1. info@izharehaq.com : MZakir :
শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মুখোশ উন্মোচন (মওদূদী মতবাদ) আহলে সুন্নতের ফিক্বাহ শাস্ত্রের ইমাম: ইসলামী আমলের ক্ষেত্রে বিদয়াতীদের চক্রান্ত আহলে সুন্নতের আক্বীদামতে মহানবীর মর্যাদা: অতি ভক্তি কিসের লক্ষণ রেজভীদের চক্রান্ত হুবহু ইবনে সাবার চক্রান্তের মত: রাসূলকে আলিমুল গাইব বলা সাবায়ী চক্রান্ত: আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’ত সুবিন্যস্ত হওয়ার ইতিহাস কুরআন ও হাদীসের ভাষায় ছিরাতে মুস্তাক্বীম বা সোজা পথ: নবুওয়াত ও রিসালত: মওদুদীবাদ ইবাদত: মওদুদীবাদ কুরআন মাজীদ ও দ্বীনের সংরক্ষণ: কুরআন সংরক্ষণের অর্থ: কুরআন সংরক্ষণে খোদায়ী ব্যবস্থাপনা: মওদুদীবাদ দ্বীন কী? দ্বীনে নূহ: দ্বীনে ইব্রাহীম: দ্বীনে ইসমাঈল: দ্বীনে ইউসুফ: দ্বীনে মূসা: দ্বীনে ঈসা: মওদূদীবাদ মওদুদী সাহেবের শিক্ষা-দীক্ষার পরিধি গোয়েবলসীয় নীতি : হিটলারের ঐ মুখপাত্রও ”জামাত-শিবিরের মিথ্যাচারের কাছে হার মানায়”: পর্ব ১ ইক্বামাতে দ্বীনের তাৎপর্য এবং বাতিলপন্থীদের বিকৃত ব্যাখ্যা সাহাবাগণ রাঃ সত্যের মাপকাঠি এবং তাদের ইজমা সর্বসিদ্ধান্ত মতে শরীয়তের দলীল সাহাবা রাঃ গণ সত্যের মাপকাঠি খোলাফায়ে রাশেদীনগণের সোনালী আদর্শ সর্বসম্মতিক্রমে শরিয়তের দলীল শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: “তাঁরাই সত্যের মাপকাঠি” শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: সাহাবায়ে কেরাম “সত্যের মাপকাঠি: মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৬ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৫

খোলাফায়ে রাশেদীনগণের সোনালী আদর্শ সর্বসম্মতিক্রমে শরিয়তের দলীল

মুফতী মাওলানা ইব্রাহীম খান
  • আপডেট সময় : রবিবার, ১০ মার্চ, ২০২৪
  • ৩০৯ বার পড়া হয়েছে

হযরত নবী করীম (সঃ) এর সাহচার্য্য এবং সান্নিধ্যপ্রাপ্ত হযরতগণের প্রত্যেকই স্ব স্ব অবস্থানে ভবিষ্যৎ উম্মতের জন্য হেদায়েতের সূর্য উজ্জ্বল তারকা এবং আসমানী এলেমের পূর্ণিমা চন্দ্রতুল্য। কিন্তু এ কথা অনস্বীকার্য যে হযরত নবী করীম (সঃ) থেকে খলিফা চতুষ্টয় যে সাহচার্য্য লাভ করেছেন সমষ্টিগতভাবে অন্য কারও পক্ষে তা সম্ভব হয়নি এবং তাদের অস্তিত্ব বলেই আল্লাহর এ অঙ্গীকার পূরণ হয়েছে।

وَعَدَ اللهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَعَمِلُوا الصَّلِحَاتِ ليَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَى لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّ هُمْ مِنْ بَعْدِ خَوْفِهِمْ آمَنَّا يَعْبُدُونَنِي لَا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا وَ مَنْ كَفَرَ بَعْدَ ذَالِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ ١٢

سورة نور آية٥٥.

অর্থ: তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎ কর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসন কর্তৃত্ব দান করিবেন। যেমন তিনি শাসন কর্তৃত্ব দান করেছেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই ভয়ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে শান্তি দান করবেন। তারা আমার এবাদত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না। এরপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে তারাই অবাধ্য।
(সূরা নূর-৫৫ আয়াত)

ইস্তিখলাফ শব্দটির মধ্যে এ কথার ইঙ্গিত বহন করে যে, হযরত সাহাবা (রাঃ) কেবল দুনিয়াবী রাজা বাদশাহর মত ছিল না বরং তারা হযরত (সঃ) স্থলাভিষিক্ত হয়ে আসমানী সাম্রাজ্যের প্রচার প্রসারকারী এবং সত্য ধর্মের ভিত্তি স্থাপনকারী যারা সর্বস্তরে ইসলাম ধর্মের ছাঁচে চলতে কৃতার্থ হয়েছিলেন। এমনকি তখন কাফেরদের মোকাবেলায় মুসলমানদের ভয় ও ভীতি বলতে কিছুই অবশিষ্ট ছিল না তারা প্রসন্নচিত্তেএবং নিরাপত্তায় থেকে আপন প্রভুর ইবাদত পালনে লিপ্ত ছিলেন। তাদের ইবাদতের মাহাত্মা ছিল এমন যে, তাদের ইবাদত বন্দেগীর মধ্যে শিরকে জলি (প্রকাশ্য শিরীক) তো দূরের কথা শিরকে খফির (সূক্ষ শিরীক) লেশমাত্রও ছিল না। একথা তো ইনসাফ এবং অনুমানের সম্পূর্ণ বহির্ভুত যে, তাদেরকে আল্লাহ পাক তার সত্যে দ্বীনের প্রচার প্রসারের জন্য দুনিয়ার খেলাফত এবং প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব দান করবে আর তারা আল্লাহ এবং রসূলের নিকট বিশ্বস্ততা ও নির্ভর যোগ্য হওয়ার ব্যাপারে আস্তামান। এ কারণেই হযরত নবী করীম (সঃ) তাদেরকে সত্যের মাপকাঠি স্বীকৃতি দিয়ে আমাদেরকে তাদের আনুগত্য ও অনুকরণ করার জন্য হুকুম করেছেন। যেমন- হযরত ইরবাজ ইবনে ছারিয়া থেকে বর্ণিত আছে, যে হযরত নবী করীম (সঃ) ফরমাইয়াছেন-

অর্থ: সুতরাং আমার পর তোমাদের মধ্যে থেকে যারা দুনিয়ায় জীবিত থাকবে তারা দ্বীনের ব্যাপারে অনেক মতভেদ এবং মত-পার্থক্য প্রত্যক্ষ করিবে। সুতরাং সেই করুণ মুহুর্তে ও মর্মাহত অবস্থায় তোমরা আমার সুন্নত এবং খোলাফায়ে রাশিদ্বীনের সুন্নতকে মজবুত করে মাড়ির দাঁত দিয়ে আঁকড়িয়ে ধরে রাখবে এবং ধর্মের ব্যাপারে প্রত্যেক নতুন আবিষ্কৃত কাজ থেকে দূরে থাকবে। কেননা প্রত্যেক নতুন কাজই বেদআত এবং প্রত্যেক বেদআতই পথভ্রষ্টতা। মুসলিম শরিফের এক রেওয়ায়েতে আছে প্রত্যেক গোমরাহী জাহান্নামী হবে। (মেশকাত, পৃষ্ঠা-৩০)

হযরত মোল্লা আলী দ্বারী (রঃ) এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন-
فَإِنَّهُمْ لَمْ يَعْمَلُهُ إِلَّا بِسُنَّتِهِمْ فَإِضَافَةُ إِلَيْهِمْ إِمَّا بِعَليهِمْ بِهَا أَوْ لِاسْتِنْبَاطِهِمْ وَاخْتِيَارِهِمْ إِيَّاهَا
مرقات ج ۱ ص ۳۰ .

অর্থ : কেননা প্রকৃতপক্ষে খোলাফায়ে রাশেদ্বীন হযরত নবী করীম (সঃ) -এর সুন্নত মোতাবেকই আমল করেছেন এবং তাদের দিকে সুন্নতের সম্পর্ক হয়ত এ জন্য করা হয়েছে যে, তারা এর উপর সঠিকভাবে আমল বাস্তবতা প্রমাণ করেছেন অথবা এজন্যও হতে পারে যে, তারা নিজেরাই চিন্তা ও ইস্তেমবাত করে ইহাকে গ্রহণ করেছেন। মেরকাত ১/৩০

এর দ্বারা এ কথা প্রমাণিত হয় যে, খোলাফায়ে রাশেদীন যে সমস্ত কাজ নিজের প্রজ্ঞা, কিয়াস ও ইজতেহাদ এবং ইস্তেমবাতের মাধ্যমে অনুধাবন করে দ্বীন হিসাবে গ্রহণ করেছেন ইহাই সুন্নত এবং জনাবে রসুল (সঃ)-এর ইরশাদ অনুসারে উম্মতের জন্য ইহা অভিনন্দন পূর্বক সাদরে গ্রহণ করা ব্যতীত অন্য কোন বিকল্প পথ নেই বরং উক্ত সুন্নত গ্রহণ করার ব্যাপারে সকলেই শৃঙ্খলিত। এবং শাহ আঃ হক সাহেব মোহাদ্দেছ দেহলভী (রঃ) মৃত ১০৫২ হিঃ বর্ণিত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন-

অর্থাৎ যদি মোটামুটিভাবে সুন্নত বলতে সাধারণত সাহাবা (রাঃ) তাবেয়ীন এবং তাবে তাবিয়ীনগণের কথা এবং আমলকে বুঝানো হয় কিন্তু প্রকৃত সুন্নত বলতে এটাকেই বুঝাতে হবে যা উপরে বর্ণিত হয়েছে। জামেউল উলুম ওয়াল হিকম ১/১৯১ এই জন্য সায়্যেদেনা শায়েখ আবদুল কাদের জিলানী হাম্বলী (রঃ) মৃত ৫৬১ হিঃ আহলে সুন্নত ওয়াল জমাতের সংজ্ঞা এইভাবে বর্ণনা করেছেন।

অর্থ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাতকে আনুগত্য ও অনুসরণ করা মোমেন ব্যাক্তির জন্য অপরিহার্য্য সুন্নত ইহাকে বলা হয় যা হুজুরে নুর (সঃ) এর কথায় এবং কাজের মাধ্যমে স্বীকৃত হয়েছে এবং জামাত বলা হয় ঐ সমস্ত আহকামের সমষ্টি যার উপর ইমাম চতুর্থদ্বয়ের খেলাফতামলে সমস্ত সাহাবা (রাঃ) গণ সর্বসম্মতিক্রমে একমত হয়েছেন এবং ইহাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত। ঐ দল অর্থাৎ জমাত যারা প্রত্যেক প্রকার বেদয়াত ও নতুন কাজ থেকে সম্পূর্ণ, পাক ও পবিত্র। গুনয়াতুত্বালেবীন ১৯৮ পৃঃ (লাহর প্রকাঃ) সুতরাং আল্লামা সায়্যেদুস সনদ, আলী ইবনে মোহাম্মদ আল জুর জানি হানফী মৃতঃ ৮১৬ হিঃ লিখেন-

أَهْلُ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ وَمَذْهَبُهُمْ خَالٍ عَنْ بِدَعِ هُؤُلاءِ
۱۲ شرح موافق ص ٧٦٢ .

অর্থাৎ আহলে সুন্নত ওয়াল জমাতের দল এমন, যাদের ধর্ম বেদ’আত থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ও পবিত্র। (শরহে মুয়াফেক ৭৬২) মোট কথা খোলাফায়ে রাশিদীন সমস্ত উম্মতের জন্য দলীল এবং তাদের অনুসরণ ও অনুকরণ করা সকলের জন্য অপরিহার্য তাদের খেলাফতের যমানায় যে বিষয়ের উপর সাহাবা (রাঃ) গণ একমত হয়েছেন তা শায়খ সাহেব (রঃ)-এর কথা মতে জমাতের অর্থ এবং অনুসরণ ব্যতিরেকে আহলে সুন্নত ওয়াল জমাতের অর্থ কিছুতেই আদায় হইতে পারে না।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরির আরো
© All rights reserved © 2019 www.izharehaq.com
Theme Customized BY LatestNews