জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য

জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য

মাওলানা নুরুল ইসলাম শ্রীপুরী

পহলে ইয়ে বাতাও কেহ সাহাবাহ কে ইজমা হুজ্জত হেঁ ইয়া নেহিঁ
বয়ানটি শুরু করেছিলেন দুর্লভপুর জামে মসজিদে। ২০১১ সালের এদারার পরীক্ষার্থীদের সম্বোধন করে। অতপর ধারাবাহিক কয়েক জুমআ পর্যন্ত দুর্লভপুর জামে মসজিদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। ভাগ্য ভালো! তখন আমি অধম হযরতের বয়ানগুলো নোট করেছিলাম। আমি অবশ্য উর্দূ ভাষায় নোট করেছিলাম। কারণ তখন উর্দূ সাহিত্য চর্চা করছিলাম। তাই উর্দূ থেকে আবার অনুবাদ করতে হয়েছে। লেখার ক্ষেত্রে আমি মওদুদী সাহেবের ক্ষেত্রে শালীন ভাষা ও সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছি। এ রকম একটি বক্তব্য মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরী রহ. এরও রয়েছে। সকল প্রশংসা রাব্বুল আলামীনের।
হামদ ও সালাতের পর।
মুহতারাম হাযিরিনে কেরাম!
আজ আমি আপনাদের সামনে জনাব আবুল আলা মওদুদী সাহেব ও তার জামায়াতে ইসলামীর বাস্তবতা ব্যাখ্যা করতে চাই। মনোযোগ দিয়ে শুনুন, যে বুঝতে পারে সে গ্রহণ করুক। আমি এই বিষয়ে সংক্ষেপে কথা বলতে চাই। তবে আমি যে বিষয়গুলি ব্যাখ্যা করব তা হবে মৌলিক বিষয়, তাই সেগুলি মনোযোগ সহকারে শুনুন, আপনি যাকে বুঝবেন তাকেই মেনে নেওয়া উচিত। যদি আপনি না বুঝতে পারেন তবে এই পৃথিবীতে কাউকে জোর করা যায় না।
মওদুদী জামাতের প্রধান ভুল পাঁচটি:
প্রথম ভুল:
“সাহাবায়ে কেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুম আজমাঈন সত্যের মাপকাঠি নন”
প্রাথমিক পরিচয়:
মাওলানা আবুল আলা মওদুদী সাহেব মূলতঃ আমাদের দলভূক্ত ছিলেন। শুরুতে আমাদের সমস্ত উলামায়ে কেরাম তাঁর সাথে ছিল। তাই বুঝতে হবে আমাদের এবং তাঁর মধ্যে পার্থক্য কোথা থেকে শুরু হয়েছিল।প্রথম কথা হলো, মাওলানা মওদুদী একাডেমিকভাবে নিয়মিত পড়াশোনা করেননি। কিন্তু তিনি অতিশয় বুদ্ধিমান ও মেধাবী ছিলেন। তিনি তাঁর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ইংরেজি এবং আরবি ভাষাও শিখেছিলেন। শুরুতে তিনি জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের “আল-জমিয়ত” পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।সে সময় জমিয়তের সভাপতি ছিলেন মুফতি কিফায়াতুল্লাহ সাহেব রহ.। এই সুবাদে তিনি মুফতি সাহেবের কাছ থেকেও ইলমী বিষয়ক বিভিন্নভাবে উপকৃত হয়েছেন। সম্পাদনাকালীন তিনি “আল-জিহাদ ফিল ইসলাম” লিখেছিলেন এবং সকলেই তা খুব পছন্দ করেছিলেন। কিছুদিন পর তিনি “আল-জমিয়ত” পত্রিকার সম্পাদনা ছেড়ে হায়দ্রাবাদ চলে যান এবং পরে সেখানে গিয়ে তিনি “তারজুমানুল কুরআন” নামে একটি মাসিক পত্রিকা চালু করেন এবং তাতে নিবন্ধ লেখা শুরু করেন। সে সময় সারা ভারতবর্ষ ব্যাপী বৃটিশ বিরোধী খেলাফত আন্দোলন চলছিল। তাই তাঁর পত্রিকায় মাও. মওদুদী সাহেব বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিষয়ে জোরালো লেখা লেখেন এবং অন্যান্য মহান ব্যক্তিত্ব যেমন মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী, মাওলানা মঞ্জুর নু’মানী, মাওলানা আমিন আহসান ইসলাহী এবং মাওলানা বখতিয়ারী মাদরাসী প্রমুখও তাঁর পত্রিকায় লিখতে থাকেন। এভাবে বেশ কিছুদিন চলল। তারপর এমন এক সময় আসল যখন মাওলানা মওদুদী সাহেব সিদ্ধান্ত নিলেন যে, আমি আমার নিজস্ব একটি পৃথক দল গঠন করব।
আর এ ব্যাপারে তিনি দিল্লীতে প্রথম বৈঠক ডেকেছিলেন। এই সমাবেশে আমাদের আকাবিরীন মাওলানা মঞ্জুর নু’মানী সাহেব, মাওলানা আলী মিয়া নদভী সাহেব, মাওলানা বখতিয়ারী, এবং মাওলানা আমিন আহসান ইসলাহী সাহেব প্রমুখ অংশ নেন। এই বৈঠকে মওদুদী সাহেব তার দল গঠন করেন এবং এর মৌলিক সংবিধান পেশ করেন। যার প্রথম ধারা ছিল এই দলের নাম হবে “জামায়াতে ইসলামী”। প্রথমেই এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। উপস্থিত সবাই প্রশ্ন করলেন, জামায়াতে ইসলামী মানে কী? এই দলে যে নেই, সে কি মুসলমান নয়?
মাওলানা মওদুদী সাহেব বুঝিয়ে দিলেন যে না, এর মানে এই নয়, এটা শুধু একটা নাম। যাইহোক, দলের নাম নিয়ে যৎসামান্য মতভেদ হয়। কিন্তু খুব একটা মতপার্থক্য হয় নি।
এবার সংবিধানের দ্বিতীয় ধারা এলো।
এতে বলা হল, “যে কেউ এই জামায়াতে যোগদান করবে, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ছাড়া মানসিকভাবে কারো দাসত্ব করবে না। (ذہنی غلامی)। “মানসিক দাসত্ব” এই শব্দটি ছিল একটি অনর্থক বা মহমল কথা। কারণ মানসিক দাসত্ব শব্দটি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের হুকুম মানার জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। মাওলানা মওদুদী যখন এই কথাটি বললেন তখন এতে প্রবল মতভেদ দেখা দিল। উপস্থিত উলামায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে আপনি কি বলেন? সাহাবায়ে কেরামের ইজমা’ বা ঐকমত্য দলীল (حجت) কি না?
(অর্থাৎ, যে সকল মাসআলায় সকল সাহাবায়ে কেরাম রা. একমত হয়েছেন সেগুলো উম্মতের জন্য দলীল কি না। معيار حق কথাটির একটি অর্থ হলো ইজমায়ে সাহাবা দলীল কি না? এটা খুব ভালো করে বুঝে নেওয়া দরকার)
এই বিষয়টি প্রথমে উত্থাপিত হয় এবং দীর্ঘ আলোচনা হয়। এই আলোচনার পর আমাদের সকল আকাবির উলামায়ে কেরাম তাঁর থেকে পৃথক হয়ে যান। সর্বপ্রথম দারুল উলূম দেওবন্দের তৎকালীন শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানী রহ. মাসআলাটি শক্তভাবে ধরেন। তিনি মাওলানা মওদুদীকে প্রশ্ন করলেন, সাহাবায়ে কেরামের ব্যাপারে আপনার অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে, তাদের ইজমা বা ঐকমত্য হুজ্জত বা দলীল কি না? কিন্তু মওদুদী সাহেব স্পষ্ট কোন সিদ্ধান্ত জানাননি। তার লিখিত জামায়াতে ইসলামীর সংবিধানে আজ পর্যন্ত এই ধারাটি চালু আছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত তিনি বা সমর্থকরা সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেননি।
মওদুদী সাহেব ও তাঁর সমর্থকরারা বলল, আমরা কোথায় সাহাবীদের সমালোচনা করলাম? আমাদের আকাবিরগণ বললেন, আপনি কাদা ছোড়াছুড়ি করবেন কি করবেন না, সমালোচনা করবেন কি করবেন না, সেটা পরের ব্যাপার। প্রথমে এটা পরিষ্কার করুন যে, সাহাবায়ে কেরাম রা. গণের ইজমা বা ঐকমত্য দলীল বা হুজ্জত কি না। আজ পর্যন্ত তারা হ্যাঁ বা না বলেননি। এটাই সেই বিরোপূর্ণ মতানৈক্য যে, সাহাবায়ে কেরাম সত্যের মাপকাঠি কি না। (معيار حق) । তারা সাহাবায়ে কেরামের ইজমা বা ঐকমত্যকে দলীল বা হুজ্জত হিসেবে বিবেচনা করলে সংবিধানে একটি বাক্য যোগ করতে তাদের সমস্যা কি ছিল? কিন্তু তারা আজ পর্যন্ত তা যোগ করেনি। সেদিন থেকেই আমাদের সাথে তাদের মতপার্থক্য শুরু হয় এবং এই মাসআলায়ই তারা আহলে সুন্নাত থেকে বের হয়ে যায়। আর যেহেতু তারা জামাআত অর্থাৎ সাহাবায়ে কেরামের ইজমা বা ঐকমত্যকে দলীল বা হুজ্জত হিসেবে মেনে নেয় নি, তাই তারা জামাআত থেকেও বের হয়ে যায়। অর্থাৎ “আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআত” থেকে বের হয়ে যায়। তাই তাদের সাথে আমাদের মতপার্থক্য صراط الذين أنعمت عليهم থেকে শুরু হয়েছে। আমাদের পথ হল তাদের পথ যাদেরকে আল্লাহ পুরস্কৃত করেছেন, এবং এর প্রথম সম্বোধিত ব্যক্তিরা হলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ। আমাদের এবং তাদের মধ্যে একটি পার্থক্য হল তারা সাহাবীদের ইজমা বা ঐকমত্য মেনে নেয় না। তাদের পথভ্রষ্ট হওয়ার জন্য এই একটি জিনিসই যথেষ্ট।
মুহতারাম হাযিরীন!
সাহাবায়ে কেরাম প্রিয় নবী মুহাম্মদ সা. এর সংস্রব ও সাহচর্যের মাধ্যমে বিশ্বজনীন খ্যাতনামা ও মানবতাবোধ সম্পন্ন উন্নত জাতিতে পরিণত হলেন। শুধু তাই নয়; বরং বিশ্বমানবতার জন্য চির অনুসরণযোগ্য এবং উম্মতের ঈমান-আমলের সত্যতা ও শুদ্ধাশুদ্ধি যাচাইয়ের জন্য মাপকাঠির সনদ লাভ করেছেন মহান আল্লাহর পাক থেকে।
সাহাবায়ে কেরামের ঈমানকে অন্যদের ঈমান যাচায়ের কষ্টিপাথর সাব্যস্ত করে আল্লাহ তা‘আলা তাঁদেরকে সম্বোধন করে ইরশাদ করেন,
‎فإن آمنوا بمثل ما آمنتم به فقد اهتدوا و إن تولوا فإنما هم في شقاق
‘যদি তারা ঈমান আনে, যেরূপ তোমরা ঈমান এনেছ, তবে তারা হেদায়াতপ্রাপ্ত হবে। আর যদি তারা (এত্থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তারা হঠকারিতায় রয়েছে।’
একথা চিরসত্য যে, সরাসরি রাসূল সা. এর পবিত্র জবান থেকে কোরআন শরীফের এক একটি আয়াত সহী-শুদ্ধভাবে শিখেছেন এবং তা সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে পরবর্তী উম্মত পর্যন্ত নিখুঁতভাবে পৌঁছে দিয়েছেন যাঁরা, তাঁরা হলেন রাসূল সা. এর আস্থাভাজন সাহাবায়ে কেরাম। সাহাবীগণ যখনই কোনো আয়াত রাসূলের জবানে শুনতেন, তাৎক্ষণিক তা লিখে নিতেন বা মুখস্থ করে নিতেন। আবার বিশেষভাবে কয়েকজন সাহাবী রাসূল সা. এর পক্ষ থেকে ওহী লিখার দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে হযরত মু‘আবিয়া রা. বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। রাসূল সা. ইহজগৎ ত্যাগ করার পর হযরত উমর রা.- এর পরামর্শক্রমে মুসলিম জাহানের প্রথম খলীফা হযরত আবু বকর রা. এর তত্ত্বাবধানে কোরআনের বিক্ষিপ্ত আয়াতকে সংকলন করতঃ পর্যায়ক্রমে তাকে এডিশনে রূপায়ণের কাজও আঞ্জাম দিয়েছেন নবীজীর সৌভাগ্যবান সাহাবীরা। তাঁদের মধ্যে হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত রা. বিশেষভাবে উলেখযোগ্য। তারপর দূরদর্শী সাহাবী হযরত হুযায়ফা রা. এর পরামর্শক্রমে হযরত উসমান রা. ২৫হিজরী সনে পঞ্চাশ হাজার সাহাবীর বিশাল সম্মেলন ডেকে সকলের সম্মতিক্রমে কুরাইশী ভাষায় কোরআনের নতুন এডিশন তৈরির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেজন্যে তিনি চার সদস্যবিশিষ্ট পরিষদ তথা হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত রা., আব্দুলাহ ইবনে যুবায়র রা., সাঈদ ইবনে ‘আস রা. ও আব্দুলাহ ইবনে হারিস রা.কে দায়িত্ব দেন। তাঁরা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অত্যন্ত সততা, দতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে নিখুঁতভাবে এই মহতী কাজের আঞ্জাম দেন। তৈরি হয় কোরআনের নতুন এডিশন, যার অবিকল অনুলিপী আজ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের হাতে রয়েছে।
নবীজির প্রিয় সাহাবীগণ যদি অকান্ত পরিশ্রম ও অপূর্ব সাধনার বিনিময়ে কুরআনের সংরণ ও সংকলনের কাজ আঞ্জাম না দিতেন, তাহলে পরবর্তী উম্মত চিরদিনের জন্য কোরআনের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত থেকে যেত। অতএব যাঁদের মাধ্যমে আমরা কোরআন পেয়েছি, তাঁদেরকে সত্যের মাপকাঠি না মানা; তাঁদেরকে সমালোচনার উর্ধ্বে মনে না করা; এক কথায় তাঁদের প্রতি অনাস্থাভাব পোষণ করা এবং তাঁদেরকে কোনো না কোনোভাবে কদর্য করা পরোক্ষভাবে কোরআনকে কদর্য করা এবং কোরআনের প্রতি অনাস্থাভাব পোষণ করা। যেহেতু বর্ণনার উপর নির্ভরতা বর্ণনাকারীর উপর নির্ভর করে। বর্ণনাকারী গ্রহণযোগ্য হলে, তার বর্ণিত বিষয় গ্রহণযোগ্য; আর বর্ণনাকারী অনির্ভরযোগ্য হলে, তার বর্ণিত বিষয় অনির্ভরযোগ্য; বর্ণনাকারী বিতর্কিত ও সমালোচিত হলে, তার বর্ণিত বিষয় বিতর্কিত সমালোচিত হয়ে যায়; এটাইতো সর্বজন স্বীকৃত কথা।
খুব মনযোগ সহকারে একটি কথা শুনে রাখুন!
নবী কারীম সা. এর জন্য যেমন ইসমত বা নিষ্পাপ হওয়া আবশ্যক- কারণ, তা ছাড়া নবীর প্রদত্ত দ্বীন বিশ্বাস করা যায় না, তেমনি সাহাবায়ে কেরামের জন্য আদালত আবশ্যক। কারণ তারাই জাতির শ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ এবং ইসলামের প্রথম মুখাতাব। তাছাড়া এক দিক বিবেচনা করলে তাঁরাই নবী সা. পরবর্তী উম্মতের প্রতি খোদা প্রেরিত ব্যক্তিবর্গ। (هم مبعوثون إلى الآخرين ) । তাই আদালত বা ন্যায়বিচার এবং হিফাযত বা সুরক্ষা ছাড়া তাদের প্রদত্ত দ্বীনকে বিশ্বাস করা যায় না। এই হুকুম কুল্লির প্রতিটি ফরদের জন্য প্রযোজ্য। নবী করীম (সাঃ) এর বাণী হল: “আমার সাহাবীগণ আকাশের নক্ষত্র সমতুল্য। তাদের যে কোন একজনকে অনুসরণ করলেই তোমরা গন্তব্যে পৌঁছাবে।”
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহাবীদের এ রকম ন্যায়বিচার ও সুরক্ষার নামই হল “সত্যের মাপকাঠি” বা (معيار حق )। সুতরাং, যারা মনে করেন যে, আল্লাহ ও রাসূল ছাড়া অন্য কারোর মানসিক দাসত্ব (ذہنی غلامی) জায়েজ নয়! তাদেরকে বলব, যাদের মাধ্যমে আপনার কাছে ধর্ম এসেছে, তারা যদি বিশ্বস্ত ও অনুকরণের যোগ্য না হন, তাহলে আপনার দ্বীনের শুদ্ধতার গ্যারান্টি কতটুকু?
অতপর হযরত শায়খ দা.বা. পবিত্র কুরআনে কারীমের আয়াত: كنتم خير أمة أخرجت للناس- الخ তিলাওয়াত করেন এবং একটি নাহবী কায়দার মাধ্যমে كنتم ও أنتم এর পার্থক্য তুলে ধরেন। এই কায়দাটি বুঝলেই যে কোন মানুষ সাহাবায়ে কেরাম রা. সত্যের মাপকাঠি মেনে নিতে বাধ্য হবেন। এমনকি আমি মনে করি, যদি মাওলানা মওদুদী জীবিত থাকাকালীন কেউ শায়খে দুর্লভপুরীর মতো সেই নাহবী কায়দাটি তাকে বুঝিয়ে বলতেন তবে খোদ মাওলানা মওদুদীও “সাহাবায়ে কেরাম রা. সত্যের মাপকাঠি” এ কথা মেনে নিতে বাধ্য হতেন। লেখাটি অনেক লম্বা হয়ে যাওয়ার ভয়ে কায়দাটি রেখে দিলাম। লিখলাম নাহ।
আল্লাহ তাওফিক দিলে চলবে (২য় ভুল)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *