1. info@izharehaq.com : MZakir :
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০১:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গোয়েবলসীয় নীতি : হিটলারের ঐ মুখপাত্রও ”জামাত-শিবিরের মিথ্যাচারের কাছে হার মানায়”: পর্ব ১ ইক্বামাতে দ্বীনের তাৎপর্য এবং বাতিলপন্থীদের বিকৃত ব্যাখ্যা সাহাবাগণ রাঃ সত্যের মাপকাঠি এবং তাদের ইজমা সর্বসিদ্ধান্ত মতে শরীয়তের দলীল সাহাবা রাঃ গণ সত্যের মাপকাঠি খোলাফায়ে রাশেদীনগণের সোনালী আদর্শ সর্বসম্মতিক্রমে শরিয়তের দলীল শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: “তাঁরাই সত্যের মাপকাঠি” শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: সাহাবায়ে কেরাম “সত্যের মাপকাঠি: মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৬ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৫ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৪ জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: ৩য় পর্ব আবুল আ’লা মওদূদী মরহুম যেভাবে হাদীস অস্বিকারকারীদের কাতারে নাম লেখালেন! মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-৩ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-২ মিয়ারে হক: সত্যের মাপকাঠি: কুরআন-হাদীস এবং মওদূদী সাহিত্যের আলোকে: পর্ব-১ জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য: ২য় পর্ব মিথ্যাচারের উপর দাঁড়িয়ে আছে কারা? কওমী শিক্ষাব্যবস্থা না জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাস? কুরআন ও হাদীসের আলোকে সাহাবায়ে কিরামের পরিচিতি ও মর্যাদা জামায়াতে ইসলামী’র গোমরাহী বিষয়ক “শায়খ আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী”র ঐতিহাসিক ও তাত্বিক বক্তব্য মওদূদী সাহেব ও জামায়াতে ইসলামীর সাথে আলেম সমাজের বিরোধিতার প্রকৃত কারণ:

ইসলাম ও রাজনীতি: রাজনীতির সংজ্ঞা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বিষয়বস্তু

নাম:
  • আপডেট সময় : রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১৩৪ বার পড়া হয়েছে
ইসলাম ও রাজনীতি
রাজনীতির সংজ্ঞা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বিষয়বস্তু
সংজ্ঞা : ক.
السياسة علم يبحث فيه عن الروابط الصالحة العادلة بين الحاكم والمحكوم
والسلطان والرعايا وبين الاصم فى المساكنة والمجاورة অর্থাৎ রাজনীতি ঐ বিজ্ঞানকে বলা হয়, যে বিজ্ঞান ঐ সমস্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে আলোচনা করে যদ্বারা রাজা-প্রজা, শাসক-শাসিত এবং দেশ ও সমাজে বসবাসকারী জনসাধারণের মধ্যে পরস্পরের ন্যায় ও সৎসম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে ।
বিষয়বস্তু :
وموضوعه نفس هذه الروابط المعتبرة عنها في لسان المؤلدين بالحيات الاجتماعية
المدنية الصالحة. অর্থাৎ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ঐ সমস্ত সম্পর্ক সমূহ যা পরস্পরের মধ্যে
গড়ে উঠে, এটাকে রাজনীতিবিদদের পরিভাষায় শুভসামাজিক জীবনরূপে
অভিহিত করা হয়। সারকথা, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু হচ্ছে মানুষের সামাজিক
জীবন ।
লক্ষ্য উদ্দেশ্য :
وغرضه اصلاح الحيات الاجتماعية واقامة المعدلة بين عباد الله تعالى. অর্থাৎ সামাজিক জীবনকে বিশুদ্ধ ও কুসংস্কারমুক্ত করা এবং আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
খ. কোন কোন মনীষীর মতে রাজনীতির সংজ্ঞা, বিষয়বস্তু ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিম্নরূপ:
সংজ্ঞা :
وقيل هو علم بقوانين يصلح بها الحيات الاجتماعية الانسانية. অর্থাৎ রাষ্ট্রবিজ্ঞান ঐ বিজ্ঞানের নাম বা ঐ সমস্ত বিধি-বিধান নিয়ে আলোচনা করে যদ্বারা মানুষের সামাজিক জীবন বিশুদ্ধ ও
কুসংস্কারমুক্ত হয় ।
বিষয়বস্তু : সামাজিক জীবন-
وموضوعة الحياة الاجتماعية.
লক্ষ্য উদ্দেশ্য :
اصلاح الحياة الاجتماعية.
মানুষের সামাজিক জীবনকে বিশুদ্ধ ও কুসংস্কারমুক্ত করা।
গ.
وقال علماء اللغة السياسة استصلاح الخلق بارشادهم الى الطريق المنجي في العاجل والأجل والسياسة المدنية تدبير المعاش مع العموم على سن العدل والاستقامة كذا في المنجد قال العلامة الشامى فى الجزء الثاني من رد المختار وهذا تعريف للسياسة العامة الصادقة على جميع ما شرع الله تعالى لعباده من
الاحكام الشرعية.
অভিধান বেত্তাগণ আভিধানিক অর্থে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নিম্নরূপ সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। বিখ্যাত অভিধান গ্রন্থ ‘আল মুনজাদ’ এ বলা হয়েছে যে, মানুষকে ইহকাল ও পরকালের মুক্তির পথের প্রতি পথ প্রদর্শন করত: তাদের আত্মশুদ্ধিকরণ ও কুসংস্কারমুক্ত করনের নামই হচ্ছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান। ছিয়াছাতে মাদানিয়া বা নগর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বলা হয় স্থিতিশীলতা ও ন্যায় পন্থা অনুসরণে সর্বসাধারণের জীবিকা নির্বাহের উপযুক্ত ব্যবস্থা করাকে। আল্লামা শামী রহ. রদ্দে মুখতার নামক কিতাবের তৃতীয় খণ্ডে লিখেছেন যে, এটা ছিয়াছাতে ‘আম্মা’ বা নাগরিক রাষ্ট্র বিজ্ঞানেরই সংজ্ঞা, যা শরীয়তের বিধি-বিধানসমূহকে তার অন্তর্ভুক্ত করে।
সারকথা এই যে, ছিয়াছাত বা রাজনীতি ঐ ইলমকে বলা হয় যা রাজা-প্রজা ও শাসক-শাসিতের মধ্যে পরস্পরের ন্যায় ও সৎসম্পর্ক গড়ে তোলার উপকরণাদি সম্পর্কে আলোকপাত করে এবং তন্মধ্যে আন্তর্জাতিক ন্যায়ভিত্তিক ও মঙ্গলজনক কর্মপন্থাও পর্যালোচিত হয়। এই ইলমের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে পরস্পর আদল ও ইনসাফ কায়েম করা, যদ্বারা তাদের সামাজিক জীবন। সুন্দররূপে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে গড়ে উঠতে পারে। বস্তুত: এই ‘আদল’ই হচ্ছে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রকৃত বিষয়বস্তু। আর যে সমস্ত বিধি-বিধানের দ্বারা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে ইনসাফ কায়েম হয় তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মৌলিক বিধি-বিধান। এর উপরই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত; আবার এই বিধি-বিধান প্রণয়নে কতগুলি জরুরী বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি রাখা উচিত।
ক. ঐ সকল কানুন বা বিধি-বিধান স্বয়ং অন্যায় এবং জুলুমমুক্ত হতে হবে। খ. ঐ সমস্ত বিধান অন্যায় অবিচারের মূলোৎপাটনে সক্ষম হতে হবে। গ. তা কার্যকরী করার দ্বারা জালেম অত্যাচারীদের কর্মতৎপরতা বন্ধ হয়ে তাদের হায়াত ফুরিয়ে যেতে হবে। ঘ. তা কার্যকরী করার ফলে শান্তিপ্রিয় নাগরিকের জন্য শান্তিপূর্ণ জীবন যাপনের ব্যবস্থার নিশ্চয়তা থাকতে হবে। ৫. ঐ সকল বিধানে শান্তি ও সমৃদ্ধির এমন আকর্ষণীয় শক্তি থাকতে হবে যার প্রতি সে অন্যকেও নিজের প্রতি আকর্ষণ করতে পারে। চ. এতে মানুষের সামাজিক জীবনে সামগ্রিক কল্যাণের বিহিত ব্যবস্থা থাকতে হবে। ছ. তা এরূপ সর্বাঙ্গীন সুন্দর ও সার্বজনীন কল্যাণকর ব্যবস্থা হবে যার উপর সকল দেশের সকল জাতীয় মানুষ সকল যুগেই সমভাবেই আমল করতে পারে। জ. তার মধ্যে এমন সব বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে যে, তা অমান্য বা অস্বীকার করা হলে মানুষের তাহ্জীব ও তামাদ্দুন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যাবে, তার অনুসরণ ছাড়া মানুষের জীবন আর পশুর জীবনে কোন পার্থক্য থাকে না।
বলাবাহুল্য উল্লেখিত শর্তাবলী একমাত্র ইসলামী সমাজ ব্যবস্থাতেই রয়েছে- যা হারিয়ে মানুষ আজ পশুতে পরিণত হয়েছে।
অত:পর আমি আমার দাবীর যথার্থতা প্রমাণ করার জন্য অর্থাৎ ইসলামেও যে রাজনীতি রয়েছে তা স্বপ্রমাণিত করার জন্য নিম্নে কতিপয় উদ্ধৃতি প্রদান করে ক্ষান্ত হচ্ছি।
(1) ياايها الذين أمنوا أطيعوا الله واطيعوا الرسول و اولی الامر منكم سورة نساء ওহে ঈমানদার বিশ্বাসী বান্দাগণ! তোমরা মহান আল্লাহ্ ও তার রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ কর এবং যাদেরকে তোমার উপর কর্তৃত্ব দেয়া হয়েছে তাদের হুকুম পালন কর ।
(۲) (يا ايها الذين امنوا كونوا قوامين بالقسط ولايجر منكم شنان قوم على ان لا تعدلوا اعدلو هو اقرب للتقوى سورة نساء
হে ঈমানদারগণ! তোমরা তৈরী থাক আল্লাহর খাতিরে সত্য সাক্ষ্য দেয়ার জন্য এবং মানুষের শত্রুতা যেন তোমাদেরকে অন্যায় অবিচারে বাধ্য না করে। হক বিচার কর, কারণ তা পরহেজগারীর অতি নিকটবর্তী ।
(۳) واذا حكمتم بين الناس ان تحكموا بالعدل سورة نساء আর যদি কখনও তোমরা বিচারপতির আসনে অধিষ্ঠিত হও এবং মানুষের মধ্যে বিচার কর, তখন ইনসাফের সাথে বিচার করা তোমাদের জন্য অপরিহার্য্য । (۴) فبما رحمة من الله لنت لهم ولو كنت فظا غليظ القلب لانفضوا من حولك
فاعفوا عنهم واستغفر لهم وشاورهم فى الامر فاذا عزمت فتوكل على الله ان الله
يحب المتوكلين ه ال عمران হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহর দয়ায় আপনি তাদের প্রতি কোমল হয়েছেন। কেননা, যদি আপনি কর্কশভাষী ও কঠিন হৃদয় হতেন, তবে তারা আপনার নিকট থেকে দূরে সরে যেত। অতএব, আপনি তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং তাদের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। কাজকর্মে তাদের সাথে পরামর্শ করুন। আর যখন কোন কাজের সংকল্প করবেন তখন
সবকিছু আল্লাহর উপর নির্ভর করবেন। আল্লাহ্ অবশ্যই নির্ভরকারীকে অধিক
ভালবাসেন।
হাদীস শরীফ
(1) الاكلكم راع وكلكم مسئول على رعيته فالامام الذي على الناس راع وهو مسئول عن رعيته والرجل راع على اهل بيته ومسئول عن رعيته المرأة راعية على بیت زوجها وولده وهي مسئولة عنهم وعبد الرجل راع على مال سيده وهي مسئول عنه الا فكلكم راع وكلكم مسئول عن رعيته. الحديث
জেনে রাখ, তোমরা প্রত্যেকেই কর্তা ও রক্ষক এবং তোমরা প্রত্যেকেই স্বীয় অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। কাজেই রাষ্ট্রনায়ক জার কর্তৃক সমগ্র মানব সমাজের উপর তিনি তার অধীনস্থ প্রজাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। ব্যক্তি তার পরিবার পরিজনের উপর কর্তা এবং সে তার পরিবারস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। প্রত্যেক নারী তার স্বামীর ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিদের উপর কর্তা এবং তাকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। চাকর তার মালিকের ধন-সম্পদের উপর কর্তা। সেও তৎসম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। অতএব, তোমরা প্রত্যেকেই অধিনায়ক এবং রক্ষক এবং প্রত্যেকেই স্ব-স্ব অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
(۲) مامن وال يلى رعية المسلمين فيموت وهو غاش لهم الا حرم الله عليه الجنة. যদি কোন শাসক যিনি মুসলমানদের উপর শাসক নিযুক্ত থাকেন এবং এমতাবস্থায় মারা যান যে, তিনি তাদের উপর অবিচার করেছেন, তাহলে আল্লাহ্ পাক তার উপর চিরতরে বেহেস্ত হারাম করে দিবেন।
(۳) بايعنا رسول الله الا الله على السمع والطاعة في العسر واليسر والمنشط والمكره وعلى اثره علينا وان لا تنازع الأمر اهله وعلى ان نقول بالحق اينما كنا
لا نخاف لومة لائم
আমরা রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দস্ত মুবারকে
‘বাইয়াত’ বা আত্মসমর্পনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি যে, আমরা সুখ-দুঃখ সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টি সর্বাবস্থায় তার যাবতীয় আদেশ নিষেধ শ্রবণ করে তদানুযায়ী আমল করব এবং সর্বাবস্থাতেই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমাদের উপর প্রাধান্য দিব। আমরা কোন বিষয়ে কোনরূপ বিবাদ বিসম্বাদ করব না এবং আমরা যেখানেই যে অবস্থাতেই থাকি না কেন সত্য বলব। তজ্জন্য আমরা কারো তিরস্কার ইত্যাদির বিন্দুমাত্রও পরওয়া করব না।
(۴) علماء امتی کانبیاء بنی اسرائیل আমার উম্মতের মধ্যে আলেমগণ বনী ইসরাঈলের নবীদের মত।
(۵) ان بنی اسرائیل كانت تسوسهم الانبياء.
নিশ্চয় বনী ইসরাঈলদের শাসনভার তাদের নবীগণের উপর অর্পিত ছিল ।
বিখ্যাত ‘নেহায়াহ্” গ্রন্থ প্রণেতা । শব্দটির ব্যাখ্যায় বলেছেন, اى يتولى امورهم كالامير والولاة بالرعية والسياسة القيام على الشي بما يصلحه. অর্থাৎ নবীগণ উম্মতদের কাজকর্ম ইত্যাদির মুতাওয়াল্লী ছিলেন। তারা তাদের উপর শাসন পরিচালনা করতেন। যেমন- আমীর এবং শাসকগণ স্বীয় শাসিতদের উপর হুকুম পরিচালনা করেন। “ছিয়াছাত’ শব্দের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে
বস্তুকে তার উপযোগীরূপে কায়েম করা ।
ইমাম রাগেব ইস্পাহানী বলেন-
ألا انكم لا تصلحون للسيادة قبل معرفة الفقه والسياسة العامة. অর্থাৎ তোমরা ফিক্কাহ শাস্ত্রে এবং সমাজ বিজ্ঞানে পারদর্শিতা অর্জন করার আগে কিছুতেই নেতৃত্বদানের যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে না। আল্লামা ইবনুল কাইয়্যুম ‘ইলামুল মুকিয়ীন’ নামক কিতাবে লিখেছেন, শরীয়তের পরিপন্থী রাজনীতিকে প্রকৃত ছিয়াছাত বা রাজনীতি বলা চলে না, বরং শরীয়ত অনুযায়ী রাজনীতিই প্রকৃত রাজনীতি। যদ্বারা মানুষ ভাল এবং মঙ্গলের প্রতি নিকটবর্তী হবে এবং খারাপ ও অমঙ্গল থেকে অনেক দূরে থাকবে।
لاسياسة الا ما وافق الشرع بحيث يكون الناس معه اقرب الى الصلاة وابعد الفساد. আল্লামা আবুল হাসান যাওয়ার্দি যার মর্তবা উলামা সমাজে অনেক বুলন্দ, তিনি তার রাজনৈতিক ভাষ্য ‘আল আহকামুস ছিয়াছাত’ কিতাবে লিখেছেন ।
الامامة موضوعة فى حراسة الدين وسياسة الدنيا. অর্থাৎ ইমামত বা রাষ্ট্রনায়কত্বের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে ধর্ম রক্ষামূলক ব্যবস্থা করা এবং রাষ্ট্রীয় কার্যাদি পরিচালনা করা। আল্লামা ইবনে তাইমিয়া স্বীয় কিতাব
‘আচ্ছিয়াছাতুস শরঈয়্যাহ্’ নামক কিতাবে আয়াত ভাত l je এর তা এবং তার সমার্থবোধক আয়াত সমূহ দ্বারা প্রমাণ করতে গিয়ে বলেছেন যে, জাতীয় নেতৃত্বে এবং প্রতিনিধিত্বের জন্য দুইটি বিশেষ গুণ থাকা অত্যাবশ্যক। ১. শক্তি সামর্থবান হওয়া ২. আমানতদার হওয়া। আমিন বা আমানতদার কে? তার পরিচয় প্রিয় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস দ্বারা পাওয়া যায় । হুযূরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, stols Labeli ৬। অর্থাৎ আমার উম্মতের মধ্যে আলেমরাই হচ্ছে আমানতদার । অপর হাদীসে আছে, al sali stol shalali আলেমগণ আল্লাহর বান্দাদের উপর নিযুক্ত আল্লাহর আমিন বা আমানতদার। আল্লামা মুকরিজী ‘খুতাত’ নামক কিতাবে ছিয়াছাত বা রাজনীতির শাব্দিক ব্যাখ্যা করার পর লিখেন
ثم رسمت بانها القانون الموضوع لرعاية الأداب والمصالح وانتظام المال. অতঃপর আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছলাম যে, ছিয়াছাত ঐ সমস্ত কানুনকে বলা হয় যা মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতি মঙ্গলজনক কাজ এবং ধন-সম্পদের সংরক্ষণের ব্যবস্থা হিসেবে প্রণয়ন করা হয়। ফুকাহায়ে ইসলাম আরও একটু বিস্তারিতভাবে ছিয়াছাতের সংজ্ঞা দিয়েছেন-
فالسياسة استصلاح الخلق بارشادهما الى الطريق المنجي في الدنيا والآخرة. অর্থাৎ ‘ছিয়াছাত’ বা রাজনীতি হচ্ছে মানব সমাজকে ইহ ও পরকালের মুক্তি পথের প্রতি পথ প্রদর্শন করত: তাদেরকে বিশুদ্ধ ও কুসংস্কার মুক্ত করা। অতঃপর ফুকাহায়ে উম্মত ছিয়াছাতকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন। ১. ছিয়াছাতে আদেলা বা ন্যায় ভিত্তিক ও সুষ্ঠু রাজনীতি এবং ছিয়াছাতে জালেমা বা উচ্ছৃঙ্খল ও উলঙ্গ রাজনীতি। ছিয়াছাতে আদেলা নিঃসন্দেহে শরীয়তসম্মত বরং প্রকৃত শরীয়ত । আর ছিয়াছাতে জালেমা বা উলঙ্গ রাজনীতি শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম এবং অবৈধ । বলা বাহুল্য বর্তমান যুগে এই উলঙ্গ রাজনীতিরই দাপট বেশী। সেজন্য আমাদের সুফী সাধকগণ মূল রাজনীতিকেই হারাম বলতে আরম্ভ করেছেন। খ্যাতনামা ইসলামী রাজনীতিবিদ আল্লামা ইবনে খলদুন বলেন-
انها القانون الموضوع لرعايته الآداب وانتظام المال. রাজনীতি ঐ কানুনকে বলা হয় যা মানুষের সভ্যতা, সংস্কৃতি ও ধন-সম্পদ রক্ষার ব্যবস্থা করে।
ইসলামী দার্শনিক, খ্যাতনামা যুগসংস্কারক শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ্ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ. স্বীয় বিখ্যাত গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা’ নামক কিতাবে নগর রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কে লিখেছেন-
وهي الحكمة الباحثة عن كيفية حفظ الربط الواقع بين اهل المدينة واغنى بالمدينة جماعة مقاربة تجرى بينهم المعاملات ويكون اهل منازل شتى والاصل في ذلك ان المدينة شخص واحد من جهة ذلك الربط مركب من اجزاء وهية اجتماعية وكل مركب يمكن ان يلحقه خلل فى ماديته وصورته ويلحقه مرض اعنى حالته غیره البق به باعتبار لوعه و صحنهای حالة تحسنه وتجمله
অর্থাৎ ছিয়াছাত ঐ হিকমত বা বিজ্ঞানকে বলে যা নাগরিকদের পারস্পরিক প্রীতি বন্ধন সম্পর্ককে উন্নত করে। নগর বলতে ঐ জনসমাজকে বলা হয় যাদের মধ্যে পরস্পর বিভিন্ন মুয়ামেলা অনুষ্ঠিত হয়। যদিও তারা ভিন্ন ভিন্ন ঘরবাড়ি তে বসবাস করে, তথাপি তারা পারস্পরিক মুয়ামেলাতের ভিত্তিতে যেন একই প্রাণের অঙ্গসমূহ, আর তারই সমষ্টি তাদের সমাজ। প্রত্যেক সংযুক্ত বস্তুরই বাহ্যিক আকার এবং আভ্যন্তরীণ মূল ধাতুতে কোনরূপ ত্রুটি-বিচ্যুতি ঢুকার সম্ভাবনা থাকে, তদ্রূপ বহু সংখ্যক পরিবারের সম্মেলনে গড়া একটি সমাজ, তাতেও কুসংস্কার ঢুকতে পারে। আর সুষ্ঠু রাজনীতিই হচ্ছে সমাজকে এসব কুসংস্কার থেকে মুক্ত রাখার একমাত্র উপায় ।
هي الرياسة العامة في التصدى لاقامة الدين لاحياء العلوم الدينية واقامة اركان الاسلام والقيام بالجهاد وما يتعلق به فى ترتيب الجيوش والعرض للمقابلة واعطائهم فى الفئ والقيام بالقضاء واقامة الحدود ودفع المظالم والامر بالمعروف والنهي عن المنكر نيابة عن النبي الله.
শাহ্ সাহেব ‘ইজালাতুল খফা’ নামক কিতাবে লিখেন- রাজনীতি একটি রিয়াছাতে আম্মা বা সামাজিক প্রতিষ্ঠান। যা নবীর প্রতিনিধিত্বমূলকভাবে দ্বীন রক্ষা করবে, ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা করবে, ইসলামের আরকানগুলিকে বাস্তবায়িত করবে, সৈন্যদের গঠন করবে, যুদ্ধে লিপ্ত হবে, গনীমতের মাল জনসাধারণে বণ্টন করবে, বিচার প্রতিষ্ঠা করবে, শরীয়ত নির্ধারিত সাজা ইত্যাদি প্রয়োগ করবে, জুলুম অত্যাচারের অবসান ঘটাবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে, খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে।
রাজনীতির উপরোক্ত সংজ্ঞাসমূহ থেকে একথা অবশ্যই প্রমাণিত হয়েছে যে, ইসলামী রাজনীতি কেবল ইসলামের অঙ্গই নয় বরং ইসলামের সারমর্মও বটে। কাজেই নিছক উলঙ্গ রাজনীতির সাথে কিয়াছ করে ইসলামে রাজনীতি নেই মনে করাটা জঘন্য অন্যায়।
সরকারের প্রকারভেদ
সরকার মূলত: দুই প্রকার যদিও প্রত্যেক প্রকারেরও আবার বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। প্রথমত: ব্যক্তি কেন্দ্রিক সরকার, এর সাথে ইসলামী হুকুমতের কোন সম্পর্ক নেই এবং তা শরীয়তের দৃষ্টিতে অবৈধ। কারণ ইসলাম এক নায়কত্ব স্বীকার করে না। দ্বিতীয়ত: গণতান্ত্রিক সরকার- কোন কোন মনীষী এটাকে ইসলামী হুকুমতের সাথে তুলনা করতে চেয়েছেন। আবার কেউ কেউ তার বিরোধিতাও করেছেন । প্রকৃত প্রস্তাবে ইসলামী হুকুমত গণতান্ত্রিক হওয়ার ও সাথে সাথে তার মধ্যে আরও কতগুলি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহে পাওয়া যায় না। এই ইসলামী হুকুমতকে কুরআনের ভাষায় হুকুমতে রব্বানী বলা হয়েছে। আয়াত-
واذ قال ربك للملائكة إني جاعل في الأرض خليفة এর উপর একটু গভীর দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে বুঝা যায় যে, আধুনিক গণতান্ত্রিক সরকার ও ইসলামী হুকুমতে প্রধানতম পার্থক্য দুইটি। ক. গণতান্ত্রিক সরকারের সমস্ত ক্ষমতা, আইন প্রণয়ন, তা বাতিল করন ইত্যাদির ক্ষমতা জনসাধারণের হাতে। কিন্তু ইসলামী হুকুমতে আইন প্রণেতা একমাত্র আল্লাহ্, মানুষ তার প্রতিনিধি মাত্র। কুরআনে এ সম্পর্কে বহু আয়াত রয়েছে। নিম্নে কয়েকটি আয়াত দেয়া গেল । (۱) ان الحكم الا لله ) (۲) فالحكم لله العلى الكبير ) (۳) الا له الحكم
(۴) وله الحكم واليه ترجعون) (۵) افحكم الجاهلية يبغون (1) ومن احسن من الله حكما لقوم يوقنون (ع) واذا ادعوا الى الله ورسوله ليحكم بينهم اذا فريق منهم معرضون (۸) ان يكن لهم الحق ياتو اليه مذ عنين في قلوبهم مرض ام ارتابوا ام يخافون ان
يخيف الله عليهم ورسوله
পুস্তকের কলেবর বৃদ্ধি হওয়ার আশঙ্কায় এই সমস্ত আয়াতের অর্থ এবং ব্যাখ্যা এখানে দেয়া হল না। কেবল আয়াতগুলির উদ্ধৃতি দিয়েই ক্ষান্ত করা হলো। খ. হুকুমতে ইসলামিয়ার ভিত্তি ন্যায়নীতি ও খোদাভীতির উপর। ভোটদান ও ভোট গ্রহণ উভয় ক্ষেত্রেই খোদাভীতির অনুসরণ অপরিহার্য্য। কিন্তু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কেবল গণতন্ত্রই সরকারী ক্ষমতা লাভ ও ক্ষমতা হস্তান্তরের মূল উৎস। তথাপি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সহিত ইসলামী হুকুমতের কিছুটা সম্পর্ক রয়েছে। এক নায়কত্বের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই।

শেয়ার করুন

2 thoughts on "ইসলাম ও রাজনীতি: রাজনীতির সংজ্ঞা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বিষয়বস্তু"

  1. Lorraine2773 says:

    The Beatles – легендарная британская рок-группа, сформированная в 1960 году в Ливерпуле. Их музыка стала символом эпохи и оказала огромное влияние на мировую культуру. Среди их лучших песен: “Hey Jude”, “Let It Be”, “Yesterday”, “Come Together”, “Here Comes the Sun”, “A Day in the Life”, “Something”, “Eleanor Rigby” и многие другие. Их творчество отличается мелодичностью, глубиной текстов и экспериментами в звуке, что сделало их одной из самых влиятельных групп в истории музыки. Музыка 2024 года слушать онлайн и скачать бесплатно mp3.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরির আরো
© All rights reserved © 2019 www.izharehaq.com
Theme Customized BY Md Maruf Zakir