1. info@izharehaq.com : MZakir :
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
গোয়েবলসীয় নীতি : হিটলারের ঐ মুখপাত্রও ”জামাত-শিবিরের মিথ্যাচারের কাছে হার মানায়”: পর্ব ১ ইক্বামাতে দ্বীনের তাৎপর্য এবং বাতিলপন্থীদের বিকৃত ব্যাখ্যা সাহাবাগণ রাঃ সত্যের মাপকাঠি এবং তাদের ইজমা সর্বসিদ্ধান্ত মতে শরীয়তের দলীল সাহাবা রাঃ গণ সত্যের মাপকাঠি খোলাফায়ে রাশেদীনগণের সোনালী আদর্শ সর্বসম্মতিক্রমে শরিয়তের দলীল শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: “তাঁরাই সত্যের মাপকাঠি” শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: সাহাবায়ে কেরাম “সত্যের মাপকাঠি: মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৬ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৫ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৪ জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: ৩য় পর্ব আবুল আ’লা মওদূদী মরহুম যেভাবে হাদীস অস্বিকারকারীদের কাতারে নাম লেখালেন! মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৩ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-২ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-১ জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: ২য় পর্ব মিথ্যাচারের উপর দাঁড়িয়ে আছে কারা? কওমী শিক্ষাব্যবস্থা না জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাস? কুরআন ও হাদীসের আলোকে সাহাবায়ে কিরামের পরিচিতি ও মর্যাদা জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য মওদূদী সাহেব ও জামায়াতে ইসলামীর সাথে আলেম সমাজের বিরোধিতার প্রকৃত কারণ:

শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: সাহাবায়ে কেরাম “সত্যের মাপকাঠি:

মাওলানা নুরুল ইসলাম শ্রীপুরী
  • আপডেট সময় : শনিবার, ৯ মার্চ, ২০২৪
  • ৭৮৬ বার পড়া হয়েছে

শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: সাহাবায়ে কেরাম “সত্যের মাপকাঠি:

মাওলানা নুরুল ইসলাম শ্রীপুরী

আনতুম ও কুনতুম

বয়ানের সময়কাল: ২০১১ সাল।

স্থান: দুর্লভপুর জামে মসজিদ।

মুহতারাম হাযিরীন!

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন:
كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ ۗ وَلَوْ آمَنَ أَهْلُ الْكِتَابِ لَكَانَ خَيْرًا لَهُمْ ۚ مِنْهُمُ الْمُؤْمِنُونَ وَأَكْثَرُهُمُ الْفَاسِقُونَ
অর্থাৎ, তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে-কিতাবরা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য মঙ্গলকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী।

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা. থেকে তিনটি মত বা ব্যাখ্যা পাওয়া যায়:

১। ইবনু জারীর তাবারী ও ইবনু আবী হাতিম বিখ্যাত তাফসীর বিশারদ তাবেয়ী ইমাম সুদ্দী রহ. থেকে এ আয়াতের তাফসীরে হযরত উমর রা. এর বক্তব্য এনেছেন। হযরত উমর রা. বলেছেন,
لو شاء اللہ لقال ” أنتم ” فکنا کلُنا، ولٰکن قال: ” کنتم ” خاصةً فی اصحاب محمد ﷺ، و من صنع مثل صنیعھم کانوا خیر امة أخرجت للناس.
যদি আল্লাহ তায়ালা চাইতেন তবে أنتم خير أمة বলতেন। এতে সকল উম্মত শামিল হয়ে যেত। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা كنتم خير أمة বলে বিশেষভাবে সাহাবায়ে কেরাম ও সাহাবায়ে কেরামের রা. মত যারা চলবে তাঁরাই উত্তম উম্মত হবে এবং এদেরকেই মানুষের কল্যাণার্থে পাঠানো হয়েছে— এ কথা বুঝিয়েছেন।

২।ইমাম সুদ্দী রহ. থেকে বর্ণিত অন্য এক বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, হযরত উমর রা. বলেছেন,
قال: یکون لاوّلِنا، ولایکون لآخرنا
এ আয়াতটি আমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য অর্থাৎ সাহাবায়ে কেরামদের জন্য, পরবর্তীদের জন্য নয়।

৩। ইবনে জারীর হযরত কাতাদাহ থেকে বর্ণনা করেন (আল্লাহ তার ওপর রহম করুন):
ذُکر لنا أن عمر بن الخطاب رضی اللہ عنہ قرأ ھٰذہ الآیة ” کنتم خیر امة أخرجت للناس ” الآیة، ثم قال: یاأیھا الناس! من سرّہٗ أن یکون من تلکم الأمة فلیؤد شرط اللہ منھا
অর্থাৎ আমাদের কাছে বর্ণনা করা হয়েছে যে, হযরত উমর (রা.) এই আয়াতটি পাঠ করলেন। তারপর বললেন, তোমাদের মধ্যে যে কেউ এই উম্মাতে (খায়রুল উম্মাহ) শরীক হতে চায় সে যেন আল্লাহর শর্ত পূরণ করে।
অতপর একটি নাহবী কায়দা শুনুন! তাহলে أنتم ও كنتم এর পার্থক্য বুঝতে পারবেন। انتم خیر امة এটা জুমলায়ে ইসমিয়া খবরিয়্যাহ। যা ثبوت ও استمرار এর উপর দালালত করে। এতে যামানা বা কালের কোন সম্পর্ক নেই। যেমন: زيد قائم (যায়েদ দাঁড়ানো) এ বাক্যটি যায়েদের জন্য “দাঁড়ানোর”র ثبوت ও استمرار এর উপর দালালত করছে। কোন কাল বা যামানার উপর দালালত করেনি।
অপরদিকে کنتم خیر امة এর মধ্যে ضمير হচ্ছে كان এর اسم এবং خير أمة মুরক্কবে ইযাফী হয়ে كان এর خبر হয়েছে। এবং নাহবী কায়দা হল, كان তার উভয় معمول (অর্থাৎ اسم و خبر ) এর মধ্য থেকে তার اسم কে তার خبر এর مضمون সাথে কেবল اتصاف এর উপর দালালত করে— (অর্থাৎ কোন امر زائد বা অতিরিক্ত কোন কিছু বুঝায় না।)— এমন কাল বা যামানার সাথে যা তার সীগাহর মুনাসিব হবে অথবা তার মাসদারের মুশতাক্কাতের মধ্য থেকে বাক্যে উল্লেখিত সীগাহর মুনাসিব হবে। যদি সীগাহটি ماضي হয় তবে যামানা কেবল ماضي হবে। শর্ত হলো সীগাহটি ماضي ব্যতিত অন্য কোন যামানায় ব্যবহার করার মত কোন শব্দ থাকবে না।
আর যদি সীগাহটি فعل مضارع হয়ে থাকে তবে তা বর্তমান ও ভবিষ্যতকাল বুঝাবে। শর্ত হল, কোন হরফ যেমন لن বা لم ইত্যাদি এমন কোন হরফ থাকবে না যা তাকে বিশেষ কোন একটি কালের সাথে নির্ধারিত করে দেয়। বা তাকে ماضي বা অতীতকালের জন্য নির্ধারিত করে না দেয়। যেমন: كان الطفل جاريا তখন বলা যাবে যখন বাচ্চাটি অতীতকালে চলতে শুরু করেছিল। يكون الطفل جاريا তখন বলা যাবে যখন বাচ্চাটির চলা বর্তমান বা ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে।
(বিস্তারিত দেখার জন্য পড়ুন النحو الوافی)
এবার আয়াতটির মর্ম বুঝি!

যদি আয়াতে كنتم এর পরিবর্তন أنتم خير أمة হতো তবে খাইরিয়াত বা কল্যাণের সুবূত دوام و استمرار এর সাথে হতো এবং সকল উম্মত এতে শামিল হয়ে যেত। কিন্তু আয়াতে যেহেতু کنتم خیر امةٍ বলা হয়েছে সেহেতু আয়াত নাযিলের সময় অতীতকালে যেসকল উম্মত (সাহাবায়ে কেরাম) দুনিয়াতে ছিলেন তাদেরকে কল্যাণের গুণে গুনান্বিত করা হয়েছে। আর সেসময় যেহেতু কেবল সাহাবায়ে কেরামই ছিলেন তাই সাহাবায়ে কেরামই রা. এ আয়াতের প্রথম মিসদাক। কারণ আয়াত নাযিলের সময় কেবল সাহাবায়ে কেরামই ছিলেন। হ্যাঁ পরবর্তী উম্মতের মধ্যে যারা আয়াতের শর্ত পূরণ করবে তারাও আয়াতের মিসদাক হবে।
এবার হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা. তিন ব্যাখ্যার আলোকে মর্ম এটাই হবে যে, আল্লাহ তায়ালা এ সকল উম্মী সাহাবীদের জামাআত যারা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সরাসরি উম্মত তাদেরকে সম্বোধন করে ইরশাদ করেছেন যে, “তোমরা ইলমে এলাহিতে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে, তোমাদেরকে মানুষের কল্যাণের জন্য অস্তিত্বে আনা হয়েছে। অর্থাৎ ইসলামের সুমহান দাওয়াত নিয়ে তোমরা পৃথিবীর আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়বে। তোমাদের কর্তৃব্য যে, মানুষকে কল্যাণের দিকে আহ্বান করো, সৎ কাজের আদেশ দাও এবং অসৎ কাজ থেকে মানুষকে বাঁধা দাও। মানুষকে আল্লাহর উপর ঈমান আনার দাওয়াত দাও।

নবী কারীম সা. এর জন্য যেমন ইসমত আবশ্যক, কারণ, তা ছাড়া নবীর প্রদত্ত দ্বীন বিশ্বাস করা যায় না, তেমনি সাহাবায়ে কেরামের জন্য আদালত আবশ্যক, কারণ তারাই জাতির শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ এবং ইসলামের প্রথম মুখাতাব। তাছাড়া এক দিক বিবেচনা করলে তাঁরাই নবী সা. পরবর্তী উম্মতের প্রতি খোদা প্রেরিত ব্যক্তিবর্গ। (هم مبعوثون إلى الآخرين ) । তাই আদালত বা ন্যায়বিচার ও হিফাযত বা সুরক্ষা ছাড়া তাদের প্রদত্ত দ্বীনকে বিশ্বাস করা যায় না। এই হুকুম কুল্লির প্রতিটি ফরদের জন্য প্রযোজ্য অর্থাৎ সকল সাহাবায়ে কেরাম আয়াতের অন্তর্ভূক্ত।

নবী করীম (সাঃ) এর বাণী হল: “আমার সাহাবীগণ আকাশের নক্ষত্র সমতুল্য। তাদের যে কোন একজনকে অনুসরণ করলেই তোমরা গন্তব্যে পৌঁছাবে।”
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহাবীদের এ রকম আদালত ন্যায়বিচার হেফাযত ও সুরক্ষার নামই হল “সত্যের মাপকাঠি” বা (معيار حق )। সুতরাং, যারা মনে করেন যে, আল্লাহ ও রাসূল ছাড়া অন্য কারও মানসিক দাসত্ব বা যেহনী গোলামী জায়েজ নয়! তারা প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত রয়েছে।

তাদেরকে বলব, যাদের মাধ্যমে আপনার কাছে ধর্ম এসেছে, তারা যদি বিশ্বস্ত ও অনুকরণের যোগ্য না হন, তাহলে আপনার দ্বীনের শুদ্ধতার গ্যারান্টি কতটুকু?
মোট কথা, সাহাবীদের জামাআত এমন একটি জামাআত যাদের প্রত্যেকেই দ্বীনের ক্ষেত্রে “মাহফুয” এবং তাদের সকলেই প্রত্যেক বিশ্বাসগত গোমরাহী বা আমলগত খারাবী থেকে পূতঃ পবিত্র। কারণ তাঁরাও মহান আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত।
অতএব, সাহাবায়ে কেরাম “সত্যের মাপকাঠি”।
:
রাযিয়াল্লাহু আনহুম আজমাঈন।
:
(লেখা ও ভাষাগত দিক বিবেচনায় ঈষৎ পরিবর্তিত হয়েছ)

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরির আরো
© All rights reserved © 2019 www.izharehaq.com
Theme Customized BY Md Maruf Zakir