1. info@izharehaq.com : MZakir :
শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মুখোশ উন্মোচন (মওদূদী মতবাদ) আহলে সুন্নতের ফিক্বাহ শাস্ত্রের ইমাম: ইসলামী আমলের ক্ষেত্রে বিদয়াতীদের চক্রান্ত আহলে সুন্নতের আক্বীদামতে মহানবীর মর্যাদা: অতি ভক্তি কিসের লক্ষণ রেজভীদের চক্রান্ত হুবহু ইবনে সাবার চক্রান্তের মত: রাসূলকে আলিমুল গাইব বলা সাবায়ী চক্রান্ত: আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’ত সুবিন্যস্ত হওয়ার ইতিহাস কুরআন ও হাদীসের ভাষায় ছিরাতে মুস্তাক্বীম বা সোজা পথ: নবুওয়াত ও রিসালত: মওদুদীবাদ ইবাদত: মওদুদীবাদ কুরআন মাজীদ ও দ্বীনের সংরক্ষণ: কুরআন সংরক্ষণের অর্থ: কুরআন সংরক্ষণে খোদায়ী ব্যবস্থাপনা: মওদুদীবাদ দ্বীন কী? দ্বীনে নূহ: দ্বীনে ইব্রাহীম: দ্বীনে ইসমাঈল: দ্বীনে ইউসুফ: দ্বীনে মূসা: দ্বীনে ঈসা: মওদূদীবাদ মওদুদী সাহেবের শিক্ষা-দীক্ষার পরিধি গোয়েবলসীয় নীতি : হিটলারের ঐ মুখপাত্রও ”জামাত-শিবিরের মিথ্যাচারের কাছে হার মানায়”: পর্ব ১ ইক্বামাতে দ্বীনের তাৎপর্য এবং বাতিলপন্থীদের বিকৃত ব্যাখ্যা সাহাবাগণ রাঃ সত্যের মাপকাঠি এবং তাদের ইজমা সর্বসিদ্ধান্ত মতে শরীয়তের দলীল সাহাবা রাঃ গণ সত্যের মাপকাঠি খোলাফায়ে রাশেদীনগণের সোনালী আদর্শ সর্বসম্মতিক্রমে শরিয়তের দলীল শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: “তাঁরাই সত্যের মাপকাঠি” শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: সাহাবায়ে কেরাম “সত্যের মাপকাঠি: মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৬ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৫

জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: ৩য় পর্ব

মাওলানা নুরুল ইসলাম শ্রীপুরী
  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪
  • ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে

বাতাও আফইয়ুন কিয়া আওর তাসাউফ কিয়া?

তৃতীয় পর্ব

তৃতীয় ভুল: সুফিবাদে মানবপ্রেম ও মওদুদীদের অপ্রেম

মুহতারাম হাযিরীন !
কান খুলে শুনে রাখুন!
“দ্বীন তিনটি জিনিসের নাম”
‘হযরত উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় জনৈক ব্যক্তি দরবারে আত্মপ্রকাশ করলেন। ধবধবে সাদা তাঁর পোশাক। চুল তাঁর কুচকুচে কালো। না ছিল তাঁর মধ্যে সফর করে আসার কোন চিহ্ন, আর না আমাদের কেউ তাকে চিনতে পেরেছেন। তিনি এসেই নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বসে পড়লেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাঁটুর সাথে তাঁর হাঁটু মিলিয়ে দিলেন। তাঁর দু’হাত তাঁর দুই উরুর উপর রেখে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে কিছু বলুন অর্থাৎ ইসলাম কি? উত্তরে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “ইসলাম হচ্ছে- তুমি সাক্ষ্য দিবে, আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কোন ইলাহ (উপাস্য) নেই, মুহাম্মাদ আল্লাহ্‌র রসূল, সলাত ক্বায়িম করবে, যাকাত আদায় করবে, রমাযান মাসের সিয়াম পালন করবে এবং বাইতুল্লাহর হাজ্জ করবে যদি সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য থাকে।” আগন্তুক বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন।” আমরা আশ্চর্যান্বিত হলাম একদিকে তিনি রসূলকে (অজ্ঞের ন্যায়) প্রশ্ন করলেন, আবার অপরদিকে রসূলের বক্তব্যকে (বিজ্ঞের ন্যায়) সঠিক বলে সমর্থনও করলেন। এরপর তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, “আমাকে ঈমান সম্পর্কে কিছু বলুন।” রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তর দিলেন, ঈমান হচ্ছেঃ আল্লাহ্‌ তা‘আলা, তাঁর মালায়িকাহ্, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রসূলগণ এবং পরকালকে সত্য বলে বিশ্বাস করা। এছাড়া তাক্বদীরের উপর অর্থাৎ জীবন ও জগতে কল্যাণ-অকল্যাণ যা কিছু ঘটছে, সবই আল্লাহ্‌র ইচ্ছায় হচ্ছে- এ কথার উপর বিশ্বাস করা। উত্তর শুনে আগন্তুক বললেন, “আপনি ঠিকই বলেছেন”। অতঃপর তিনি আবার বললেন, “আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন।” রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ইহসান হচ্ছে, “তুমি এমনভাবে আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাত করবে যেন তুমি তাঁকে দেখছো। আর তুমি যদি তাঁকে না-ও দেখো, তিনি তোমাকে অবশ্যই দেখছেন”। আগন্তুক এবার বললেন, “আমাকে ক্বিয়ামাত সম্পর্কে বলুন।” উত্তরে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ বিষয়ে যাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে তিনি প্রশ্নকারীর চাইতে অধিক কিছু জানেন না।” আগন্তুক বললেন, “তবে ক্বিয়ামাতের নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে বলুন।” নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “ক্বিয়ামাতের নিদর্শন হল, দাসী তাঁর আপন মনীবকে প্রসব করবে, তুমি আরো দেখতে পাবে- খালি পায়ের উলঙ্গ-কাঙ্গাল মেষ চালকেরা বড় বড় দালান-কোঠা নিয়ে গর্ব ও অহংকার করবে।” ‘উমার (রাঃ) বললেন, অতঃপর আগন্তুক চলে গেলে আমি কিছুক্ষণ সেখানেই অবস্থান করলাম। পরে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, ‘উমার! প্রশ্নকারী আগন্তুক কে চিনতে পেরেছো?” আমি বললাম, আল্লাহ্‌ ও তাঁর রসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, “ইনি হচ্ছেন জিবরীল (‘আলাহিসসালাম)। তিনি তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দেবার উদ্দেশ্যে এসেছিলেন”। [মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস নং ২]

এই হাদীসে হযরত জিবরীল আমীন —আলাইহি ওয়া আলা নাবিয়্যিনা আসসালাতু ওয়াস সালাম— নবী কারীম সা.কে মোট চারটি প্রশ্ন করেছেন।
১। ইসলাম কী?
২। ঈমান কী?
৩। ইহসান কী?
৪। কিয়ামত কবে হবে?
মাদরাসায় “ঈমান” “ইলমে কালাম” এর নামে পড়ানো হয়।
“ইসলাম “ইলমে ফিক্বহের” নামে পড়ানো হয়। “ইহসান” “তাসাউফ বা সুফিযম” এর নামে পড়ানো হয়।
(এটা গত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালের দারুল উলূম কানাইঘাট মাদরাসার বার্ষিক জলসায় বাদ মাগরিব মাওলানা নূরুল ইসলাম অলিপুরী দা.বা. আলোচনা করলেও হাদীসটির এমন ব্যাখ্যা আমরা অনেক আগে শায়খে দুর্লভপুরী বদৌলতে জানতে পেরেছি— আলহামদুলিল্লাহ)।
এবার বুঝতে হবে, তাসাউফ বা সুফিবাদ হল নিয়ত সংশোধনের নাম। আর ইহসান বা সুফিবাদ হল ঈমান (আক্বাইদ) এবং ইসলামের (আমল) প্রাণ ও নির্যাস। যদি আক্বিদা বিশ্বাসে নিয়ত সঠিক না হয় তবে তা ভন্ডামি, আর যদি আমলে নিয়ত সঠিক না হয় তবে তা প্রচ্ছন্ন শিরক। তাই এই তিনটি জিনিস একজন মুমিনের জন্য আবশ্যক। একটি ছাড়া অন্যটি অর্জন হবে না।

মুহতারাম হাযিরীন!
পশু প্রবৃত্তি দমন করে আল্লাহর সিফাত ও গুণাবলীতে নিজেকে সুশোভিত করে তোলাতেই নিহিত মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব। আত্মা ও চারিত্রিক পরিশুদ্ধির মাধ্যমে পরম প্রিয়তম বিশ্ব স্রষ্টার মাঝে আত্মলীন হওয়াতেই মানুষের চরম সফলতা। আর এই পথ নির্দেশের উদ্দেশ্যেই মূলতঃ প্রেরিত হয়েছিলেন হাজারো লাখো আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম। আম্বিয়া, সিদ্দীকীন, শুহাদা ও সালেহীন অনুসৃত এই পরিশুদ্ধ এবং অনন্ত অস্তিত্বে সত্তালীন হওয়ার প্রশিক্ষণ পদ্ধতিই সুলুক ও তাসাওউফ নামে পরিচিত। কুরআন ও হাদীসে ইহাকে তাযকিয়া ও ইহসান নামেও অভিহিত করা হয়েছে।

এবার মাওলানা মওদুদী সাহেব আসলেন!
তিনি ঈমান ও ইসলাম গ্রহণ করলেন। কিন্তু তিনি সুফিবাদ বা ইহসান সম্পর্কে বললেন যে “এটি আফিমের মতো এক প্রকার নেশা” ও “মাদকাসক্তি” সৃষ্টিকারী দ্রব্যের ন্যায়।
তাসাউফ যাকে আল্লাহর রাসূল সা. ঈমান ও ইসলামের জন্য অপরিহার্য বলে বর্ণনা করেছেন, মহামান্য মওদুদী সাহেব সেটাকে আফিমের সাথে তুলনা করেছেন। আর এই দৃষ্টিভঙ্গি শুধু তাদেরই নয়, গায়রে মুকাল্লিদরাও একই কথা বলে। তারা আরো বলে, সুফিবাদ একটা ভূত। যা জ্বিনের মতো মানুষের ওপর আছর করে। আল্লাহুল মুসতাআন!
পবিত্র কুরআনে যার উল্লেখ আছে, হাদিসে যার উল্লেখ আছে, মওদুদী সাহেব তাকে আফিম ও ভূত ঘোষণা করলেন।
হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ রহ.— যাকে গায়রে মুকাল্লিদীন ও মওদুদীরাও মহান বলে গণ্য করেন। তিনি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাতে” ইহসান সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা করেন। অধ্যায়টি এত দীর্ঘ যে, এর ব্যাখ্যা “রহমাতুল্লাহিল ওয়াসিআয়” ৩০০ পৃষ্ঠায় এসেছে।
মোটকথা, এই গোষ্ঠীর তৃতীয় ত্রুটি হল তারা ইহসান ও সুফিবাদে বিশ্বাস করে না। এটাকে তারা আফিম বা নেশা মনে করে। অথচ কুরআন-হাদীসে এত স্পষ্টভাবে যা উল্লেখ আছে, কেউ তা অস্বীকার করলে সে সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হবে কিভাবে? এটাও তাদের ভ্রষ্টতার জন্য যথেষ্ট।
পস, আব বাতাও আফইয়ুন কিয়া আওর তাসাউফ কিয়া হ্যাঁ?

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরির আরো
© All rights reserved © 2019 www.izharehaq.com
Theme Customized BY LatestNews