগে
      13. View All

      আহলে সুন্নতের ফিক্বাহ শাস্ত্রের ইমাম: ইসলামী আমলের ক্ষেত্রে বিদয়াতীদের চক্রান্ত

      মে ২৯, ২০২৪

      আহলে সুন্নতের আক্বীদামতে মহানবীর মর্যাদা: অতি ভক্তি কিসের লক্ষণ

      মে ২৮, ২০২৪

      রেজভীদের চক্রান্ত হুবহু ইবনে সাবার চক্রান্তের মত: রাসূলকে আলিমুল গাইব বলা সাবায়ী চক্রান্ত:

      মে ২৮, ২০২৪

      আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’ত সুবিন্যস্ত হওয়ার ইতিহাস

      মে ২৮, ২০২৪

      জামায়াত কোনো ইসলামী দল নয়, বাতেল মতবাদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়: পীর সাহেব মধুপুর

      নভেম্বর ৯, ২০২৫

      সাহাবী-বিদ্বেষী জামায়াত: তাদের ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ: হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

      নভেম্বর ৭, ২০২৫

      আল্লাহর অঙ্গীকার অটুট, কুরআনের রূহ অম্লান — মওদুদী মতবাদের বিভ্রান্তি বিশ্লেষণ

      নভেম্বর ৩, ২০২৫

      মওদুদীর ভ্রান্ত আকীদাসমূহ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দৃষ্টিকোণ

      নভেম্বর ২, ২০২৫

      জামায়াত কোনো ইসলামী দল নয়, বাতেল মতবাদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়: পীর সাহেব মধুপুর

      নভেম্বর ৯, ২০২৫

      সাহাবী-বিদ্বেষী জামায়াত: তাদের ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ: হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

      নভেম্বর ৭, ২০২৫

      আল্লাহর অঙ্গীকার অটুট, কুরআনের রূহ অম্লান — মওদুদী মতবাদের বিভ্রান্তি বিশ্লেষণ

      নভেম্বর ৩, ২০২৫

      মওদুদীর ভ্রান্ত আকীদাসমূহ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দৃষ্টিকোণ

      নভেম্বর ২, ২০২৫

      মওদূদী সাহেব যেমন সাহাবায়ে কিরামকে সত্যের মাপকাঠি মানতে নারাজ তেমনি আম্বিয়ায়ে কিরাম, সম্পূর্ণ নিষ্পাপ বলতেও নারাজ

      সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩

      দ্বীন সম্পর্কে মওদূদী সাহেবের কয়েকটি বক্তব্য

      সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩

      মওদূদী সাহেবের ব্যাপারে কতিপয় প্রশ্নের সমাধান

      সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩

      উসূলে হাদীস সম্পর্কে মওদূদীর বক্তব্য: “আদি যুগের আবোল-তাবোল প্রলাপ কে শুনে ?”

      সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩

      সুন্নাত সম্পর্কে মওদূদীর বক্তব্য: “সুন্নাতের অনুসরণ করা বিদয়াত ও কুসংস্কার”

      সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩

      আম্বিয়ায়ে কিরাম সম্পর্কে মওদূদীর বক্তব্য: “নবীগণ নিষ্পাপ নন বরং খবীছ নফ্স দ্বারা আক্রান্ত”

      সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩

      শরীয়তের কাঠগড়ায় মওদূদী জামায়াতের মতাদর্শ

      সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩

      মওদূদীবাদের আয়নায় কাদিয়ানী চেহারা

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      মওদূদীবাদের আয়নায় মু’তাজিলী হওয়ার চেহারা

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      কুরআন-হাদীসের বিশ্বস্ত মাধ্যম সাহাবায়ে কিরামের উপর থেকে ভক্তি নির্ভরতা বিলুপ্তির ভয়ানক ষড়যন্ত্র।

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      মওদূদীবাদের দর্পণে শী’আ মতবাদের ছবি: মওদূদীবাদের আয়নায় শীআদের প্রতিচ্ছবি।

      অক্টোবর ৩, ২০২৩

      নবুওয়াত ও রিসালত: মওদুদীবাদ

      মে ২৫, ২০২৪

      ইবাদত: মওদুদীবাদ

      মে ২৫, ২০২৪

      কুরআন মাজীদ ও দ্বীনের সংরক্ষণ: কুরআন সংরক্ষণের অর্থ: কুরআন সংরক্ষণে খোদায়ী ব্যবস্থাপনা: মওদুদীবাদ

      মে ২৪, ২০২৪

      দ্বীন কী? দ্বীনে নূহ: দ্বীনে ইব্রাহীম: দ্বীনে ইসমাঈল: দ্বীনে ইউসুফ: দ্বীনে মূসা: দ্বীনে ঈসা: মওদূদীবাদ

      মে ২৩, ২০২৪

      জমিয়তের সমাবেশের দিন উত্তরায় সম্মেলন ডাকলো জামায়াত

      জুলাই ১০, ২০২৫

      ইসলাম ও রাজনীতি: রাজনীতির সংজ্ঞা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বিষয়বস্তু

      অক্টোবর ৮, ২০২৩

      শিয়া মতাদর্শ

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      কাদিয়ানী মতবাদ

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      পারভেযী মতবাদ বা ফিতনায়ে ইন্‌কারে হাদীস

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      মওদুদী ফিতনা

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      পারভেযী মতবাদ বা ফিতনায়ে ইন্‌কারে হাদীস

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      কাদিয়ানী মতবাদ

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      শিয়া মতাদর্শ

      সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

      মওদুদীর ভ্রান্ত আকীদাসমূহ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দৃষ্টিকোণ

      নভেম্বর ২, ২০২৫

      জামায়াতে ইসলামী, মওদূদীবাদ ও আকীদাগত স্বচ্ছতার অপরিহার্যতা

      অক্টোবর ৮, ২০২৫

      📚 শিক্ষার সঙ্গে বাণিজ্য-এক আকর্ষণীয় কিন্তু বিভ্রান্তিকর স্লোগান আলেমদের দায়িত্ব ও বাস্তবতা

      অক্টোবর ৬, ২০২৫

      “পূজায় শুভেচ্ছা: ইসলামের দৃষ্টিতে সীমারেখা ও সদাচরণ”

      সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫
    • জাতীয়
    • মুসলিম বিশ্ব
    • সারাদেশ
    • রাজনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • মতামত
    • ইসলাম
    • প্রতিবেদন
      • দাওয়াহ
      • প্রবাস
      • কল্যাণ ট্রাস্ট
      • বয়ান
    ইজহারে হক: হকের কথা বলে
    এক সাথে সব

    শিয়া মতাদর্শ

    ইজহারে হকBy ইজহারে হকসেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
    Share Facebook Twitter Pinterest Copy Link LinkedIn Tumblr Email VKontakte Telegram
    Share
    Facebook Twitter Pinterest Email Copy Link

    শিয়া মতাদর্শ

    মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং হযরত আবু বকর ও উমর (রা.)-এর কল্যাণময় যুগে মুসলিম উম্মাহর মাঝে ইসলামী আকীদা ও ইসলামের মৌলিক বিষয়ে তেমন জটিল কোন মতপার্থক্য ছিল না— এ কথা সর্বজন স্বীকৃত। তবে তৃতীয় খলীফা হযরত উসমান গনি (রা.)-এর খেলাফতকালের শেষ যুগে আকীদার ক্ষেত্রে এক নতুন মতাদর্শের উদ্ভব হয়। এখান থেকেই শুরু হয় শীয়া মাযহাবের নবযাত্রা। প্রথম পর্যায়ের বুনিয়াদ ছিল খুবই সাদাসিধে এবং অত্যন্ত সরল প্রকৃতির। তাদের বুনিয়াদী কথাটি ছিল এই যে, হযরত আলী হলেন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চাচাত ভাই। বাল্যকাল হতেই তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও বিবি খাদিজা (রা.)-এর বিশেষ স্নেহের পাত্র ছিলেন। হিজরতের সময় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর আমানত হকদারদের পৌছিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আলী (রা.)- এর হাতেই অর্পণ করেন। মদীনাতেও তাঁকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গৃহ রক্ষার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। তাঁর সঙ্গে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রিয়তম কন্যা হযরত ফাতিমা (রা.)- এর শাদী হয়। তাঁর বিদ্যাবুদ্ধি, জ্ঞান-গরিমা, বীরত্ব, বিশ্বস্ততা এবং ইসলাম ও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি তাঁর খেদমতের স্বীকৃতিস্বরূপ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই তাঁকে মুসলিম ফৌজের নিশান বরদার নিযুক্ত করেন। এমনকি তিনি আলী (রা.)কে ‘আমার জন্য মুসার ভাই-এর মত’ আখ্যায় ভূষিত করেন। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তিরোধানের পর তিনিই তাঁর খলীফা এবং স্থলাভিষিক্ত হওয়ার একমাত্র যোগ্য ব্যক্তি। এরা নিজেদেরকে শীয়ানে আলী বা আলীর সমর্থক বলে পরিচয় দিত। কথাগুলো বাহ্যিক দৃষ্টিতে আকর্ষণীয় হলেও মূলত এ ছিল ইসলামী হিদায়াত এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শিক্ষার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। কারণ, ইসলাম গোত্রীয় পার্থক্য ও বংশীয় গর্বের সকল সৌধমালাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করত ইজ্জত সম্মান ও নেতৃত্বের মানদণ্ড তাকওয়ার উপর অর্পণ করেছে। কুরআন পাকে ইরশাদ হয়েছে- ‘তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বাধিক সম্মানিত ঐ ব্যক্তি, যে সর্বাপেক্ষা মুত্তাকী।’ [সূরা হুজুরাত

    এ তাকওয়া ও পরহেযগারীর ক্ষেত্রে সাহাবীদের মাঝে হযরত আবু বকরই ছিলেন সবচেয়ে অগ্রগামী। হযরত আলীসহ সকল সাহাবীই এই বিষয়ে একমত ছিলেন। তাই তিনিই ছিলেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার সর্বাধিক উপযুক্ত ব্যক্তি। এতদসত্ত্বেও হীনস্বার্থ চরিতার্থের চরম উন্মাদনায় মাতাল হয়ে শীয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা নিজেদের ভ্রান্ত কথাগুলো লোক সমাজে ছড়াতে থাকে অত্যন্ত তড়িৎগতিতে। মূলত এ ভ্রান্ত আকীদার পেছনে ইন্ধন যোগাচ্ছিল ইহুদী সন্তান মুনাফিক আবদুল্লাহ ইবনে সাবা ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা। বস্তুত ইহুদী জাতি পূর্ব থেকেই ছিল ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী। ইসলামের জয়যাত্র দেখে তাদের মনে প্রতিহিংসার আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে, খাক হয়ে যায় তাদের মন। ইসলামের অগ্রযাত্রা যে করেই হোক রহিত করতে হবে, এই ছিল তাদের একমাত্র ধ্যান।

    তারা মুসলিম সমাজে অনৈক্যের বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে আলী প্রেমের আবরণে অবিরাম গতিতে নিজেদের ভ্রান্ত মতাদর্শ প্রচার করতে থাকে। তাদের এ ষড়যন্ত্র ও কারসাজির কারণেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কর্তৃক আক্রান্ত হয়ে শাহাদাতবরণ করেন তৃতীয় খলীফা হযরত উসমান গনি (রা.) এবং পরবর্তীকালে সংঘটিত হয় জঙ্গে জামাল ও জঙ্গে সিফিন-এর মত আত্মঘাতী দুই দুইটি লড়াই। অবশ্য হযরত আলী (রা.) তাদের এ কর্মকাণ্ড অত্যন্ত ঘৃণার চোখে দেখেন এবং আবদুল্লাহ ইবনে সাবাকে কুফা থেকে মদীনায় নির্বাসিত করেন। ফলে শীয়া মতবাদ তাকিয়্যার আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হয়।

    পরবর্তীকালে তারা বহু দল ও উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। হযরত বড় পীর আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) গুনিয়্যাতুত্তালিবীন এবং শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহ.) তুহফায়ে ইছনা আশারিয়্যায় এদের বিস্ত ারিত বিবরণ দিয়েছেন। এদের প্রধান দলটিকে শীয়া ইমামিয়্যাহ বা শীয়া ইছনা আশারিয়্যাহ্ বলা হয়। সাধারণত এ ফেরকাই বর্তমানে শীয়া নামে আখ্যায়িত এবং এরাই ইরানের বর্তমান বিপ্লবের নায়ক ও বাহক। নিম্নে তাদের কয়েকটি মূলনীতি তুলে ধরা হল :
    ১. আকীদায়ে ইমামত : শীয়া মাযহাবের মূল ভিত্তি আকীদায়ে ইমামতের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাদের ধারণা, যেমনিভাবে আম্বিয়ায়ে কেরাম আল্লাহর পক্ষ হতে প্রেরিত, তেমনিভাবে ইমামগণও আল্লাহর তরফ থেকে প্রেরিত। নবীগণের মত তারাও সর্বপ্রকার ভুল-ভ্রান্তি থেকে পবিত্র এবং মাসুম। এ সকল ইমামদের প্রতি ওহী আসে আল্লাহর পক্ষ হতে নবীগণের মতই। জীবনের সর্বস্তরে তাদের আনুগত্য ফরয। শারঈ বিধানকে তারাই কার্যকরী করেন। এমনকি তারা কুরআনে হাকীমের যে কোন বিধানকে প্রয়োজনে রহিত এবং মওকুফ করারও অধিকার রাখেন। আল হুকুমাতুল ইসলামিয়্যাহ গ্রন্থে খোমেনী বলেন- আমাদের ইমামদের জন্য এমন বৈশিষ্ট্যময় স্থান রয়েছে যে স্থানে কোন নৈকট্য লাভকারী ফিরিশতা এবং প্রেরিত কোন নবী পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না।

    ২. সাহাবা বিদ্বেষ : শীয়াদের দ্বিতীয় মূলনীতি হল, সাহাবায়ে কেরামের প্রতি বিদ্বেষ ও শত্রুতা পোষণ করা। তাদের ধারণা মতে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তিকালের পর আবু যর, মিকদাদ এবং হযরত সালমান ফারসী (রা.) ব্যতীত হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.)-এর হাতে বায়আত গ্রহণকারী সকল সাহাবীই ইসলাম ত্যাগ করে কাফির বা মুরতাদ হয়ে যান। অধিকন্তু হযরত আলী (রা.)ও যেহেতু প্রথম খলীফার হাতে বায়আত গ্রহণ করেছিলেন, তাই তিনিও অনেক শীয়াদের এহেন অসন্তোষ থেকে রেহাই পাননি।

    ৩. তাীফে কুরআন : শীয়াদের তৃতীয় আকীদাটি উপরোল্লিখিত আকীদা থেকে অধিক জঘন্য ও অত্যন্ত মারাত্মক। এ হল তাহ্রীফে কুরআন বা কুরআন বিকৃতির আকীদা। শীয়াদের ধারণা, বর্তমান কুরআন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর অবতীর্ণ কুরআন নয়। এ তো হল হযরত উসমানের সাজানো কুরআন। এতে বহু যোগ-বিয়োগ হয়েছে। বাদ দেয়া হয়েছে মূল কুরআন থেকে ‘সূরাতুল বেলায়েত’ নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা। তাই বর্তমান কুরআন অবিকৃত নয়। এ কথাটিকে প্রমাণ করে ১২৯২ হিজরীতে মির্জা হুসাইন বিন মুহাম্মদ তাকী নূরী তাবরাসী নামক এক শীয়া আলিম ‘ফাসলুল খিতাব ফী ইছবাতে তাহ্রীফে কিতাবে রাব্বিল আবরার’ নামক একখানা গ্রন্থ রচনা করেন। এ গ্রন্থে তিনি বিভিন্ন শীয়া আলিম গবেষকদের শত শত উদ্ধৃতি উল্লেখ করে এ কথা প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে, পবিত্র কুরআন শরীফে বহু রদবদল এবং অসংখ্য পরিবর্তন ও পরিবর্ধন সাধিত হয়েছে। এ কুরআন আসল কুরআন নয়। আসল কুরআন তো দ্বাদশ ইমামের সাথে কোন এক অজানা গুহায় প্রোথিত আছে।

    ৪. শীয়াদের কালেমা : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর আদর্শ থেকে মুসলমানদের বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে শীয়াগণ তাদের জন্মলগ্ন থেকেই অত্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। দাড় করায় তারা ইসলামের মোকাবিলায় এক নতুন ধর্ম। প্রচার করতে থাকে তারা নতুন ধর্মের নতুন কালেমা; নতুন উদ্যমে এক অভিনব কৌশলে। জুড়ে দেয় তারা সর্বজন স্বীকৃত কালেমার সঙ্গে আলী ওয়ালীউল্লাহ ওয়াছিয়া রাসূলিল্লাহ এবং খলীফাতুহু বেলা ফাসলিন- আলী আল্লাহর বন্ধু রাসূলের অসী ও তাঁর অব্যবহিত পরবর্তী খলীফা শব্দগুলোকে ।

    এ ছাড়াও শীয়াদের আরো বহু ভ্রান্ত আকীদা এবং স্বতন্ত্র মতামত রয়েছে। এ ক্ষুদ্র পরিসরে এসবের বিস্তারিত আলোচনা সম্ভব নয়। তবে উপরোল্লিখিত চারটি আকীদার উপর চিন্তা করলেই আমরা পরিষ্কারভাবে উপলব্ধি করতে পারি এবং সুস্পষ্টভাবে জানতে পারি যে, ইসলামের সাথে শীয়া মাযহাবের কত পার্থক্য বিদ্যমান।

    পর্যালোচনা

    শীয়াদের কথাগুলো ইহুদীদের অনুপ্রাণিত লোকদের নিকট সমাদৃত হলেও ইলমে ওহীতে ব্যূৎপত্তিসম্পন্ন হযরত সাহাবায়ে কেরাম এবং পরবর্তীকালের বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামের নিকট তা কখনো সমাদৃত হয়নি। বরং তাঁরা সব সময়ই এ ফিতনাকে কঠোর হস্তে দমন করেছেন এবং তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে সমাজের সামনে তুলে ধরেছেন। শীয়াদের গোমরাহী এবং ভ্রান্তির কতগুলো কারণ নিম্নে দেয়া হল।

    ১. শীয়া সম্প্রদায়ের ইমামত সম্পর্কিত মতবাদটি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সর্বশেষ নবী হওয়ার বিরুদ্ধে চরম বিদ্রোহ এবং ইসলামের চিরস্থায়ী ধর্ম হওয়ার বিরুদ্ধে একটি প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র ব্যতীত আর কিছুই নয়। এ কারণেই প্রথম যুগ থেকে আরম্ভ করে মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী পর্যন্ত যে কোন ব্যক্তিই নব্যুওয়তের মিথ্যা দাবীদার হয়েছে তারা সকলেই নিজ দাবীর সপক্ষে শীয়াদের ইমামত মতবাদ হতে যুক্তি প্রমাণ সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছে। মূলত ইসলামের চির দুশমন ইহুদী সম্প্রদায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খতমে নবুওয়তের উপর কুঠারাঘাত করার জন্য এবং মুসলিম উম্মাহর মধ্যে মিথ্যা নবুওয়াতের দাবীদারদের জন্য চোরাগলি আবিষ্কার করার লক্ষ্যেই এ ভ্রান্ত আকীদার উদ্ভব ঘটিয়েছে- যা কোন ঈমানদার ব্যক্তির জন্য কস্মিনকালেও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না ।

    ২. শীয়াদের ‘সাহাবা বিদ্বেষ’ মূলনীতি একেবারেই ভ্রান্ত, যা কোন আলোচনার অপেক্ষা রাখে না। কারণ, এ আকীদার অন্তরালে তারা ইসলামের চিরন্তনতা ও বিশ্বজনীনতাকেই অস্বীকার করতে চাচ্ছেন অত্যন্ত কৌশলের সাথে। কেননা, তাদের ধারণা মতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তিরোধানের পর ইসলাম যেহেতু একদিনের জন্যও টিকে থাকতে পারেনি তাই এ ইসলাম কখনো বিশ্বজনীন এবং চিরন্তন ধর্মাদর্শ হতে পারে না। অধিকন্তু শীয়াদের এ ভ্রান্ত আকীদার প্রেক্ষিতে এ কথাও প্রতিভাত হচ্ছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন একজন অসফল এবং ব্যর্থ মুআল্লিম (নাউযুবিল্লাহ)। কারণ, তিনি যদি সফল এবং সার্থক মুআল্লিম হতেন তাহলে তাঁর সঙ্গপ্রাপ্ত এ সমস্ত লোকেরা কখনো নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ইরতিদাদের আশ্রয় গ্রহণ করতো না ।

    ৩. শীয়াদের তাহ্রীফে কুরআন আকীদাটিও অত্যন্ত ঈমান বিধ্বংসী আকীদা। কারণ, আজ পর্যন্ত কোন কট্টর কাফিরও কথাটি বলতে সাহস পায়নি। শীয়াগণ মুসলিম সম্প্রদায়ের নিকট সে কথাটি প্রচার করে নিজেদের বাচালতা এবং মূর্খতারই পরিচয় দিয়েছেন। সর্বোপরি এ আকীদা কুরআন হিফাযতের ব্যাপারে ইলাহী প্রতিশ্রুতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য এক চ্যালেঞ্জও বটে। এ ধৃষ্ঠতার অভিশাপে আজ পর্যন্ত শীয়া সম্প্রদায়ের কেউ সম্পূর্ণ কুরআনের হাফেয হতে পারছে না। অথচ সুন্নী মুসলমানদের মধ্যে শত সহস্র নয় বরং লক্ষ লক্ষ হাফেযে কুরআন এ পৃথিবীতে বেঁচে আছেন।

    ৪. শীয়াদের প্রবর্তিত কালেমা অভিশপ্ত ইহুদী সম্প্রদায়ের জন্য অবশ্যই প্রযোজ্য। তবে সুন্নী মুসলমানদের জন্য এ কালেমা কোনক্রমেই প্রযোজ্য নয়। কারণ, এ কালেমা ঈমান বিধ্বংসী কালেমা। এ কালেমার পাঠক অনুসারীও হলো মুশরিক ফির রিসালাত, এরা মুসলমান নয়। সুতরাং ইহুদীবাদে অনুপ্রাণিত শীয়া সম্প্রদায়ের এ পায়তারা এবং হীন চক্রান্ত থেকে আমাদেরকে বেঁচে থাকা এবং কঠোর হস্তে তাদেরকে দমন করা আমাদের জন্য একান্তভাবে অপরিহার্য।

    শীয়া সম্প্রদায় সম্পর্কে মনীষীদের মতামত

    গুনিয়্যাতুত্তালিবীন নামক গ্রন্থে বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) বলেন- শীয়া সম্প্রদায়ের কয়েকটি নাম রয়েছে।

    ১. শীয়া : এ সমস্ত লোকেরা যেহেতু হযরত আলী (রা.)-এর অনুসরণ করে এবং তাঁকে অন্যান্য খলীফাদের উপর প্রাধান্য দেয় তাই তাদেরকে শীয়া বলা হয় ।

    ২. রাফিযী : যে সমস্ত লোক হযরত আবু বকর, হযরত উমর (রা.)-এর

    খেলাফতকে স্বীকার করে না এবং অধিকাংশ সাহাবীদেরকে মান্য করে না।

    তাদেরকে রাফিযী বলা হয়। মূলত শীয়াদের ধর্ম ইহুদী ধর্মের সাথে বিশেষ সাদৃশ্যপূর্ণ ।

    ইমাম শাবী বলেন, নবী বংশের সাথে শীয়াদের মহব্বত ইহুদীদের মহব্বতের মতই। ইহুদীরা দাবী করে যে, হযরত দাউদ (আ.)-এর বংশধর ব্যতীত অন্য কেউ ইমাম হওয়ার যোগ্য নয়। ইহুদীরা যেমনিভাবে মুসলমানদেরকে হত্যা করা বৈধ মনে করে তেমনিভাবে শীয়াগণও অন্য মুসলমানদেরকে হত্যা করা হালাল মনে করে। ইহুদীরা যেমন তাওরাতের ভেতর পরিবর্তন পরিবর্ধন করেছে, শীয়ারাও কুরআন শরীফের সাথে অনুরূপ আচরণের প্রয়াস পেয়েছে। তাদের বিশ্বাস বর্তমান কুরআন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর অবতীর্ণ কুরআন নয়। ইহুদীরা হযরত জিবরাঈল (আ.)-এর সাথে বৈরীভাব পোষণ করে, শীয়া সম্প্রদায়ের মধ্যেও কোন কোন দল হযরত জিবরাঈল (আ.)-এর সাথে অনুরূপ বৈরীভাব পোষণ করে। কারণ, তাদের ধারণা, হযরত জিবরাঈল (আ.) আল্লাহর ওহী যথাস্থানে পৌঁছাতে ভুল করেছেন, নাউযুবিল্লাহ। তিনি ভুলবশত হযরত আলী (রা.)-এর নিকট ওহী না পৌছিয়ে ওহী পৌছিয়েছেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট। মোট কথা, তারা হল মিথ্যাবাদী। মিথ্যা বলাই তাদের অভ্যাস। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন। [শুনিয়্যাতুত্তালিবীন)

    শায়খুল ইসলাম আল্লামা ইবন তায়মিয়ার বক্তব্য

    শীয়া মতবাদের প্রথম ও প্রধান প্রবর্তক হলো একজন ইহুদী মুনাফিক ব্যক্তি। শীয়াদের মৌলিক বিশ্বাস হল, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলী (রা.)-এর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার ব্যাপারে সুস্পষ্ট বক্তব্য রেখে গেছেন। এতে আর সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। হযরত আলী (রা.)ই হলেন ইমামে মাসুম। যে ব্যক্তি তার সঙ্গে বিরোধিতা করে সে হল কাফির। তাদের ধারণা মতে, মুহাজির এবং আনসার সাহাবীগণ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সিদ্ধান্তকে গোপন রেখে ইমামে মাসুম হযরত আলীর সাথে কুফরী করেছিল এবং তারা স্বীয় স্বার্থকে চরিতার্থ করার জন্য ধর্ম ও শরীয়তকে পরিবর্তন করেছেন। এমন কি অবশেষে চরম বাড়াবাড়ি এবং জুলুমের আশ্রয়ও গ্রহণ করেছেন। পাঁচ দশজন ব্যতীত সকলেই তারা কাফির। শীয়াগণ নিজেদের দল ব্যতীত তাদের বিরুদ্ধাচারী সকল ব্যক্তিকেই কাফির বলে মনে করে। যে সমস্ত ইসলামী দেশে তাদের আকীদার প্রাধান্য নেই সে সমস্ত দেশকে তারা কাফির রাষ্ট্র বা দারুল কুফর বলে মনে করে, যা মুশরিক এবং খৃষ্টান রাষ্ট্র থেকেও অধিক নিকৃষ্ট। এ কারণেই তারা মুসলমানদের পরিবর্তে ইহুদী, খৃষ্টান এবং মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখে এবং তাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

    পবিত্র কুরআন এবং সুন্নাহ থেকে বিমুখ হয়ে যে সব দল বিদআতের রাস্তা অবলম্বন করেছে নিঃসন্দেহে শীয়া সম্প্রদায় তাদের মাঝে সর্বাধিক গোমরাহ এবং পথভ্রষ্ট। এ জন্য সর্বসাধারণের নিকট এ জামাতই সুন্নাহ বিরোধী জামাত হিসাবে পরিচিত। তাই সাধারণ লোক সুন্নীদের বিপরীতে শীয়া ছাড়া অন্য কিছুই বুঝে না । যখন কেউ বলে যে, আমি একজন সুন্নী তখন তার উদ্দেশ্য এই থাকে যে, আমি শীয়া নই। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই যে, শীয়া সম্প্রদায় খাওয়ারেজ সম্প্রদায় হতেও নিকৃষ্টতর। খারিজীরা আর কিছু না হোক সত্যবাদী, কিন্তু শীয়ারা মিথ্যা বলার ব্যাপারে সুপ্রসিদ্ধ। খারিজীরা ইসলামে প্রবেশ করে পরে বের হয়ে গিয়েছে, আর শীয়ারা দূর থেকেই ইসলামকে ছুঁড়ে মেরেছে। [ফতুয়ায়ে ইবনে তায়মিয়া]

    হযরত মুজাদ্দিদে আলফে সানীর বক্তব্য

    শীয়ারা হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীদেরকে গালি-গালাজ এবং অভিসম্পাত করাকে নিজেদের ধর্ম এবং ঈমানের অঙ্গ বলে সাব্যস্ত করেছে, যা আমানত ও দিয়ানতদারীর সম্পূর্ণ পরিপন্থী। যে সমস্ত বিদআতী দল নিজেদের বিদআতের কারণে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তন্মধ্যে খারিজী ও শীয়া সম্প্রদায়ই সর্বাধিক দূরে ছিটকে পড়েছে।

    শীয়া বা রাফিযীদের বিরাট দল রয়েছে। সকলেই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণকে কাফির এবং খোলাফায়ে রাশিদীনের প্রতি অভিসম্পাত করাকে ইবাদত বলে মনে করে। অবশ্য শীয়াদের এসব দল নিজেদের জন্য রাফিযী শব্দটি ব্যবহার করে না। কারণ, হাদীস শরীফে রাফিযীদের প্রতি তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সর্বপ্রকার কুফরী কার্যকলাপ বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও তাদের প্রতি কাফির শব্দ ব্যবহার করলে যেমন তারা ক্ষেপে যায় শীয়া রাফিযীদের অবস্থাও তাই। এ দিক থেকে রাফিযীদেরকে হিন্দুদের সাথেও তুলনা করা যায়।

    শীয়ারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বংশধরকেও নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি হিসাবেই বিবেচনা করে। তারা নবী বশংকে হযরত আবু বকর ও হযরত উমরের শত্রু বলে মনে করে। তাদের বক্তব্য, হযরত আলী ত্রিশ বছর পর্যন্ত তাকিয়্যা করত হযরত আবু বকর, উমর ও উসমান (রা.)-এর সাথে মুনাফিকী সম্পর্ক বজায় রেখেছেন এবং তাদের প্রতি অবৈধ সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন। শীয়াদের এ বক্তব্য একেবারে অমূলক এবং অবাস্ত ব। এ যেন হযরত আলী (রা.)-এর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিদ্রোহ। আল্লাহ পাক তাদেরকে সৎপথ প্রদর্শন করুন। (মাকতুবাতে ইমাম রব্বানী]

    শাহ আবদুল আযীয (রহ.)-এর বক্তব্য

    শীয়াদের ধোকা এবং প্রতারণার মধ্যে এ কথাও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, তারা বলে- আহলে সুন্নাতের অভিজাত ব্যক্তিবর্গ এবং তাদের ইমাম পবিত্র কুরআন শরীফের মাঝে বহু রদবদল করেছে, বাদ দিয়েছে তারা এমন অনেক সূরা এবং অনেক আয়াত, যার মাঝে নবী বংশের ফাযায়েল, শ্রেষ্ঠত্ব, তাদের ভালোবাসা, তাদের অনুসরণ এবং বিরোধিতার প্রতি চরম নিষেধাজ্ঞা বিদ্যমান ছিল। এমনকি এ আয়াত ও সূরাগুলোতে বিরুদ্ধাচরণকারীদের নাম তাদের প্রতি অভিসম্পাতের কথাও পরিষ্কারভাবে বর্ণিত ছিল। এ কারণেই এ সমস্ত কথাগুলো তাদের কাছে খুব অপছন্দ লাগে। মূলত নবী বংশের প্রতি ক্রোধ ও বিদ্বেষই তাদেরকে এ কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে। সূরা ‘আলাম নাশরাহ’ থেকে বিলুপ্ত আয়াত এবং কুরআন শরীফ থেকে বিলুপ্ত সূরায়ে বিলায়েতই আমাদের সামনে এ বিদ্বেষের চির সাক্ষর হয়ে আছে। তুহফায়ে ইছনা আশারিয়া

    আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকীদা ও বিশ্বাস

    হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামই হলেন সর্বশেষ নবী এবং সর্বশেষ রাসূল, তাঁর পর আর কোন নবী নেই। সমস্ত জিন ও মানুষ এবং সারা বিশ্ব জাহানের জন্য হল তাঁর নবুওয়াত। তাই এ উম্মাতের জন্য নয়া কোন নবী প্রেরণেরও প্রয়োজন নেই, ঠিক এমনিভাবে এখন কোন নিষ্পাপ ইমামের অভ্যুদয়েরও কোন দরকার নেই। যিনি নবীদের সে কাজ আঞ্জাম দিবেন যা তাদের পক্ষে পূর্ণতায় পৌছিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

    সাহাবীগণের প্রতি শ্রদ্ধা পোষণে ও তাদের প্রতি সন্তোষ প্রকাশে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত ঐক্যবদ্ধ। আমাদের আকীদা, আম্বিয়ায়ে কেরামের পর সাহাবীগণই হচ্ছেন সৃষ্টির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং মুমিনদের মধ্যে সর্বোত্তম। আশারা মুবাশশারা বেহেশতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দশজন সাহাবী সম্পর্কে বেহেশতি হওয়ার এবং কল্যাণের সাক্ষ্য দেই।

    নবী পরিবার এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আযওয়াজে মুতাহহারাতের মর্যাদা এবং সম্মানের আমরা স্বীকৃতি দান করি। তাদের প্রতি আমরা ভালবাসা পোষণ করি। ইসলামে তাঁদের মর্যাদা বহু ঊর্ধ্বে। – সাহাবীগণ মাসুম নন, কিন্তু আমরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত তাঁদের সকলের আদালত ও গুনাহে কবীরা থেকে মুক্ত থাকার এবং তাঁদের ক্ষমাপ্রাপ্ত হওয়ার কথা অকুণ্ঠচিত্তে স্বীকার করি। তাঁদের পরস্পরের ভেতর যে সমস্ত বিবাদ সংঘটিত হয়েছে, সে সম্পর্কে আমরা মন্তব্য করা থেকে বিরত এবং সতর্ক থাকার আকীদা পোষণ করি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তিরোধানের পর হযরত আবু বকর হচ্ছেন যোগ্য খলীফা। এরপর হচ্ছেন যথাক্রমে হযরত উমর, হযরত উসমান ও হযরত আলী (রা.)। খেলাফত আলা মিনহাজিন নবুওয়াত বা নববী আদর্শে প্রতিষ্ঠিত খেলাফত এখানেই শেষ হয়ে যায়। হযরত আবু বকর ও হযরত উমর যথাক্রমে এ উম্মতের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ। আমরা সাহাবীগণের কেবল সদালোচনা করতে পারি। তাঁরা আমাদের ধর্মীয় নেতা এবং পথপ্রদর্শক। তাঁদের সমালোচনা করা, তাঁদের দোষ বর্ণনা করা হারাম, তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন আমাদের জন্য ওয়াজিব। সহীহ হাদীসে আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- আমার সাহাবীদেরকে তোমরা মন্দ বলো না, তাঁদের সমালোচনা করো না, তোমাদের কেউ যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ সোনাও আল্লাহর পথে ব্যয় করে তথাপিও সে সাহাবীদের মধ্যে কারো এক মুদ্দ (প্রায় এক কিলো) বা অর্ধ মুদ্দের পরিমাণ দানের সমান হতে পারবে না ।

    আমরা বিশ্বাস করি, কুরআন শরীফ আল্লাহর কালাম। এর মর্ম ও শব্দ সবকিছু আল্লাহর তরফ থেকে অবতীর্ণ পরিপূর্ণ একটি কিতাব। আমাদের আকীদা- কুরআন শাশ্বত, চিরন্তন এবং অভিনব কুরআন মাখলুক নয় এবং একে অগ্র-পশ্চাৎ কোন দিক থেকেই বাতিল স্পর্শ করতে পারে না। এ কিতাব সকল প্রকার তাহরীফ, মানুষের পরিবর্তন পরিবর্ধন ও পরিমার্জন থেকে মুক্ত এবং সংরক্ষিত। এতে তাহরীফ হয়েছে বলে যদি কেউ বলে তবে সে ঈমানের গণ্ডিভুক্ত নয়। আল্লাহ তাআলা বলেছেন- নিশ্চয়ই আমি নাযিল করেছি এ যিকর (আল কুরআন) আর আমিই এর সংরক্ষক। [সূরা হিজর : আয়াত ৯)

    তিনি আরো বলেছেন— একে একত্রিত করা এবং তা পড়িয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমার। আমি যখন তা পড়ব (তুমি তখন শুনবে) পরে সেভাবেই তুমি পড়ো। অতঃপর এর ভাষ্যও আমার দায়িত্বে। [সূরা কিয়ামা : ১৭-১৯) মনের বিশ্বাস এবং ঈমান ও আকীদার বিশুদ্ধতার উপরই আল্লাহর উবুদিয়্যাত এবং দাসত্ব নির্ভরশীল। যদি কারো আকীদা ত্রুটি এবং ঈমানের মধ্যেই যদি বিচ্যুতি থাকে তাহলে তার কোন ইবাদতই কবুল হবে না। ঈমানের বিশুদ্ধতা ছাড়া আল্লাহর কাছে কোন আমলই শুদ্ধ বলে বিবেচিত হয় না। মূলত ঈমানের বিশুদ্ধতা তাওহিদ, রিসালাত ঈমান বিল গায়ব ওয়াবা’ছ বাদাল মাওত এবং আখিরাতের প্রতি বিশ্বাসী হওয়ার উপরই নির্ভরশীল। এ বিশ্বাস হতে হবে অত্যন্ত নিরঙ্কুশ এবং একেবারে নির্ভেজাল। আমাদের আকীদা, যেমনিভাবে আল্লাহর ওয়াহদানিয়্যাতের উপর ঈমান আনা ব্যতিরেকে কারো ঈমান গ্রহণযোগ্য নয়, অনুরূপভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রিসালাত ও নবুওয়াতের উপর ঈমান আনা ব্যতিরেকেও কারো ঈমান গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এর স্থলে ইত্যাদি বলা কোন মুসলমানের জন্য জায়েয নেই।

    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Telegram Copy Link
    ইজহারে হক
    • Website

    এজাতীয় আরো

    ইসলাম

    জামায়াত কোনো ইসলামী দল নয়, বাতেল মতবাদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়: পীর সাহেব মধুপুর

    নভেম্বর ৯, ২০২৫
    মওদুদী ফিতনা জানতে

    সাহাবী-বিদ্বেষী জামায়াত: তাদের ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ: হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

    নভেম্বর ৭, ২০২৫
    মওদুদী ফিতনা জানতে

    আল্লাহর অঙ্গীকার অটুট, কুরআনের রূহ অম্লান — মওদুদী মতবাদের বিভ্রান্তি বিশ্লেষণ

    নভেম্বর ৩, ২০২৫
    প্রবন্ধ

    মওদুদীর ভ্রান্ত আকীদাসমূহ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দৃষ্টিকোণ

    নভেম্বর ২, ২০২৫
    এক সাথে সব

    দোকানের কর্মচারী থেকে ভারতের শীর্ষ ধনীর শীর্ষে: এম এ ইউসুফ আলী ও গুজরাটের নতুন লুলু মল

    অক্টোবর ২৯, ২০২৫
    এক সাথে সব

    কানাইঘাটে সড়ক অবকাঠামো ধ্বংসের মুখে, সংস্কারের দাবিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া: হারুনুর রশিদ চতুলী

    অক্টোবর ১২, ২০২৫
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    ইসলামি ঐক্য ভৌগোলিক সীমায় বাঁধা নয়”—মাওলানা ফজলুর রহমানের ভাষণ ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে

    নভেম্বর ১৩, ২০২৫

    মাওলানা ফজলুর রহমানের সফর: দুই দেশের ধর্মীয় সম্পর্ক জোরদারে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা

    নভেম্বর ১০, ২০২৫

    ধর্মবিরোধী গান? মাওলানা মাহমুদ মাদানীর সতর্কবার্তা

    নভেম্বর ৯, ২০২৫
    প্রিয়
    • ইসলামি ঐক্য ভৌগোলিক সীমায় বাঁধা নয়”—মাওলানা ফজলুর রহমানের ভাষণ ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে
    • মাওলানা ফজলুর রহমানের সফর: দুই দেশের ধর্মীয় সম্পর্ক জোরদারে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা
    • ধর্মবিরোধী গান? মাওলানা মাহমুদ মাদানীর সতর্কবার্তা
    • জামায়াত কোনো ইসলামী দল নয়, বাতেল মতবাদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়: পীর সাহেব মধুপুর
    • সাহাবী-বিদ্বেষী জামায়াত: তাদের ঈমানই প্রশ্নবিদ্ধ: হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী
    Advertisement

    সম্পাদক: আবু তালহা রায়হান 

    যোগাযোগ
    রংমহল টাওয়ার, বন্দর বাজার, সিলেট, বাংলাদেশ
    নিউজরুম : ০১৩২৪-৭৪২৩০২
    Email : izharehaq24@gmail.com

    এইমাত্র পাওয়া

    ইসলামি ঐক্য ভৌগোলিক সীমায় বাঁধা নয়”—মাওলানা ফজলুর রহমানের ভাষণ ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে

    নভেম্বর ১৩, ২০২৫
    © ২০২৫ Izharehaq.com. Designed by MD Maruf Zakir.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.