1. info@izharehaq.com : MZakir :
শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মুখোশ উন্মোচন (মওদূদী মতবাদ) আহলে সুন্নতের ফিক্বাহ শাস্ত্রের ইমাম: ইসলামী আমলের ক্ষেত্রে বিদয়াতীদের চক্রান্ত আহলে সুন্নতের আক্বীদামতে মহানবীর মর্যাদা: অতি ভক্তি কিসের লক্ষণ রেজভীদের চক্রান্ত হুবহু ইবনে সাবার চক্রান্তের মত: রাসূলকে আলিমুল গাইব বলা সাবায়ী চক্রান্ত: আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’ত সুবিন্যস্ত হওয়ার ইতিহাস কুরআন ও হাদীসের ভাষায় ছিরাতে মুস্তাক্বীম বা সোজা পথ: নবুওয়াত ও রিসালত: মওদুদীবাদ ইবাদত: মওদুদীবাদ কুরআন মাজীদ ও দ্বীনের সংরক্ষণ: কুরআন সংরক্ষণের অর্থ: কুরআন সংরক্ষণে খোদায়ী ব্যবস্থাপনা: মওদুদীবাদ দ্বীন কী? দ্বীনে নূহ: দ্বীনে ইব্রাহীম: দ্বীনে ইসমাঈল: দ্বীনে ইউসুফ: দ্বীনে মূসা: দ্বীনে ঈসা: মওদূদীবাদ মওদুদী সাহেবের শিক্ষা-দীক্ষার পরিধি গোয়েবলসীয় নীতি : হিটলারের ঐ মুখপাত্রও ”জামাত-শিবিরের মিথ্যাচারের কাছে হার মানায়”: পর্ব ১ ইক্বামাতে দ্বীনের তাৎপর্য এবং বাতিলপন্থীদের বিকৃত ব্যাখ্যা সাহাবাগণ রাঃ সত্যের মাপকাঠি এবং তাদের ইজমা সর্বসিদ্ধান্ত মতে শরীয়তের দলীল সাহাবা রাঃ গণ সত্যের মাপকাঠি খোলাফায়ে রাশেদীনগণের সোনালী আদর্শ সর্বসম্মতিক্রমে শরিয়তের দলীল শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: “তাঁরাই সত্যের মাপকাঠি” শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: সাহাবায়ে কেরাম “সত্যের মাপকাঠি: মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৬ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৫

শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: “তাঁরাই সত্যের মাপকাঠি”

নাম:
  • আপডেট সময় : শনিবার, ৯ মার্চ, ২০২৪
  • ২৪৭ বার পড়া হয়েছে

শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: “তাঁরাই সত্যের মাপকাঠি”

মাওলানা নুরুল ইসলাম শ্রীপুরী

“তাঁরাই সত্যের মাপকাঠি”

শায়খ আলীমুদ্দীন দুর্লভপুরী শিবনগর মসজিদের কোন এক জলসায় বলেছিলেন,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আগে প্রত্যেক নবীকে একটি নির্দিষ্ট জাতির কাছে পাঠানো হতো। বুখারী শরীফে আছে: হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন,
‎وكان النبي يبعث إلى قومه خاصة وبعثت إلى الناس عامة
“প্রত্যেক নবীকে তাঁর নির্দিষ্ট জাতির কাছে পাঠানো হয়েছে এবং আমাকে সকলের প্রতি পাঠানো হয়েছে”।
যেহেতু সে সময় নবুওয়াতের ধারা অব্যাহত ছিল, তাই এক নবীর পর অন্য নবী তাঁর স্থলাভিষিক্ত হতেন। এখন সেই সোনালী ধারা ও শৃঙ্খল বন্ধ হয়ে গেছে। তাই নবীর উম্মতকেও বাণী পৌঁছে দেওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার তরফ থেকে পাঠানো হয়েছে।
সাহীহাইনে (বুখারী ও মুসলিম) একটি হাদিস আছে:
کانت بنو اسرائیل تسوسھم الأنبیاءُ، کلما ھلک نبي خلفه نبي، و إنه لا نبي بعدي و سيكون بعدي خلفاء فيكثرون.
অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বানী ইসরাঈলদের (দ্বীন ও দুনিয়া উভয়ের কাজ) পরিচালনা করতেন নবীগণ। যখনই কোন নবী মারা যেতেন, তখনই অন্য আর এক নবী তাঁর প্রতিনিধি হতেন। (জেনে রাখ) আমার পর কোন নবী নেই, বরং আমার পর অধিক সংখ্যায় খলীফা হবে।’’
উপর্যুক্ত হাদীস থেকে বুঝা গেল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরে তাঁর স্থলাভিষিক্ত ও উত্তরাধিকারী হবেন তাঁর উম্মত। আর সেই উত্তরাধিকারীদের প্রথম সারীতে রয়েছেন সাহাবায়ে কেরাম রা.।

দলীল:
সাহাবায়ে কেরামগণ রা. যে আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক বিশেষভাবে প্রেরিত তা আমরা কুরআন হাদীসের অসংখ্য দলীলের মাধ্যমে বুঝতে পারি। তন্মধ্যে কুরআন থেকে একটি দলীল হচ্ছে:
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াত সর্বজনীন ও চিরন্তন”।
সূরা সাবার ২৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে:
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
“আর আমি তোমাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য সুসংবাদ দাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী রূপে পাঠিয়েছি। কিন্তু বেশীর ভাগ লোক জানে না’’।
অর্থাৎ, আরব হোক বা অনারব, বর্তমান হোক বা ভবিষ্যতে যারা আসবে— সবার কাছেই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রেরিত হয়েছেন। স্বয়ং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য সকল স্থানে দাওয়াত পৌঁছানো কঠিন ব্যাপার ছিল। তাই নবী সা. এর দাওয়াত ও তাবলীগের মিশনকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
এক. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সরাসরি আরব উপদ্বীপের অধিবাসীদের কাছে প্রেরিত হয়েছেন।
দুই. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উম্মী বা নিরক্ষর সাহাবীদের মাধ্যমে পৃথিবীর বাকি সব দেশে প্রেরিত হয়েছেন। অতএব, জামাআতে সাহাবাও প্রেরিত এবং এটিও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিশনের কারণে। এভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিশন দ্বিগুণ হয়ে গেল।
সূরা আল-জুমআর ২ থেকে ৪ নম্বর আয়াতে রাসুল (সা.)-এর উম্মতকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে:
هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِنْ كَانُوا مِنْ قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُبِينٍ * وَآخَرِينَ مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُوا بِهِمْ ۚ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ * ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ

১। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসূল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য থেকে, যিনি তাদের কাছে তেলাওয়াত করেন তাঁর আয়াতসমূহ: তাদেরকে পবিত্র করেন এবং তাদেরকে শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত, যদিও ইতোপূর্বে তারা ছিল ঘোর বিভ্ৰান্তিতে।

২। এবং তাদের মধ্য হতে অন্যান্যদের জন্যও যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

৩। এটা আল্লাহরই অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছে তিনি এটা দান করেন। আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহের অধিকারী।
আয়াতে বর্ণিত آخرين এর শাব্দিক অর্থ ‘অন্য লোক’। আর لَمَّا يَلْحَقُوا بِهِمْ এর অর্থ যারা এখন পর্যন্ত তাদের অর্থাৎ, নিরক্ষরদের সাথে মিলিত হয়নি। কিন্তু এরা কারা যাদেরকে আয়াতে “অন্য লোক” বলা হয়েছে? এ ব্যাপারে তিনটি প্রসিদ্ধ মত রয়েছে।
এক. এখানে কেয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী সকল মুসলিমকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ রাসূলকে আল্লাহ্ তা’আলা পরবর্তী সমস্ত মানুষের জন্যও রাসূল হিসেবে পাঠিয়েছেন। এতে ইঙ্গিত রয়েছে যে, কেয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী সকল মুসলিমকে প্রথম কাতারের মুমিন অর্থাৎ সাহাবায়ে-কেরামের সাথে সংযুক্ত মনে করা হবে। এটা নিঃসন্দেহে পরবর্তী মুসলিমদের জন্যে সুসংবাদ।

দুই. কেউ কেউ وآخرين শব্দটিকে أمِّيِّيْنَ এর উপর عطف করেছেন। তখন এ আয়াতের সারমর্ম এই হবে যে, আল্লাহ তা’আলা তাঁর রাসূলকে নিরক্ষরদের মধ্যে এবং তাদের মধ্যে প্রেরণ করেছেন, যারা এখনও নিরক্ষরদের সাথে মিলিত হয়নি।
তিন. কেউ কেউ وآخرين শব্দের عطف মেনেছেন وَيُعَلِّمُهُمْ এর ضمير বা সর্বনামের উপর। আর তখন আয়াতের অর্থ হবে এই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শিক্ষা দেন নিরক্ষরদেরকে এবং তাদেরকে যারা এখনও তাদের সাথে মিলিত হয়নি। যারা এখনো নিরক্ষর বা ‘উন্মী’দের সাথে মিলিত হয়নি তারা নিঃসন্দেহে কিয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী বিভিন্ন দেশের মুসলিম।

এই আয়াতে “উম্মিয়্যীন” দ্বারা সেসকল আরবদের বুঝানো হয়েছে, যারা মহানবী (সা.)-এর সময় আরব উপদ্বীপে বসবাস করত। যাদের অধিকাংশই ছিল হজরত ইসমাইল (আ.)-এর সন্তান এবং নিরক্ষর ছিল। তাদের কাছে রাসূলুল্লাহ— সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম— সরাসরি প্রেরিত হয়েছিলেন। এজন্য রাসূলুল্লাহ— সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম— এর এক উপাধী “আন-নাবিয়্যুল উম্মী”।

আর ওয়াও দ্বারা عطف এর ক্ষেত্রে معطوف ও معطوف عليه এর মধ্যে এক হিসেবে اتحاد বা ঐক্য এবং থাকে। এবং এক দিক বিবেচনায় مغايرت বা বৈপরীত্য থাকে। এখানে اتحاد বা ঐক্য এই কারণে যে, আরব এবং অনারবরা উভয়েই নবীর উম্মত। এবং مغايرت বা বৈপরীত্য হল এই কারণে যে, নবী সা. প্রথম দলের প্রতি সরাসরি এবং দ্বিতীয় দলের প্রতি পরোক্ষভাবে অর্থাৎ উম্মী উম্মতের মাধ্যমে প্রেরিত হয়েছেন। সুতরাং সাহাবায়ে কেরামকেও আল্লাহ তায়ালা নির্বাচন করে পাঠিয়েছেন।
সুতরাং, যখন উম্মীদের মধ্যে নবী— সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর কাজ সমাপ্ত হল এবং আরব উপদ্বীপের অধিবাসীরা দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করতে শুরু করল, তখন সূরা আল নাসর নাযিল হল এবং নবী- সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম- কে জানানো হল আখেরাতের প্রস্তুতি শুরু করার জন্য। দুনিয়াতে আপনার কাজ ও দায়িত্ব শেষ হয়ে গেছে। পরবর্তী কাজ সাহাবায়ে কেরামই সামলাবেন। কারণ, তাঁরা আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত।
সূক্ষ দৃষ্টিতে থাকালে এটাও সাহাবায়ে কেরামের “সত্যের মাপকাঠি” হওয়ার একটি দলীল।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরির আরো
© All rights reserved © 2019 www.izharehaq.com
Theme Customized BY LatestNews