ঢাকা, ৭ নভেম্বর ২০২৫:** হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির ও জামিয়া বাবুনগর মাদরাসার প্রধান পরিচালক আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী জামায়াতে ইসলামীকে ‘ঈমানের বড় ডাকাত’ আখ্যা দিয়ে তাদের ফেতনাকে কাদিয়ানিদের চেয়েও ভয়াবহ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জামায়াতের সদস্যদের ঈমানের উপরও সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, “যারা জামায়াতে ইসলামীতে আছে, তাদের ঈমান আছে কি না-তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।” এই বক্তব্য ইসলামপন্থী দলগুলোর মধ্যে চলমান ঐক্য আলোচনায় নতুন ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক মানচিত্রে উত্তেজনা যোগ করেছে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ফটিকছড়ির ঐতিহ্যবাহী আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদরাসার ১০৩তম বার্ষিক মাহফিলে আল্লামা বাবুনগরী এই বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর ফেতনা কাদিয়ানির ফেতনার চেয়েও ভয়াবহ। কাদিয়ানিরা ঈমানের যত ক্ষতি করতে পারেনি, জামায়াতে ইসলামী তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে।” এছাড়া, তিনি জামায়াতকে ‘মওদুদীবাদী ইসলাম’-এর প্রবক্তা বলে অভিহিত করে বলেন, “আমাদের ইসলাম হচ্ছে মদিনার ইসলাম, আর তাদের ইসলাম মওদুদীবাদীর ইসলাম।” তিনি আরও যোগ করেন, “যদি ঈমানকে হেফাজত করতে চাও, তাহলে জামায়াতে ইসলাম থেকে দূরে থাকো।
আল্লামা বাবুনগরী জামায়াতের বিরুদ্ধে এই সমালোচনা নতুন নয়। তিনি আগেও একাধিকবার জামায়াতকে ‘ভণ্ড ইসলামী দল’ এবং ‘সকল ভ্রান্ত ফেরকার মধ্যে নিকৃষ্ট’ বলে অভিহিত করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, অক্টোবর মাসে ফেনীতে এক সমাবেশে তিনি বলেছিলেন, “জামায়াত দ্বারা ইসলামের বেশি ক্ষতি হয়েছে।” এই ধারাবাহিক সমালোচনা হেফাজতে ইসলামের অরাজনৈতিক অবস্থান সত্ত্বেও ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্কিত ঐক্য প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করছে।
আল্লামা বাবুনগরী আরও বলেন, “বাংলাদেশে এত বড় জাহেল থাকতে পারে না, যারা হজরত ওমর (রা.) সহ সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে কটূক্তি করে।” তিনি ঈমান-আকিদা রক্ষায় জামায়াতকে ‘নির্মূল’ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটি বাংলাদেশের ইসলামী চিন্তাধারার জন্য অপরিহার্য। এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামপন্থী জোট ‘এক বাক্স নীতি’-র অধীনে জামায়াতের সঙ্গে ঐক্যের সম্ভাবনা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি ইসলামী আন্দোলনের মতো সংগঠনগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, যারা জামায়াতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে।
জামায়াতের পক্ষ থেকে এখনও কোনো সরাসরি প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে অতীতে অনুরূপ সমালোচনায় তারা হেফাজতের বক্তব্যের নিন্দা করে বলেছে যে, জামায়াত ইসলামের প্রচারে অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেছে। এই ঘটনা বাংলাদেশের ইসলামী রাজনীতিতে বিভেদের নতুন অধ্যায় যোগ করেছে, যা আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ।
**ইজহারে হক ডেস্ক**
*সম্পাদকীয় নোট: এই প্রতিবেদনটি সাম্প্রতিক ঘটনা ও সামাজিক মাধ্যমের ভিত্তিতে তৈরি।*
