বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি ও বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা রংপুর জেলা আয়োজিত দিনব্যাপী ইসলাহী ইজতেমা।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় জামিয়া কাসিমিয়া দারুল উলুম রংপুর ধনতলা মাদরাসা ময়দানে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান, শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, আওলাদে রাসূল, ফিদায়ে মিল্লাত মাওলানা সাইয়্যিদ আসআদ মাদানী রহ.-এর খলিফা, শাইখুল হাদীস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।
মোনাজাতের আগে ইসলাহী বয়ানে আল্লামা মাসঊদ বলেন, দরুদ শরীফ গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। এ আমলের মাধ্যমে একসঙ্গে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টি পাওয়া যায়। এটি মুমিনের আত্মার খোরাক এবং প্রিয় তাসবিহ। আমাদের পেয়ারে নবীজীকে ভালোবাসার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন তাঁর উপর দরুদ পাঠ করা।
নবীজীর মহব্বতই হাশরের ময়দানে নাজাতের উসিলা হবে উল্লেখ করে শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম বলেন, মুমিনের জীবনে নবীজীর প্রতি মহব্বতের গুরুত্ব অপরিসীম। মহব্বতে রাসুল ঈমানের রূহ, নবীজীর ভালোবাসা ছাড়া ঈমানের পূর্ণতা আসে না।। আর নিছক ভালোবাসাই যথেষ্ট নয়, বরং পার্থিব সব কিছুর উপর এই ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাতে হবে। আর এই ভালোবাসাই হাশরের ময়দানে নাজাতের উসিলা হবে।
বেশি বেশি দরুদ পাঠ নবীজী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বপ্নে দেখার সবচেয়ে বড় মাধ্যম বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক মুসলমান মনের মধ্যে স্বপ্ন বুনেন প্রিয় নবীজীকে স্বপ্ন দেখার। কিন্তু সেই সৌভাগ্য সবার জীবনে ঘটে না নবীজী প্রতি দরুদ পাঠ না করার কারণে। তবে যে ব্যক্তি নবীজীর প্রতি বেশি বেশি দুপুর পাঠ করবে, অজুসহকারে পবিত্র হয়ে বিছানায় ঘুমাবে, জীবনে একবার হলেও সে নবীজীকে স্বপ্নে দেখবে।
আল্লাহ তাআলাকে দিলের সাথি, নবিজি মুহাম্মদ (সা.)-কে আমলের সাথি এবং সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-কে পথচলার সাথি বানানোর আহ্বান জানিয়েছেন আল্লামা মাসঊদ বলেন, আল্লাহ তাআলাকে সবসময় অন্তরে রাখতে হবে, নবীজীকে আমলে রাখতে হবে এবং সাহাবায়ে কেরামকে দেখানো পথে চালতে হবে। যদি তুমি সর্বদা আল্লাহকে অন্তরে, নবীজীকে আমলে রাখো, সাহাবায়ে কেরামের দেখানো পথে চলো, তাহলে দুনিয়াতে তুমি সফল হবে, জান্নাতও তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকবে।
জামিয়া কাসিমিয়া দারুল উলুম রংপুর ধনতলার মুহতামিম ও বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা রংপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা হোসাইন আহমদ সভাপত্বিতে ইজতেমায় আরও উপস্থিত ছিলেন জামিআ ইকরা বাংলাদেশের সিনিয়র মুহাদ্দিস ও বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার মহাসচিব মাওলানা আব্দুর রহীম কাসেমী, ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাইফী, জামিয়া ফয়জিয়া মদিনাতুল উলুম বীরগঞ্জ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আইয়ুব আনসারী, জামিআ ইকরা বাংলাদেশ সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি ফয়জুল্লাহ আমান কাসেমী, মাওলানা সালমান হোসাইন, মাওলানা ইমরান হোসাইন, মাওলানা আব্দুল জাব্বার আজমী, মাওলানা আমিনুল এহসান মক্কী ও রংপুরের আলেম উলামাসহ দেশের বরেণ্য অসংখ্য উলামায়ে কেরাম।