1. info@izharehaq.com : MZakir :
শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মুখোশ উন্মোচন (মওদূদী মতবাদ) আহলে সুন্নতের ফিক্বাহ শাস্ত্রের ইমাম: ইসলামী আমলের ক্ষেত্রে বিদয়াতীদের চক্রান্ত আহলে সুন্নতের আক্বীদামতে মহানবীর মর্যাদা: অতি ভক্তি কিসের লক্ষণ রেজভীদের চক্রান্ত হুবহু ইবনে সাবার চক্রান্তের মত: রাসূলকে আলিমুল গাইব বলা সাবায়ী চক্রান্ত: আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’ত সুবিন্যস্ত হওয়ার ইতিহাস কুরআন ও হাদীসের ভাষায় ছিরাতে মুস্তাক্বীম বা সোজা পথ: নবুওয়াত ও রিসালত: মওদুদীবাদ ইবাদত: মওদুদীবাদ কুরআন মাজীদ ও দ্বীনের সংরক্ষণ: কুরআন সংরক্ষণের অর্থ: কুরআন সংরক্ষণে খোদায়ী ব্যবস্থাপনা: মওদুদীবাদ দ্বীন কী? দ্বীনে নূহ: দ্বীনে ইব্রাহীম: দ্বীনে ইসমাঈল: দ্বীনে ইউসুফ: দ্বীনে মূসা: দ্বীনে ঈসা: মওদূদীবাদ মওদুদী সাহেবের শিক্ষা-দীক্ষার পরিধি গোয়েবলসীয় নীতি : হিটলারের ঐ মুখপাত্রও ”জামাত-শিবিরের মিথ্যাচারের কাছে হার মানায়”: পর্ব ১ ইক্বামাতে দ্বীনের তাৎপর্য এবং বাতিলপন্থীদের বিকৃত ব্যাখ্যা সাহাবাগণ রাঃ সত্যের মাপকাঠি এবং তাদের ইজমা সর্বসিদ্ধান্ত মতে শরীয়তের দলীল সাহাবা রাঃ গণ সত্যের মাপকাঠি খোলাফায়ে রাশেদীনগণের সোনালী আদর্শ সর্বসম্মতিক্রমে শরিয়তের দলীল শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: “তাঁরাই সত্যের মাপকাঠি” শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: সাহাবায়ে কেরাম “সত্যের মাপকাঠি: মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৬ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৫

আহলে সুন্নতের আক্বীদামতে মহানবীর মর্যাদা: অতি ভক্তি কিসের লক্ষণ

মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী
  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০২৪
  • ১১৪ বার পড়া হয়েছে


আহলে সুন্নতের আক্বীদামতে মহানবীর মর্যাদা



রেজভীরা মহানবী সা.-এর মর্যাদা বর্ণনার ক্ষেত্রে আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’তের আক্বাইদের কিতাবাদির পরিবর্তে কুখ্যাত সাবায়ী যুক্তির চাপাবাজিকেই হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। যা এতক্ষণ আলোচনা করা হল।
অথচ আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’তের কোন আক্বীদা কারো চাপাবাজি বা মনগড়া যুক্তি দ্বারা প্রমাণিত হয় না; বরং প্রমাণিত হয় শুধুমাত্র সুন্নতে রাসূল এবং জমা’তে সাহাবা দ্বারা, যা আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’তের নামকরণের দ্বারাই দিবালোকের মত উজ্জ্বল। তাই এখানে আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’তের কিতাবাদির বিবরণ মতে মহানবী সা.-এর মর্যাদা সম্পর্কে সামান্য আলোকপাত করা হচ্ছে।
এ মর্মে শরহে আক্বাইদে উল্লেখ আছে:-
أفضل الأنبياء محمد – عليه السلام لقوله تعالى: كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ للناس، ولاشك أن خيرية الأمة بحسب كمال لهم في الدين، وذلك تابع الكمال نبيهم الذي يتبعونه.
অর্থাৎ, হযরত মুহাম্মদ সা. সর্বশ্রেষ্ঠ নবী। কারণ আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন, তোমরা শ্রেষ্ঠ উম্মত…। আর এতে কোন সন্দেহ নেই যে, উম্মত শ্রেষ্ঠ হয় তাদের ধর্ম পরিপূর্ণ হওয়ার মাধ্যমে। আর ধর্মের পরিপূর্ণতা নির্ভর করে তাদের অনুসরণীয় নবীর পূর্ণতার উপর। (১)
এর ব্যাখ্যায় নিবরাসে লেখা আছে:-
كقوله عليه السلام: إن الله فضلني على الأنبياء. أو قال: أمتي على الأمم.
অর্থাৎ, তিরমিযী শরীফে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সা. বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাকে সকল নবীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন, আর আমার উম্মতকে সকল নবীর উম্মতের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন । (২)

(১) শরহে আকাইদঃ ১০৩।
(২) তিরমিযী শরীফ: হাদীস নং-১৬৩৯।

তারপরে লেখা আছে:-
أنا سيد الناس يوم القيامة.
অর্থাৎ, সহীহ মুসলিম শরীফের বর্ণিত হাদীসে রাসূল সা. বলেন, আমি হব কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষের সরদার (১)
তারপরে উল্লেখ আছে:-
أنا أكرم ولد آدم على ربي ولا فخر.
অর্থাৎ, আল্লাহ পাকের মেহেরবানিতে আমি গোটা আদম জাতির চেয়ে অধিক সম্মানিত। এটা আমার অহংকার নয়। (বরং তোমাদের অবগতির জন্য বলছি।) এটা তিরমিযী ও দারেমীর বর্ণনা (২)
তারপরে লেখা আছে:-
إذا كان يوم القيامة كنت إمام النبيين وخطيبهم وصاحب شفاعتهم غير فخر
অর্থাৎ, তিরমিযী শরীফে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সা. বলেন, যখন কিয়ামতের দিন আসবে, তখন আমি সমস্ত নবীর ইমাম হব এবং তাঁদের ভাষণদানকারী ও শাফায়াতকারী হব। এটা আমার অহংকার নয় (৩)
মহানবী সা.-এর মর্যাদা বর্ণনায় ইমাম তাহাবী র. তাঁর বিশ্বনন্দিত আক্বাইদ গ্রন্থ আক্বীদাতুত তাহাবীতে লেখেন:-
وإن محمدا صلى الله عليه وسلم عبده المصطفى ونبيه المجتبى ورسوله المرتضى، وأنه خاتم الأنبياء وإمام الأتقياء وسيد المرسلين وحبيب رب العالمين وكل دعوة نبوة بعد نبوته غي وهوى، وهو المبعوث إلى عامة الجن وكافة الورى.

(১) মুসলিম শরীফ: হাদীস নং-৫০১ ও ৫০২।
(২) তিরমিযী শরীফ: হাদীস নং-৩৯৬৯।
(৩) তিরমিযী শরীফ: হাদীস নং-৩৯৭৩।

অর্থাৎ, হযরত মুহাম্মদ সা. আল্লাহর মনোনীত বান্দা, সম্মানিত নবী এবং পছন্দনীয় রাসূল। আর তিনি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী এবং সমস্ত আল্লাহ ওয়ালাদের ইমাম, সমস্ত নবী রাসূলের সরদার, রাব্বুল আলামীনের বন্ধু। আর তাঁর নবুওতের পর যে কোন প্রকার নবুওতের দাবি ভ্রান্ত এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ। তিনি সমস্ত মানব দানবের প্রতি প্রেরিত ।(১)
এর ব্যাখ্যায় উপমহাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দারুল উলূম দেওবন্দ এর সাবেক মহা পরিচালক আল্লামা ক্বারী তৈয়ব সাহেব র. লেখেন:-
وهو – صلى الله عليه وسلم أول نقطة الفيض الإلهي في العالم علما وخلقا وجمالا، ورتبة وشرفا وكمالا …. فهو أولهم خلقا وأخرهم بعثا.
অর্থাৎ, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা. জগৎ সৃষ্টি, এর জ্ঞান, সৌন্দর্য, স্তর, মর্যাদা ও পরিপূর্ণতায় আল্লাহর অনুগ্রহের প্রথম কেন্দ্রবিন্দু।…. তিনি সর্বপ্রথম সৃষ্ট এবং সর্বশেষে প্রেরিত। (২)
অতঃপর তিনি লেখেন:-
قدم من كمالاته العبدية؛ لأنها أفضل المقامات، وأساس جميع الكمالات فكلما ازداد العبد تحققا في العبدية ازداد كماله وعلت درجته، وكان صلى الله عليه وسلم على الذروة العليا عن هذا الكمال.
অর্থাৎ, ইমাম তাহাবী তাঁর অমর গ্রন্থ “আক্বীদাতুত তাহাবী” নামক কিতাবে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা.-এর মর্যাদাসমূহের মধ্যে আল্লাহর বান্দা হওয়ার গুণটা সর্বপ্রথম উল্লেখ করেছেন। কারণ এটাই সর্বশ্রেষ্ঠ স্তর এবং সকল মর্যাদার মূল ভিত্তি। তাই বান্দা বাস্তবিক অর্থে আল্লাহর বন্দেগীতে যতই অগ্রসর হতে থাকে ততই তার মর্যাদা বাড়তে থাকে এবং তার স্তর উন্নত হতে থাকে। আর মহানবী সা.-এ স্তরের সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণ করেছেন। (৩)

(১) দরসে আক্বীদাতুত্ তাহাবী: ২৭-৩০।
(২) আল হাওয়াশী ওয়ায যিয়াদাত: ৪৮।
(৩) প্রাগুক্ত।)

অতঃপর লেখেন:-
ولذا ذكره الله سبحانه في أشرف المقامات.
অর্থাৎ, এ জন্যই আল্লাহ পাক মহানবীর উচ্চ মর্যাদার বিবরণগুলিতে বান্দা শব্দটি ব্যবহার করেছেন। যেমন:-
(ক) আল্লাহ বলেন :-
سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْده
অর্থাৎ, পবিত্র সেই আল্লাহ, যিনি তাঁর বান্দাকে রাত্রিকালীন ভ্রমণে (মে’রাজে) নিয়ে গেলেন। (১)
(খ) অন্য আয়াতে বলেন :
وَأَنَّهُ لَمَّا قَامَ عَبْدُ اللَّهِ يَدْعُوهُ
অর্থাৎ, আর যখন আল্লাহর বান্দা (হযরত মুহাম্মদ) তাঁকে ডাকার জন্য দাঁড়ালেন….. ।(২)
(গ) অন্য আয়াতে বলেন:
فَأَوْحَى إِلَى عَبْدِهِ مَا أَوْحَى
অর্থাৎ, আল্লাহ তাঁর বান্দা (হযরত মুহাম্মদ)-এর কাছে যা ওহী পাঠাবার পাঠালেন। (৩)
(ঘ) অন্য আয়াতে বলেন :-
وَإِنْ كُنْتُمْ فِي رَيْبٍ مِمَّا نَزَّلْنَا عَلَى عَبْدِنَا
অর্থাৎ, আর যদি তোমরা আমার বান্দার কাছে যা নাযিল করেছি তাতে সন্দেহ কর….।(৪)
(ঙ) অন্য আয়াতে বলেন:-
تَبَارَكَ الَّذِي نَزَّلَ الْفُرْقَانَ عَلَى عَبْدِهِ لِيَكُونَ لِلْعَالَمِينَ نَذِيرًا.
অর্থাৎ, বরকতময় সেই আল্লাহ যিনি তাঁর বান্দার উপর ফুরক্বান (পবিত্র কুরআন) নাযিল করেছেন। (৫)

(১) সূরায়ে বনী ইসরাঈল: ১।
(২) সূরায়ে জ্বীন ৪ ১৯।
(৩) সূরায়ে নজম ৪১০।
(৪) সূরাতুল বাক্বারাহ : ২৩।
(৫) সূরায়ে ফুরক্বান: ১।

অতঃপর আল্লামা ক্বারী তৈয়ব সাহেব লেখেন :-
وبذلك استحق نبينا صلى الله عليه وسلم – التقديم على جميع البشر في جميع المقامات، واستحق الأفضلية المطلقة على سائر الخلق، والسيادة العامة على ولد أدم في الدنيا والآخرة، فصار سيدا للأنبياء والمرسلين.
অর্থাৎ, আর এ কারণেই (অর্থাৎ, সবচেয়ে বেশি এবাদত করার কারণেই) আমাদের মহানবী সা. সকল ক্ষেত্রে সকল মানুষের উপর অগ্রগণ্য হওয়ার যোগ্য সাব্যস্ত হয়েছেন এবং সর্বক্ষেত্রে গোটা মানব জাতির উপর শ্রেষ্ঠত্ব ও নেতৃত্বের যোগ্য সাব্যস্ত হয়েছেন। এমনকি গোটা সৃষ্ট জগতের শ্রেষ্ঠ সাব্যস্ত হয়েছেন দুনিয়াতে এবং আখেরাতে। তাই সমস্ত নবী রাসূলের সরদার হয়েছেন। (১)
উল্লেখ্য যে, আমাদের মহানবী সমস্ত নবী রাসূলের শ্রেষ্ঠ সাব্যস্ত হওয়ার মানেই হল, তিনি ইহ-পরকালে আল্লাহর গোটা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মহামানব। কারণ, মানুষ জাতি আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে জাতিগতভাবে শ্রেষ্ঠ। আর মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হচ্ছে, মুমিনগণ। আর সাধারণ মুমিনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হলেন, আল্লাহর ওলীগণ। আর ওলীগণের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হলেন, নবী রাসূলগণ। আর নবী রাসূলের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হলেন, আমাদের মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাই তিনি সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মহামানব।
এ শ্রেষ্ঠত্বের প্রধান কারণ এবাদত। কারণ, সামগ্রিকভাবে আমাদের মহানবী সা.-এর সমপর্যায়ে আল্লাহর এবাদত করা আর কারো পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ইমাম তাহাবী র. তাঁর অমর গ্রন্থ আক্বীদাতুত্ তাহাবী নামক কিতাবে মহানবীর প্রথম গুণ তাঁর আবদিয়াত বা আল্লাহর বান্দা হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।
অতঃপর আল্লামা তৈয়ব সাহেব ইমাম তাহাবী র.-এর বাক্য “খাতামুল আম্বিয়া”-এর বর্ণনায় লেখেন:-
لقوله تعالى: مَا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِنْ رِجَالِكُمْ وَلَكِنْ رَسُولَ اللَّهِ وَخَالَمَ النبيين.

(১) আল হাওয়াশীঃ ৪৮।

অর্থাৎ, যেহেতু আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন, হযরত মুহাম্মদ সা. তোমাদের কোন পুরুষের পিতা নন, কিন্তু আল্লাহর রাসূল এবং খাতামুন নাবিয়‍্যীন। (১)
তারপর লেখেন:-
وبلغت روايات الحديث في ختم النبوة حد التواتر، فختم النبوة من ضروريات الدين، وأساس تكميلة المنصوص عليه في القرآن بقوله عزاسمه: الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ، يكفر من ينكرها أو يؤولها؛ فإن التأويل في ضروريات الدين لا يعتبر.
অর্থাৎ, খতমে নবুওত (অর্থাৎ, আমাদের মহানবী সা. শেষ নবী হওয়া) সম্পর্কে বর্ণিত হাদীসসমূহ মুতাওয়াতির (বা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত) এর পর্যায়ে পৌঁছেছে। সুতরাং খতমে নবুওত হচ্ছে ধর্মের এমন গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা অস্বীকার করা কুফর। কারণ এটাই ইসলাম পরিপূর্ণ হওয়ার ভিত্তি। যে পূর্ণতা সম্পর্কে আল্লাহ তাঁর পবিত্র কালামে বলেন, আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম। (২)
কাজেই যারা মহানবীর খতমে নবুওত অস্বীকার করবে অথবা ভিন্ন রকম ব্যাখ্যা করবে তারা কাফির। কারণ ইসলামের এমন গুরুত্বপূর্ণ অংশে কোন রকমের ব্যাখ্যা চলে না। (৩)
অতঃপর আল্লামা তৈয়ব সাহেব র. লেখেন:-
واعلم أن جميع كمالات البشر مندرجة في النبوة، وجميع كمالات النبوة في ختم النبوة، فمن يكون خاتما يكون جامعا لجميع كمالات الأولين والآخرين، بل منشأ لها بجميع البشر، وهو محمد صلى الله عليه وسلم بنص القرآن.

(১) সূরায়ে আহযাবঃ ৪০।
(২) সূরায়ে মায়েদাঃ ৩।
(৩) আল হাওয়াশীঃ ৪৯।

অর্থাৎ, আর ভালভাবে জেনে রেখ, মানুষের সকল পরিপূর্ণতা নবুওত (ননী হওয়া) এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। আর নবুওতের সকল পরিপূর্ণতা খতমে নবুওতের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সুতরাং যিনি খাতামুন নাবিয়্যীন, তিনি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের পরিপূর্ণতার সমষ্টি, বরং সকল মানুষের পরিপূর্ণতার কেন্দ্রবিন্দু। আর পবিত্র কুরআনের ভাষ্য অনুযায়ী তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ সা.)
অতঃপর আল্লামা তৈয়ব সাহেব লেখেন-
وادعى بالحالمية وحده في جماعة الأنبياء والمرسلين بقوله أنا عالم النبيين وبقوله علم في النبيون بخاتمية كان في جميع الكمالات المقصودة على منتهى حدودها علما وعملا وخلقا ومقاما ورتبة
অর্থাৎ, আর সমস্ত নবী রাসূলের মধ্যে “আমি খাতামুন নাবিয়্যীন” এবং “আমার মাধ্যমে নবীগণের সমাপ্তি ঘটানো হয়েছে” বলে তিনিই এককভাবে নিজের জন্য খাতামুন নাবিয়্যীন হওয়ার ঘোষণা দিলেন। এই ঘোষণার মাধ্যমে তিনি উদ্দীষ্ট সকল পূর্ণতা অর্থাৎ, ইলম, আমল, আখলাক, স্তর ও মর্যাদার শেষ সীমানায় উত্তীর্ণ হলেন (২)
অতঃপর লেখেন-
أما علمه، فهو جامع بجميع علوم الأولين والآخرين لقوله عليه السلام أوتيت علم الأولين والآخرين، ولكونه مصدقا لما معهم من شرائع الأنبياء والمرسلين لقوله تعالى خطابا للأنبياء: لم جَاءَكُمْ رَسُولٌ مُصَدِّقُ لِمَا مَعَكُمْ
অর্থাৎ, ইলম এর বেলায় তাঁর পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের উচ্চ স্তরে আরোহণ করার প্রমাণ হল, তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, আমাকে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের ইলম দান করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি সমস্ত নবী- রাসূলের শরীয়ত সমর্থন করেছেন। এ মর্মে স্বয়ং আল্লাহ তাঁদের সম্বোধন করে বলেন, তোমাদের কাছে এমন রাসূল আগমন করেছেন যিনি তোমাদের কাছে (ইলমে শরীয়তের) যা আছে, তা সত্যায়ন করেছেন (৩)

(১) আল হাওয়াশী: ৪৯।
(২) প্রাগুক্ত।
(৩) প্রাগুক্ত।

অতঃপর আল্লামা তৈয়ব সাহেব র. লেখেন:-
والتصديق لما معهم لا يمكن إلا بالعلم بما معهم.
অর্থাৎ, সমস্ত নবী রাসূলের কাছে যত ইলম ছিল তা তিনি একা জানতেন বলেই সত্যায়ন করেছেন। কারণ কোন কিছু না জেনে তা সত্যায়ন করার প্রশ্নই আসে না। (১)
তারপরে লেখেন :-
وأما عمله وأسوته، فجامع الجميع حسنات السابقين واللاحقين
. অর্থাৎ, আর তাঁর আমল ও আদর্শ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের পুণ্যসমূহের সমষ্টি। (২)
অতঃপর লেখেন ৪-
ولذا جعلها الله نجاة لكل من يرجو الله واليوم الآخر بعد بعثته الجميع الأقوام والأمم لقوله تعالى: لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أَسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا.
অর্থাৎ, এ জন্যই আল্লাহ তাআ’লা তাঁর আদর্শকে তাঁর আবির্ভাবের পরবর্তী এমন সকল জাতি ও উম্মতের জন্য মুক্তির উপায় সাব্যস্ত করেছেন, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পরকালের সাফল্য চায়। এ মর্মে আল্লাহ বলেন, অবশ্যই তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের সাফল্য চায় এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করে, তাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সা. এর মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। (৩)
অতঃপর লেখেন :-
وأما خلقه، فجامع الجميع مراتب الأخلاق وهو الخلق العظيم لقوله تعالى: وَإِنَّكَ لَعَلَى خُلُقٍ عَظِيمٍ.

(১) আল হাওয়াশী: ৪৯।
(২) প্রাগুক্ত।
(৩) সূরায়ে আহযাবঃ ২১।

অর্থাৎ, আর তাঁর চরিত্র সকল সৎচরিত্রের সমষ্টি। যাকে “খুলুকে আযীম” আখ্যায়িত করে আল্লাহ বলেন, আর নিশ্চয়ই আপনি খুলুকে আযীম বা মহান চরিত্রের অধিকারী । (১)
তারপর আল্লামা তৈয়ব সাহেব র. লেখেন:-
وأما مقامه ورتبته، فأخذ الله من جميع الأنبياء ميثاقهم بالإيمان به ونصرته لقوله تعالى: ثُمَّ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مُصَدِّقَ لِمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهِ وَلَتَنْصُرُلَهُ، والمكلف بالإيمان يكون من أمة من يكلف له بالإيمان، فصار الأنبياء أمة له عليه السلام.
অর্থাৎ, আর তাঁর স্তর এবং মর্যাদা হল, আল্লাহ পাক সমস্ত নবী রাসূলের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন তাঁর প্রতি ঈমান আনার জন্য এবং তাঁকে সহযোগিতা করার জন্য। এ মর্মে আল্লাহ বলেন, অতঃপর তোমাদের কাছে যদি সেই রাসূল আসেন যিনি তোমাদের শরীয়ত সমর্থন করেন, তাহলে তোমরা তাঁর প্রতি ঈমান আনবে এবং তাঁকে সাহায্য করবে। (২)
আর যে নবীর প্রতি ঈমান আনতে হয়, ঈমান আনয়নকারীরা তাঁর উম্মত হন। সুতরাং সমস্ত নবী-রাসূল মহানবীর উম্মত হলেন। (৩)
অতঃপর লেখেন:-
فصار الأنبياء أمة له عليه السلام وصار هذا النبي المختار نبيا لهم لقوله عليه السلام أنا نبي الأنبياء – كما رواه السيوطي في الخصائص – فصار سيد الأنبياء والمرسلين بمقام الخاتمية.
অর্থাৎ, কাজেই সমস্ত নবী রাসূল হলেন আমাদের মহানবী সা.-এর উম্মত, আর তিনি হলেন নবীগণের নবী। এ মর্মে রাসূল সা. হাদীস শরীফে বলেনঃ আমি নবীগণের নবী। এটা ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী র. তাঁর খাসায়েসে কুবরা নামক কিতাবে বর্ণনা করেছেন।

(১) সূরায়ে নূন ৪৪।
(২) সূরায়ে আলে ইমরান: ৮১।
(৩) আল হাওয়াশীঃ ৫০।

কাজেই খতমে নবুওয়তের মর্যাদার মাধ্যমে তিনি সমস্ত নবী-রাসূলের নবী হলেন।(১)
তারপর আল্লামা তৈয়ব সাহেব র. লেখেন:-
لأنه إمام الأنبياء، أم جميعهم في ليلة أسري به، ومن كان إماما للأنبياء يكون إماما للأتقياء بالأولى؛ لأنه ليس أحد أتقى من النبي، ولقوله عليه السلام: والله إني أخشاكم وأتقاكم الله.
অর্থাৎ, (আর ইমাম তাহাবী র. আমাদের মহানবীকে সমস্ত মুত্তাক্বীন তথা খোদাভীরুদের ইমাম বলেছেন; কারণ,) যেহেতু তিনি মেরাজের রাত্রে সমস্ত নবী-রাসূলের নামাযে ইমামতি করেছেন, তাই তিনি সমস্ত নবী- রাসূলের ইমাম সাব্যস্ত হয়েছেন। আর যিনি নবী-রাসূলের ইমাম হলেন তিনি যে, অন্যান্য মুত্তাক্বীনদের ইমাম হবেন, তা বলারই অপেক্ষা রাখে না। কারণ অন্যান্য মুত্তাক্বীগণ নবী রাসূলের চেয়ে অধিক মুত্তাক্বী হতে পারেন না। এ মর্মে রাসূলে করীম সা. বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের সকলের চেয়ে অধিক খোদাভীরু এবং পরহেযগার। (২)
অতঃপর তিনি লেখেন:-
لقوله عليه السلام أنا سيد ولد آدم يوم القيامة، ولا فخر، وبيدي لواء الحمد، ولا فخر، وما من نبي يومئذ آدم فمن سواه إلا تحت لوائي.
অর্থাৎ, (ইমাম তাহাবী র. তাঁর অমর গ্রন্থ আক্বীদাতুত্ তাহাবী কিতাবে আমাদের মহানবী সা.-কে সাইয়িদুল মুরসালীন তথা সমস্ত নবী রাসূলের সরদার বলেছেন, এর দলীল হল,) তিরমিযী শরীফে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সা. নিজেই বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমি সমস্ত আদম সন্তানের সরদার হব। তাই বলে আমি অহংকার করি না। আর সেদিন আল্লাহর প্রশংসার ঝাণ্ডা আমার হাতে থাকবে এবং আদম আ. সহ সমস্ত নবী-রাসূল থাকবেন আমার ঝাণ্ডার নিচে। এ জন্য আমি কোন অহংকার করি না। (৩)

(১) আল হাওয়াশী: ৫০।
(২) প্রাগুক্ত।
(৩) তিরমিযী শরীফ: হাদীস নং-৩৪৪১, আল হাওয়াশী: ৫১।

অতঃপর লেখেন:-
فسيادته – صلى الله عليه وسلم على جميع أولاد آدم، ومنهم الأنبياء، فإنهم من ولد آدم – تثبت من قوله سيد ولد آدم وعلى آدم بقوله: آدم فمن سواه تحت لوائي.
অর্থাৎ, পূর্বোক্ত বর্ণনা দ্বারা এ কথা পরিষ্কারভাবেই প্রমাণিত হল যে, কিয়ামতের দিন গোটা বনী আদমের উপর মহানবীর নেতৃত্ব প্রকাশিত হবে, আর নবীগণও তাদেরই অন্তর্ভুক্ত; কেননা তাঁরা সকলেই আদমের সন্তান। এর প্রমাণ রাসূল সা. বলেন, আমি গোটা আদম সন্তানের সরদার। আর স্বয়ং আদম আ.-এর উপরও মহানবীর নেতৃত্ব প্রকাশিত হবে, কেননা, তিনি বলেন, আদম আ. সহ সমস্ত নবী-রাসূল থাকবেন আমার ঝাণ্ডার নিচে। (১)
তারপর লেখেন:-
والتقييد بيوم القيامة باعتبار ظهور آثار سيادته في ذلك اليوم كل الظهور عيانا على مجموع الأولين والآخرين في وقت واحد لا أن سيادته مقيدة بيوم دون يوم، أو وقت دون وقت.
অর্থাৎ, পূর্বোক্ত বিবরণে যে বলা হয়েছে, “আমাদের মহানবী সা. এর প্রাধান্য কিয়ামতের দিন সমস্ত নবী-রাসূলের উপর প্রকাশিত হবে” এর অর্থ এ নয় যে, দুনিয়াতে তাঁর প্রাধান্য নেই, বা এক সময় আছে, অন্য সময় নেই; বরং কিয়ামতের দিনের কথা উল্লেখ করার কারণ, সেদিন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সর্বযুগের সকল মানুষ একত্রিত থাকবে। এমতাবস্থায় তাদের সকলের সামনে সামগ্রিকভাবে এবং উজ্জ্বলরূপে প্রকাশিত হবে আমাদের মহানবীর প্রাধান্য। (২)
এ পর্যন্ত আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’তের আক্বাইদের কিতাব ও তার ব্যাখ্যাগ্রস্থ হতে আমাদের মহানবী সা.-এর মাত্র দু’টি মর্যাদার বিবরণ উল্লেখ করা হল।

(১) আল হাওয়াশী: ৫১।
(২) আল হাওয়াশী ৪৫১।

এক, তাঁর আবদিয়্যত অর্থাৎ, সর্বশ্রেষ্ঠ বান্দা হওয়ার বিবরণ, দুই, তাঁর খতমে নবুওয়াত বা শেষ নবী হওয়ার বিশ্লেষণ। এছাড়া পবিত্র কুরআনের অসংখ্য আয়াত, অগণিত হাদীস এবং আক্বাইদের কিতাবাদিতে তাঁর যে সকল বৈশিষ্ট্যপূর্ণ গুণাবলির বিবরণ উল্লেখ আছে সেগুলির বিস্তারিত বিবরণ দিতে গেলে শুধুমাত্র এ বিষয়ের উপর বিশাল কলেবরের গ্রন্থ রচনার মাধ্যমেও শেষ করা যাবে না। যেমন শাফীয়ে মাহশার বা হাশরের মাঠে বিচার শুরু হওয়ার জন্য তাঁর শাফায়াতের বিবরণ, শাফীউল মুজনিবীন বা গুনাহগার উম্মতের জন্য তাঁর সুপারিশের বিবরণ, মাকামে মাহমূদ বা হাশরের মাঠে তাঁর সর্বোচ্চ আসনের বিবরণ, সাকিয়ে কাউসার বা হাউযে কাউসারের পানি পান করাবার বিবরণ, আতায়ে কাউসার বা আল্লাহ তাঁকে অগণিত নিয়ামত দান করার বিবরণ ইত্যাদি।
আমাদের মহানবী সা.-এর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ গুণাবলি থেকে উদাহরণ স্বরূপ মাত্র দু’টি গুণ ও মর্যাদার বিবরণ উল্লেখ করে আমি এ কথাটাই বুঝাতে চেষ্টা করেছি যে, আমাদের মহানবীর এমনসব আলাদা বৈশিষ্ট্যপূর্ণ মর্যাদা ও গুণ রয়েছে, যেগুলি একদিকে যেমন সুস্পষ্টভাবে তাঁকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ বুঝায়, অপরদিকে স্রষ্টা বা আল্লাহর সাথে শরীক বা অংশীদার সাব্যস্ত করে না।
কিন্তু রেজভীরা কুখ্যাত ইবনে সাবার অপকৌশল অবলম্বনে মহানবীর মর্যাদা বর্ণনার বাহানায় তাঁকে আলিমুল গাইব, হাযির-নাযির, আল্লাহর জাতি নূরের অংশ ও মুখতারে কুল বা যা ইচ্ছা তাই করার অধিকারী ইত্যাদি বলে অপপ্রচার করে বেড়ায়। যা-
প্রথমতঃ আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’তের নীতি অনুযায়ী পবিত্র কুরআন- হাদীসের বিশুদ্ধ ব্যাখ্যামতে প্রমাণিত নয়। তাই তারা টানা-হেঁচড়া করে এগুলি প্রমাণ করতে কুখ্যাত ইবনে সাবার মত মনগড়া যুক্তি এবং বাহাত্তরটি ভ্রান্ত দলের মত পবিত্র কুরআন-সুন্নাহর অপব্যাখ্যা করে থাকে।
দ্বিতীয়তঃ আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’তের নীতি (অর্থাৎ, সুন্নতে রাসূল ও জমা’তে সাহাবার আদর্শ) অনুযায়ী এসব কথা মহানবীর গুণ বলে প্রমাণিত নয় বলেই আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’তের আক্বাইদের কোন কিতাবে মহানবীর নামে এগুলোর উল্লেখই নেই। আর যেসব কথা আহলে সুন্নতের আক্বীদা বলে আহলে সুন্নতের কিতাবে উল্লেখ নেই এমন কথাকে আহলে সুন্নতের আক্বীদা বলে অপপ্রচার করা রোজভীদের সাবায়ী চক্রান্ত ছাড়া আর কিছু নয়।
তৃতীয়তঃ এসব আক্বীদা যে সুন্নী আক্বীদা নয়, শুধু তাই নয়, বরং এ সমস্ত আক্বীদা কুফ্রি এবং শিরকি আক্বীদা। যেগুলিকে সুন্নী আক্বীদা বলে প্রচার করে রেজভীরা মুসলমানদের ঈমান বিনষ্ট করার সুগভীর চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন ইতঃপূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে, আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’তের আক্বাইদের কিতাবে এ কথা পরিষ্কার ভাষায় উল্লেখ আছে, মহানবী গাইব জানেন বলে বিশ্বাস করা কুরি আক্বীদা। অথচ রেজভীরা প্রচার করে বেরাচ্ছে, এটা সুন্নী আক্বীদা। নাউযুবিল্লাহ।


অতি ভক্তি কিসের লক্ষণ


কোন নারীর জন্য তার স্বামীকে বাবা বলে ডাকা যেমন তার প্রকৃত স্বামীভক্তি নয়; বরং ভক্তির ভঙ্গিতে চরম বে-আদবী, ঠিক তেমনিভাবে উম্মতের জন্য নবীকে স্বয়ং আল্লাহর সমগুণে গুণান্বিত করে ভক্তি প্রদর্শনও প্রকৃতপক্ষে নবীভক্তি নয়; বরং তাদের অতিভক্তি চোরের লক্ষণ। তা না হলে মহানবী সা.-এর মর্যাদা ও প্রশংসায় পবিত্র কুরআন, হাদীস, তাফসীর ও আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’তের আক্বাইদের কিতাবাদি যেখানে ভরপুর, সেখানে তারা এসব বিবরণের পরিবর্তে যে গুণ পবিত্র কুরআন-সুন্নাহ ও আহলে সুন্নতের আক্বাইদের কিতাবাদিতে একমাত্র আল্লাহর গুণ হিসেবে উল্লেখ করতঃ নবীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা কুষ্ণি বলে উল্লেখ রয়েছে সে গুণে নবীকে গুণান্বিত করতে যাওয়ার মতলবটা কী? নিশ্চয়ই অতিভক্তি চোরের লক্ষণ।
তারা এহেন অতিভক্তির পরাকাষ্ঠা প্রদর্শনের মাধ্যমে মূলতঃ তাদের কতিপয় চুরিকে আড়াল করতে চায়। তারা উপমহাদেশের একটা ফতোয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের একটা ফতোয়া চুরি করেছে। এ দু’টি চুরির বিবরণ পরে আসবে (ইনশা-আল্লাহ)। সর্বোপরি এখন কুফরি আক্বীদাকে সুন্নী আক্বীদা বলে অপপ্রচারের মাধ্যমে আহলে সুন্নত ওয়াল জমা’তের নামটা পর্যন্ত চুরি করার মহাচক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। এ সমস্ত চুরি আড়াল করার লক্ষ্যেই নবীকে আল্লাহর সমগুণে গুণান্বিত করে অতিভক্তি দেখাচ্ছে। এ ধরনের চক্রান্তমূলক ভক্তিকেই বলা হয় “অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।”

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরির আরো
© All rights reserved © 2019 www.izharehaq.com
Theme Customized BY LatestNews