1. info@izharehaq.com : MZakir :
রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মুখোশ উন্মোচন (মওদূদী মতবাদ) আহলে সুন্নতের ফিক্বাহ শাস্ত্রের ইমাম: ইসলামী আমলের ক্ষেত্রে বিদয়াতীদের চক্রান্ত আহলে সুন্নতের আক্বীদামতে মহানবীর মর্যাদা: অতি ভক্তি কিসের লক্ষণ রেজভীদের চক্রান্ত হুবহু ইবনে সাবার চক্রান্তের মত: রাসূলকে আলিমুল গাইব বলা সাবায়ী চক্রান্ত: আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’ত সুবিন্যস্ত হওয়ার ইতিহাস কুরআন ও হাদীসের ভাষায় ছিরাতে মুস্তাক্বীম বা সোজা পথ: নবুওয়াত ও রিসালত: মওদুদীবাদ ইবাদত: মওদুদীবাদ কুরআন মাজীদ ও দ্বীনের সংরক্ষণ: কুরআন সংরক্ষণের অর্থ: কুরআন সংরক্ষণে খোদায়ী ব্যবস্থাপনা: মওদুদীবাদ দ্বীন কী? দ্বীনে নূহ: দ্বীনে ইব্রাহীম: দ্বীনে ইসমাঈল: দ্বীনে ইউসুফ: দ্বীনে মূসা: দ্বীনে ঈসা: মওদূদীবাদ মওদুদী সাহেবের শিক্ষা-দীক্ষার পরিধি গোয়েবলসীয় নীতি : হিটলারের ঐ মুখপাত্রও ”জামাত-শিবিরের মিথ্যাচারের কাছে হার মানায়”: পর্ব ১ ইক্বামাতে দ্বীনের তাৎপর্য এবং বাতিলপন্থীদের বিকৃত ব্যাখ্যা সাহাবাগণ রাঃ সত্যের মাপকাঠি এবং তাদের ইজমা সর্বসিদ্ধান্ত মতে শরীয়তের দলীল সাহাবা রাঃ গণ সত্যের মাপকাঠি খোলাফায়ে রাশেদীনগণের সোনালী আদর্শ সর্বসম্মতিক্রমে শরিয়তের দলীল শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: “তাঁরাই সত্যের মাপকাঠি” শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: সাহাবায়ে কেরাম “সত্যের মাপকাঠি: মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৬ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৫

জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: ২য় পর্ব

মাওলানা নুরুল ইসলাম শ্রীপুরী
  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৫৬০ বার পড়া হয়েছে

জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: ২য় পর্ব

মাওলানা নুরুল ইসলাম শ্রীপুরী

“মাগার কুতবুর রাহা বাতাও কিয়া হায়”
দ্বিতীয় পর্ব

মওদুদী সাহেবের দ্বিতীয় ভুল!

“দ্বীনের খুঁটি হল হুকুমতে এলাহিয়া প্রতিষ্ঠা কর”

হযরত শায়খ দুর্লভপুরী বলেন,

মুহতারাম হাযিরিনে কেরাম!
কান খুলে শুনে রাখুন!
ইসলামের শিক্ষা খুবই বিস্তৃত, পুরো কুরআন শরীফ দ্বীনের শিক্ষায় পরিপূর্ণ, সবই পরিপূর্ণ, সকল ফিকাহ শাস্ত্র এই দ্বীনে ইসলামের বিস্তারিত বিবরণে পরিপূর্ণ। কিন্তু বলুন তো দ্বীনে ইসলামের কুতবুর রাহা কী?
(কুতবুর রাহা হল, মিলের নীচের প্লেটের সাথে সংযুক্ত মোটা লোহার কাঠি, যার উপর উপরের প্লেটটি ঘোরে।অর্থাৎ, মিলের লোহা বা পাথরের খুঁটি বা পেরেক। যার নিম্নাংশ মেশিনের সাথে লাগানো থাকে এবং ইহার উপর মিলের উপরের অংশ ঘোরে। মেশিনের ইঞ্জিন বা হাতের মাধ্যমে সেই খুঁটি বা পেরেকটি ঘুরতে থাকে। সেখানে গম ইত্যাদি পিষার জন্য ঢালা হয়। উপরাংশের চাপে গম, চাল ডাল ইত্যাদি পিষ্ট হয়ে খামির তৈরী হয়। তাই মেশিনের প্রধান অংশটি হচ্ছে সেই পেরেক বা লোহার কাঠিটি। তার উপর যা দিবেন তা নিয়ে সে ঘুরতে থাকবে। এটাকে আরবী ভাষায় কুতবুর রাহা বলা হয়— قطب الرحى : الْعَصَا الْغَلِيظَةُ أَوِ الْحَدِيدَةُ الْمُلَصَّقَةُ بِالطَّبَقِ الأَسْفَلِ مِنَ الرَّحَى يَدُورُ عَلَيْهِ الطَّبَقُ الأَعْلَى)।
এবার বুঝার বিষয় হল, ইসলামের কুতুব রাহা কী? মহানবী (সা.)-এর সময় থেকে আজ পর্যন্ত সমগ্র উম্মত বুঝে আসছে যে, ইসলামের “কুতবুর রাহা” হচ্ছে ‘রিজওয়ানুম মিনাল্লাহ’ (رضوان من الله) অর্থাৎ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি অর্জন করা। পবিত্র কুরআনে বলা হয়ে হয়েছে :
وَعَدَ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ۚ وَرِضْوَانٌ مِنَ اللَّهِ أَكْبَرُ ۚ ذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ.
অর্থাৎ, আল্লাহ ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেনে কানন-কুঞ্জের, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় প্রস্রবণ। তারা সে গুলোরই মাঝে থাকবে। আর এসব কানন-কুঞ্জে থাকবে পরিচ্ছন্ন থাকার ঘর। বস্তুতঃ এ সমুদয়ের মাঝে সবচেয়ে বড় হল আল্লাহর সন্তুষ্টি। এটিই হল মহান কৃতকার্যতা। [সূরা তাওবা : ৭২]
لِّلَّذِينَ أَحْسَنُوا الْحُسْنَىٰ وَزِيَادَةٌ ۖ وَلَا يَرْهَقُ وُجُوهَهُمْ قَتَرٌ وَلَا ذِلَّةٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ�
অর্থাৎ, যারা সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ এবং তারও চেয়ে বেশী। আর তাদের মুখমন্ডলকে আবৃত করবে না মলিনতা কিংবা অপমান। তারাই হল জান্নাতবাসী, এতেই তারা বসবাস করতে থাকবে অনন্তকাল। [সূরা ইউনুস : ২৬]
হাদীস শরীফে এর ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যখন সকল জান্নাতী জান্নাতে পৌঁছে যাবে, তখন আল্লাহ তায়ালা জান্নাতীদের উদ্দেশে বলবেন, হে আমার বান্দাগণ! আমি তোমাদেরকে যে নেয়ামতরাজি দিয়েছি তাতে তোমরা কি খুশি? সব জান্নাতীরা বলবে, যে বিশ্ব প্রতিপালক! আমরা খুশি, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলবেন আমি তোমাদের জন্য একটা নেয়ামত লুকিয়ে রেখেছি। সেই নেয়ামত আমি এখনো তোমাদেরকে দেইনি। জান্নাতবাসীরা ভাববে, সকল নেয়ামত তো যে আমাদেরকে দান করা হয়েছে, তাহলে আর বাকি এমন কী নেয়ামত রইল যা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এখনো আমাদেরকে দেন নি? জান্নাতীরা বলবে হে, বিশ্ব প্রতিপালক! সেই নেয়ামত কি?
আল্লাহ তায়ালা বলবেন, সেই নেয়ামত হল, “আমি আজ ঘোষণা করছি যে আমি জান্নাতবাসীদের উপর সন্তুষ্ট ও খুশি হয়ে গেলাম। এত খুশি হলাম যে আমি আর কখনই তোমাদের উপর রাগান্বিত হব না”। হাদীস শরীফে আছে যে, যখন এ ঘোষণা দেওয়া হবে তখন মুমিনদের সুখ ও আনন্দের কোন অন্ত থাকবে না। তারা জান্নাতের সকল নেয়ামতকে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির সামনে তুচ্ছ মনে করবে। সুতরাং এতে বুঝা গেল, সবচেয়ে বড় নেয়ামত হল আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি।

 

জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য

 

আপনি যদি নামায পড়েন, আর আল্লাহ তাতে সন্তুষ্ট হন, তাহলে আপনার নামায উপকারী। আর আপনি যদি নামায পড়েন, এবং তা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে করেন এবং সারা বিশ্ব তা দেখে ও শুনে, কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হন না, তাহলে সেই সালাত নামাযী ব্যক্তির মুখেই নিক্ষেপ করা হবে। যাকাতের ক্ষেত্রেও তাই। রোযার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা, হজ্জের ক্ষেত্রেও এই অবস্থা। মোটকথা, সকল ইবাদত ও দাসত্বের ক্ষেত্রে এটাই নিয়ম যে, আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদের ইবাদত ও দাসত্বে সন্তুষ্ট হন তবে আমরা সফলকাম। আর যদি আমরা আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করতে না পারি, তাহলে আমাদের কোন সফলতা নেই।
মাওলানা মওদুদী সাহেব বলেন,
জামাতের সাথে নামায আদায় করা এটি হচ্ছে একটি সামরিক কুচকাওয়াজ।
যাকাত হচ্ছে জাতীয় তহবিল। সেজন্য আপনি দেখবেন, তারা সবকিছুতে যাকাত ব্যবহার করে। কারণ সব কিছুতে ফান্ড ব্যবহার করা যায়। যেমন সরকারি তহবিল সব কিছুতে ব্যবহৃত হয়।
রোযা হলো সেনাবাহিনীর অনাহারে থাকার মহড়া। এবং হজ ইন্টারন্যাশনাল একটি সম্মেলন। এসব কথা দ্বারা “রিযওয়ানুম মিনাল্লাহ” বা আল্লাহর সন্তুষ্টি চলে গেছে। এই সমস্ত ব্যাখ্যা তাঁর ছোট-বড় কিতাবসমূহে বিদ্যমান। সবকিছু থেকে তিনি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার বিষয়টি বাদ দিয়ে হুকুমতে এলাহিয়া বা আল্লাহর সরকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টি যুক্ত করলেন।
মুহতারাম হাযিরীন!
এবার প্রশ্ন হলো, হুকুমতে এলাহিয়া প্রতিষ্ঠা করা কি ফরজ নয়? আল্লাহ তায়ালা কি হুকুমতে এলাহিয়া প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেননি?
তার জবাব হল, প্রকৃতপক্ষে হুকুমতে এলাহিয়া বা খোদায়ী খেলাফত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা ফরজ। তবে এটি ইসলামের মূল নয়, বরং এটি ইসলামের বৃক্ষের একটি শাখা। মূল এবং শাখা বুঝতে হবে। গাছের মূল নষ্ট হয়ে গেলে গাছটিই মরে যায়। কিন্তু শাখা বা ডালপালা কেটে দিলে বা নষ্ট হয়ে গেলে মূল বেঁচে থাকে, মরে না।
আরো বুঝুন, যেমন সদকা দেওয়া, সালাম করা, মেহমানদারী করা, কুরআন তেলাওয়াত করা ইত্যাদি ইসলামের একেকটি শাখা। এগুলো ইসলামের মূল নয়। হাদীস শরীফে আছে:
الإيمان بضع و سبعون شعبة
ঈমানের সত্তরটিরও বেশি শাখা রয়েছে। এ শাখাগুলোর মধ্যে একটি হল “হুকুমতে এলাহিয়া বা খোদায়ী খেলাফতব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। এবার বুঝুন, যেখানে পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে সেখানেই হুকুমতে এলাহিয়া বা ইসলামী খেলাফত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা যায়। সুতরাং যে অঞ্চলে পরিবেশ পরিস্থিতি ইসলামের অনুকূলে থাকবে সে অঞ্চলের মুসলমানদের উপর হুকুমতে এলাহিয়া বা ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা যে ফরয তা আমরা অস্বীকার করছি না।
তাই ভাল করে বুঝতে হবে যে, হুকুমতে এলাহিয়া বা ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা কিন্তু দ্বীনে ইসলামের বুনিয়াদ বা ভিত্তি নয়। কিন্তু মওদুদী সাহেব একটি কান্ড কেটে এনে ইসলামের বৃক্ষের শিকড় কেটে ফেলে সেই কান্ডটি সেখানে বসিয়ে দিলেন এবং এই কান্ডের উপরই সমস্ত ইসলামী বিধি-বিধান বসিয়ে ঘুরিয়ে দিলেন।
“তিনি তাঁর একটি বইয়ে এই লিখেছেন, যে সমস্ত নবীরা সারাজীবন দ্বীনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে গেছেন এবং পৃথিবীতে ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি, তারা দুনিয়া থেকে তাদের মিশনে ব্যর্থ হয়ে দুনিয়া ত্যাগ করেছেন।”
অনুতাপ! শত অনুতাপ! আফসোস! শত আফসোস! এ দুনিয়াতে কমবেশি এক লাখ চব্বিশ হাজার আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুস সালাম এসেছেন। তাদের মধ্যে কতজন ইসলামী খেলাফতব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন? আপনি পাঁচ-দশ জনের উদাহরণ দিতে পারবেন। বাকিরা দ্বীনের জন্য জীবন বাজী রেখে মেহনত করে গেছেন। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি তাদের অনুকূল ছিল না, ইসলামী খেলাফতব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ ছিল না— তাহলে কি সেই নবীরা এই পৃথিবীতে তাদের মিশনে ব্যর্থ হয়েছিলেন? আফসোস!
আসল কথা হলো, তিনি যখন ইসলামের খুঁটি বা কুতবুর রাহা হুকুমতে এলাহিয়া বানিয়ে দিলেন, তখন তো যে ব্যক্তি সারাজীবন পরিশ্রম করেও হুকুমতে এলাহিয়া প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না, তাকে তো ব্যর্থ হিসেবেই দেখা হবে।
আর সবচে’ মজার ব্যাপার হলো মওদুদী সাহেব নিজেও ব্যর্থ হয়েছেন। কারণ, তিনি তাঁর জীবনে হুকুমতে ইসলামিয়া প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। এমনকি সারা জীবন নারী নেতৃত্ব অস্বীকার করেছেন এবং অবশেষে ফাতেমা জিন্নাহকে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু তাকে অনেক খোশামোদ করেও জয় করতে পারেননি। তাই তিনি নিজেও হুকুমতে এলাহিয়া বা ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠা না করেই এই পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিয়েছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন।
মাওলানা মওদুদী সাহেবের দেখানো পথে ১৯৯৯ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি’র সাথে তাঁর প্রাণপ্রিয় সংগঠন, হুকুমতে এলাহিয়ার সংগঠন জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি এবং ইসলামী ঐক্য জোট মিলিত হয়ে চার-দলীয় ঐক্য জোট গঠন করে তাঁর স্মৃতি ধরে রাখেন।
আরো মজার ব্যাপার হল, হুকুমতে এলাহিয়া প্রতিষ্ঠার বিষয়ে উদ্বেগ আছে, কিন্তু নিজের মধ্যে ধর্ম প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কোন উদ্বেগ নাই। এটা আফসুসের বিষয়।
আজকে যারা জামায়াতে ইসলামীতে আছেন তাদের জীবনের দিকে একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, তারা নামাজে আগ্রহী নয়, রোজা রাখতে আগ্রহী নয়, তাদের পোশাক ইসলামিক নয়, তাদের চেহারাও নয়। কারণ, সুন্নাত তরিকায় তারা দাড়ি রাখে না। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ছুটবে, কিন্তু নামাজের সময় হলে তাদের মসজিদে দেখা যায় না। তার কারণ হল, তাদের বড় হযরতজী ইসলামের কুতবুর রাহা বা কলকাঠি পাল্টে দিয়েছেন।
যাইহোক, সমগ্র উম্মাহ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময় থেকে এখন পর্যন্ত বুঝে আসছে যে, ইসলামের কুতবুর রাহা বা খুঁটির পাথর যার উপর সকল হুকুম আহকাম আবর্তিত হয়, তা হল “রিজওয়ানুম মিনাল্লাহ”। অর্থাৎ, মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা।
এবার মওদুদী সাহেব আসলেন। তিনি রিযওয়ানুম মিনাল্লাহ’র সেই খুটিটি সরিয়ে একটি নতুন খুঁটি সেখানে স্থাপন করলেন। সেই নতুন খুঁটি কী? সেটা হল, “ইকামাতে দ্বীন” বা “হুকুমতে এলাহিয়া” তথা পৃথিবীতে খোদায়ী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা।
এটা তাদের সুন্দর ব্যাখ্যা, কিন্তু ইকামাতে দ্বীন মানে নিজের মধ্যে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা বা দ্বীন পালনের আবেগ সৃষ্টি করা নয় বরং ইকামতে দ্বীন মানে পৃথিবীতে খোদায়ী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা। একটি নতুন খুঁটি স্থাপন করলেন এবং তার উপর সমস্ত আহকাম ঘুরিয়ে দিলেন।
সে কারণেই যখন মাওলানা মওদুদী সাহেব “আল-জিহাদু ফিল ইসলাম” লিখলেন, তখন আমাদের আকাবিরগণ তাঁর মুখ ভরে প্রশংসা করেছিলেন।
সুতরাং, এটি মনে রাখবেন যে যেখানে পরিস্থিতি অনুকূলে সেখানে একটি ইসলামী খিলাফতব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা বাধ্যতামূলক। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তেরো বছর মক্কায় অবস্থান করেন। কিন্তু সেথায় পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূল না থাকায় তিনি কোন ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা করেননি। অতপর মদীনায় আসার পর যখন একটি সমষ্টিগত ও কেন্দ্রীয়শক্তি অর্জিত হয়, তখন ধীরে ধীরে হুকুমতে এলাহিয়া প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে।দ্বিতীয় বিষয় বুঝতে হবে যে সমস্ত মওদূদী লিটারেচারের সারাংশ হল হুকুমতে এলাহিয়া প্রতিষ্ঠ করা। আল্লাহর সন্তুষ্টির কোন ধারণাই তাদের মধ্যে নেই। এটাই তাদের ভ্রষ্টতার জন্য যথেষ্ট।

(আল্লাহ চাহে তো চলবে ৩য় ভুল)

 

জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য

শেয়ার করুন

2 thoughts on "জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: ২য় পর্ব"

  1. Sahed Ahmed says:

    জাযাকাল্লাহ

    1. MZakir says:

      ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরির আরো
© All rights reserved © 2019 www.izharehaq.com
Theme Customized BY Md Maruf Zakir